জনিফার লোপেজ, সিলভেস্টার স্ট্যালোন থেকে রবার্ট ডি নিরো। হলিউডের নিদর্শন ভূরি ভূরি। বলিউডেও আশা ভোঁশলে, অর্জুন রামপাল, ডিনো মোরিয়া, থেকে মিঠুন চক্রবর্তী— সেলিব্রিটিদের রেস্তোরাঁর প্রচুর গল্প।
এ বার টলিউডও সেদিকে পা বাড়াল। চার মাস আগে দেব তাঁর নিজের রেস্তোরাঁ খুলেছেন দক্ষিণ কলকাতায়। নাম ‘টলি টেলস’।
এ বার দেবের পাশাপাশি অভিনেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীও খুলতে চলেছেন তাঁর নিজের রেস্তোরাঁ।
একটা নয়, দু’দুটো রেস্তোরাঁ খুলছেন তনুশ্রী। একটি আলিপুরে। যেটার নাম ‘আমেরিকান কেভ’। অন্যটি হাতিবাগানে। নাম ‘বারবিকিউ ওয়ার্ল্ড’। দুটোর উদ্বোধনই হবে পয়লা বৈশাখ।
নতুন রেস্তোরাঁ মালিক হতে যাচ্ছেন তনুশ্রী
হঠাৎ কী হল যে তারকারা শুধু তাঁদের স্টার সুলভ দ্যুতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন? নাকি রেস্তোরাঁ খোলা বা ব্যবসামুখী হওয়াটা টলিউডের স্টারদের নতুন ‘কেরিয়ার অল্টারনেটিভ’ বা রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান?
‘‘কোনওটাই নয়,’’ হাসতে হাসতে বললেন তনুশ্রী। ‘‘আমার বহুদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল নিজের রেস্টুরেন্ট চেন খোলার। কোনও কেরিয়ার অল্টারনেটিভ বা রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান নয়। এটা নিজেকে প্রসারিত করার একটা ধাপ। আমি নিজেকে শুধু অভিনেত্রী হিসেবে আবদ্ধ রাখতে চাই না,’’ বলছেন তনুশ্রী।
তনুশ্রী বা দেব কিন্তু একা নন। ওঁদের আগে প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা, যিশু সেনগুপ্ত কী জিৎ—সবাই ব্যবসামুখী হয়েছেন তাঁদের নিজের নিজের প্রোডাকশন হাউজ বানিয়ে।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও নিজের প্রোডাকশন হাউজ খুলেছিলেন রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে। পরিচালকদের মধ্যে রাজ চক্রবর্তীও খুলেছিলেন প্রোডাকশন হাউজ।
মুম্বইতে শাহরুখ শুধু নিজের প্রোডাকশন হাউজ বানাননি, ভারতের অন্যতম সেরা স্পেশাল এফেক্টস স্টুডিয়ো বানিয়েছেন। দক্ষিণ ভারতেও নাগার্জুন থেকে কমল হাসন সবার আলাদা আলাদা ব্যবসা রয়েছে।
‘‘দেখুন স্টার হলে আপনার পরিচিতিটা বাড়ে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে যদি অন্য ব্যবসা করা যায় তা হলে সেটা তো খারাপ নয়। প্রত্যেকটা ব্যবসার মাধ্যমেই বহু মানুষের এমপ্লয়মেন্ট হয়। সেটাই বা কম কীসের?’’ বলেন দেব।
দেব তো চার মাস রেস্তোরাঁ মালিক
তাঁর নতুন রেস্তোরাঁ অবশ্য তাঁর বাবার প্রতি ভালবাসার জন্য, জানাচ্ছেন দেব। ‘‘বাবাকে আমি মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলাম চার বছর আগে। আমি এমন কিছু করতে চাইছিলাম যাতে বাবা ব্যস্ত থাকেন। সেই থেকেই এই মাল্টিকুইজিন রেস্তোরাঁ ‘টলিটেলস’। এখানে আপনি কষা মাংস পাবেন আবার পাস্তাও পাবেন,’’ বলছেন দেব। দেব যদি তাঁর রেস্তোরাঁর ইন্টেরিয়র থেকে টেবল ম্যাট সবটার ডিজাইন করে থাকেন তাহলে তনুশ্রী এই মুহূর্তে শেফদের সঙ্গে মিটিং করছেন মেনু ফাইনালাইজ করতে। ‘‘আমার একজন শেফ দুবাই থেকে আসছেন, একজন গোয়া থেকে। রোজ মিটিং চলছে তাঁদের সঙ্গে। এর পাশাপাশি কিন্তু আমার কাজ থেমে থাকছে না। পুরোদমে ‘মহানায়ক’ সিরিয়ালে সুপ্রিয়া দেবীর রোলে অভিনয় করার পাশাপাশি চলছে অন্য সব কাজও,’’ বলছেন তনুশ্রী।
এ সব দেখে কী ভাবছেন শ্রাবন্তী কী পাওলিরা? তাঁরাও কি কোনও ব্যবসার সঙ্গে নিজেদের জড়াতে চান অদূর ভবিষ্যতে? ‘‘অবশ্যই প্ল্যান আছে। হয়তো পরের বছরের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে,’’ বলছেন শ্রাবন্তী।
সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার, টালিগঞ্জের তারকারা শুধু স্টুডিয়োতেই আবদ্ধ থাকতে চাইছেন না কোনও মতেই। শুধু রাজনীতি নয়, তাঁদের বিচরণ এখন বিভিন্ন ব্যবসায়।
আর শুধু লাইটস...ক্যামেরা... অ্যাকশন নয়, নতুন টালিগঞ্জের নতুন অর্ডার হল লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশন, বিজনেস...