ফেলে আসা ছোটবেলায় ডুব দিচ্ছেন ঋতাভরী। নিজস্ব চিত্র।
দোল মানেই আমার কাছে এক ঝাঁক ছোটবেলা ভিড় করে আসা। কত রঙিন স্মৃতি। এখনও বেশ মনে পড়ে দোলের আগের দিন পলাশ ফুল তুলে রাখতাম আমরা বন্ধুরা। দোলের দিন সন্ধেবেলায় অনুষ্ঠান হতো। মাথায় পলাশ লাগিয়ে সবাই মিলে যেতাম সেই অনুষ্ঠানে।
শুরু হতো রবীন্দ্রসঙ্গীত। ‘ফাগুন লেগেছে বনে বনে’ থেকে শুরু হয়ে ‘আজ খেলা ভাঙার খেলা’ গেয়ে আবির মেখে শেষ হতো আমাদের দোল উৎসব। এমনও হয়েছে, তিন বার শ্যাম্পু করার পরও রং মেখে আবার স্নান করতে গিয়েছি। মা চুলে তেল, গায়ে ক্রিম মাখিয়ে রং তোলার চেষ্টা করত। আমাদের ‘বানর ব্রিগেড’-এর গোলাপি রং তোলা কি এতই সোজা!
এমন করেই কবে যেন টুক করে বড় হয়ে গেলাম। দোল খেলার সঙ্গী কমতে লাগল ক্রমশ। কলেজ জীবনের দোলে ফাগুন লেগেছিল জীবনে। সে এক অন্য বসন্ত। প্রেমের রঙের আবির মাখছি তখন গায়ে। গালে প্রেমের আবিরের ছোঁয়া, ফাগের হাওয়ায় তার সেই মন ভোলানো গান— সে এক অন্য রকম অনুভূতি। সে প্রেমও এখন নেই, সেই গিটারের গানও এখন নেই।
আরও পড়ুন-তারকা দিদি, অজি ক্রিকেটারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, তবে বলিউডে কল্কে পাননি এই তন্বী
কেক, ফুল, আর চকলেটে ভরা ওদের সঙ্গে কাটানো এই একটা দিনেই টাইমমেশিনে চেপে আমি পৌঁছে যাই কোন ছোটবেলায়...
এখনের দোলটা এক্কেবারে আলাদা। আমার ‘আইডিয়াল স্কুল ফর দ্য ডেফ’-এর বাচ্চাদের সঙ্গে রং খেলি আমি। এ বারেও খেলেছি। ওরা শুনতে পায় না। তাতে কী? অনুভব তো করতে পারে। আনন্দে মেতেও উঠতে পারে। সেই নিঃস্বার্থ ভালবাসা আর আদরের রঙের নাই বা থাকুক কোনও মুখের ভাষা। কেক, ফুল, আর চকলেটে ভরা ওদের সঙ্গে কাটানো এই একটা দিনেই টাইমমেশিনে চেপে আমি পৌঁছে যাই কোন ছোটবেলায়। চোখের সামনে পরিষ্কার দেখতে পাই-- গালে রং মেখে, মাথায় পলাশ লাগিয়ে বছর তেরোর এক মেয়ে হাসতে হাসতে বন্ধুদের হাত ধরে ছুটে আসছে... যার নাম ঋতাভরী চক্রবর্তী।