সার্সি ও জেমি ল্যানিস্টার।
উইন্টার ইজ হিয়ার! এক বছরেরও বেশি অপেক্ষার অবসান। ১৬ জুলাই শুরু হচ্ছে ‘গেম অব থ্রোনস’-এর সাত নম্বর সিজন। জর্জ এবং আর মার্টিনের ‘আ সং অফ আইস অ্যান্ড ফায়ার’ সিরিজের প্লট ছাড়িয়ে এগিয়ে চলবে এ বারের গল্প। ইউটিউবে ট্রেলার প্রকাশিত হওয়ার পরেই ভক্তদের উত্তেজনার পারদ আকাশ ছুঁয়েছে। ইতিমধ্যেই ট্রেলার দু’টি দেখে ফেলেছেন পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ। এ বারের সিজনে কী কী আশা করতে পারেন ভক্তেরা?
যুদ্ধ
আয়রন থ্রোন দখলের লড়াই সম্ভবত চূড়ান্ত রূপ পেতে চলেছে। অনেক অপেক্ষা, অনেক প্রস্তুতির পরে শেষমেশ ওয়েস্টেরোসে পা রাখতে চলেছে ড্যানেরিস টারগারিয়েন। সঙ্গে নিজের সেনা ছাড়াও রয়েছে ডর্ন, হাইগার্ডেন এবং গ্রেজয়দের বাহিনী। এই মিলিত বাহিনীর সঙ্গে জলে-স্থলে লড়াই করতে দেখা যাবে ল্যানিস্টারদের। যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবশ্যই থাকছে ড্যানেরিসের তিন ড্রাগন। যুদ্ধে তৃতীয় ও চতুর্থ শক্তি হিসেবে থাকছে জন স্নো ও ইউরন গ্রেজয়। অন্য দিকে, ওয়েস্টেরোসে মানুষের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে দলবল-সহ হাজির নাইট কিংগ। সব যুদ্ধকে অবশ্য ছাপিয়ে যেতে পারে হোয়াইট ওয়াকার ও ওয়াইট বাহিনীর সঙ্গে জন স্নো-র মরণপণ লড়াই। এই লড়াইয়ে কাদের পাশে পাবে জন?
স্টার্ক ভাই-বোনেদের পুনর্মিলন
আগের সিজনে জন ও সানসার দেখা হওয়ার পরে কি এ বার আরিয়া এবং ব্র্যানের উইন্টারফেলে ফিরে আসার পালা? ট্রেলার দেখে তেমনটাই মনে করছেন ভক্তেরা। চার ভাই-বোন একজোট হলে যে স্টার্কদের শক্তি আরও বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে অশান্তির বীজ বোনার জন্য উইন্টারফেলে হাজির পিটার বেলিশও।
কী হবে ল্যানিস্টার ভাই-বোনদের?
সার্সি রানি হওয়ার পর কোন পথে এগোবে জেমি ল্যানিস্টারের সঙ্গে তার সম্পর্ক? বাবাকে মেরে দেশ ছেড়েছে টিরিয়ন। ড্যানেরিসের সঙ্গে হাত মেলানোর পরে এই প্রথম তার দেখা হতে পারে ভাইবোনের সঙ্গে। তা-ও যুদ্ধের ময়দানে। মস্তিষ্কের খেলায় সমান পারদর্শী সার্সি এবং টিরিয়ন।কে কাকে টেক্কা দেবে?
আরও পড়ুন:সত্য ঘটনা অবলম্বনে
বরফ ও আগুন কি একসঙ্গে?
দর্শক জানেন, জন আসলে রেগার টারগারিয়েন ও লিয়্যানা স্টার্কের সন্তান। অর্থাৎ আগুন ও বরফের যুগলবন্দি। জন কি জানতে পারবে তার আসল পরিচয়? জানার পর কি ড্যানেরিসের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? সে ক্ষেত্রে এডার্ড স্টার্কের উত্তরাধিকারীর পরিচয় হারাবে জন। ভক্তদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে এ সবই। দেখা যাক, জবাব মেলে কি না।খলনায়ক কে?
জফ্রি ল্যানিস্টার হোক বা র্যামসে বোল্টন, হাড় হিম করা খলনায়কের চরিত্রের জন্য বিখ্যাত ‘গেম অব থ্রোনস’। র্যামসের মৃত্যুর পরে এই ভূমিকায় দেখা যাবে কাকে? দাদাকে মেরে আয়রন আইল্যান্ডের রাজা হয়েছে ইউরন গ্রেজয়। তার থেকে আরও নৃশংস আচরণ আশা করছেন দর্শকরা। সার্সি এবং পিটার বেলিশ ইতিমধ্যেই অনেক নিষ্ঠুর কাজের জন্য কুখ্যাত। তাদেরও দেখা যেতে পারে এই ভূমিকায়।
ত্রাতা কে?
হোয়াইট ওয়াকারদের থেকে মানুষদের বাঁচাবে কে? তাদের সঙ্গে যুদ্ধে একাধিক বার জয়ী হয়েছে জন। স্বাভাবিক ভাবেই তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখার আশায় রয়েছেন ফ্যানেরা। অজানা তথ্যের ভাণ্ডার এবং সময়-সফরের ক্ষমতা নিয়ে ব্র্যান স্টার্কও বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আবার অনেকে মনে করছেন, ব্র্যানের পিছু পিছু উত্তরের বরফের দেওয়াল টপকে ফেলতে পারবে হোয়াইট ওয়াকারেরা। তাদের সঙ্গে যুদ্ধে আগুনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই যোগ দিতে দেখা যেতে পারে ড্যানেরিসকেও। আবার এমনও হতে পারে যে অতিপ্রাকৃত শক্তির সঙ্গে একজোট হয়ে লড়বে সবাই।
গুরুত্বপূর্ণ কারা?
প্রধান চরিত্রগুলি ছাড়াও হোয়াইট ওয়াকারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেখা যাবে বেঞ্জেন স্টার্ক, বেরিক ডোন্ডারিয়ন, হাউন্ড এবং টরমান্ডকে। গত সিজনে প্রথম আবির্ভাবেই লড়াকু মনোভাবে নজর কেড়েছিল বেয়ার আইল্যান্ডের ছোট্ট লিয়্যানা মরমন্ট। এ বারও দেখা যাবে তাকে। ফিরে আসছে গ্রে ওয়র্ম, মিসানদেই, মেলিসান্দ্রে, ব্রিয়েনের মতো জনপ্রিয় চরিত্রগুলিও। সিটাডেলে পড়াশোনা করতে গিয়েছে স্যামওয়েল চরিত্রটি। প্রাচীন গ্রন্থাগারের কোনও বই থেকে সে কি জানতে পারবে হোয়াইট ওয়াকারদের সঙ্গে লড়াই জেতার জন্য জরুরি কোনও গোপন তথ্য?
‘গেম অব থ্রোনস’-এর ভক্ত মাত্রেই অবশ্য জানেন, কখন গল্পের মোড় ঘুরে যাবে, তা আন্দাজ করা যায় না কোনও ভাবেই। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রদের মেরে ফেলতেও জুড়ি নেই এই সিরিজের। এ ভাবেই ছ’বছর ধরে দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছে সিরিজটি। এ বার দশটির বদলে সাতটি পর্ব। প্রযোজকেরা জানিয়েছেন, গল্প এগোবে দ্রুত। টানটান গল্প, স্পেশ্যাল এফেক্ট আর ঝকঝকে সিনেম্যাটোগ্রাফির মিশেলে এ বারও দর্শকদের মন জয় করতে তৈরি এই ফ্যান্টাসি সিরিজ।