ছবির শুটিংয়ে আবীর চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
নন্দিতা রায়- শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবি মানেই নতুন কিছু। সেটা বিষয় হতে পারে। অভিনেতাদের উপস্থিতি হতে পারে। হতেই পারে ছবির শ্রেণিগত বিভাগ। পরিচালক জুটির এ বছরের পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’ তৃতীয় দলে। উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার এই ছবি বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় প্রথম ‘অ্যাকশন চেজ় ড্রামা’। তারই শুট করতে গিয়ে বিপদের মুখোমুখি আবীর চট্টোপাধ্যায়। শুটিংস্থলের সেই মুহূর্তের ছবি আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে প্রথম ভাগ করে নিলেন নন্দিতা-শিবু।
ছবির সেটে শিবপ্রসাদের সঙ্গে আবীর। —নিজস্ব চিত্র।
সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে। উইন্ডোজ় জানিয়েছে, মার্চ মাসের গরম। বোলপুরে তখন ৪২-৪৩ ডিগ্রি। তার মধ্যে শুট চলছে , সবাই হাসতে হাসতে পরিশ্রম করছেন সকাল থেকে সন্ধে। আট দিন এভাবেই শুট হয়ে গিয়েছে। নবম দিনের দিন বিপত্তি। শুট হবে আদুরিয়ার জঙ্গলে। ভোর পাঁচটায় কলটাইম। ওখানেই বেস ক্যাম্প। গাড়িতে করে টিম পৌঁছে গিয়েছে। শুটিং শুরু হবে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে। গাড়ি থেকে নেমেই সবাই ঠান্ডায় কাবু! হঠাৎ কী হল?
আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বাতাস ভেজা ভেজা। সবাই গরমের কথা মাথায় রেখে হাফ শার্ট, হাফ প্যান্টে গিয়েছেন। ফলে অস্বস্তি শুরু। সে দিনের অ্যাকশন দৃশ্যয় ৪০০ জন স্কুল পড়ুয়া অংশ নেবে। তাদের সঙ্গে উপস্থিত তাদের মা-বাবা। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে কমবেশি ৮০০ জন! টিম সবাইকে মাঠে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এমন সময় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি! তার পর? তড়িঘড়ি কাছাকাছি দাঁড়ানো বাস, বেস ক্যাম্প, স্থানীয় স্কুলে সবাই মাথা গোঁজার জায়গা খুঁজে নিলেন। বৃষ্টি চলল টানা ৪০ মিনিট। তার পর একটু কম। কিন্তু থামল কই? বৃষ্টির জলে জঙ্গলের রাস্তা পিছল। কী করে অ্যাকশন দৃশ্যর শুট হবে?
ঠিক হল এ ভাবেই হবে। কারণ, শুরুতে চিত্রনাট্য এ ভাবেই লেখা হয়েছিল। পরে ঝুঁকির কারণে দৃশ্য বদলে দেওয়া হয়। মনস্থির হতেই সবাই মিলে রাস্তায়। জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ঝড়ের বেগে বাইক চালালেন আবীর। এক বার নয়, একাধিক বার। পিছল রাস্তায় যখন তখন চাকা পিছলে যাওয়ার ঝুঁকি। আবীর বিশেষ পাত্তা দেননি। প্রত্যেকটা টেক এক বারে ওকে। সে দিন সবাই কুর্নিশ করেছিলেন তাঁকে। এই প্রসঙ্গে কী বলছেন শিবপ্রসাদ? তিনি নিজেও সেদিন সেখানে উপস্থিত। ছবির গল্প তাঁকে ঘিরেই। শুটের কথা বলতে বলতে পরিচালকের দাবি, ‘‘বাংলায় অ্যাকশন ফিল্ম হয়েছে। চেজ় ড্রামা সম্ভবত এই প্রথম। এখানে পরতে পরতে বাইক চেজ়, কার চেজ়। বাইক-গাড়ির চেজ়। আবীর ওই দিন বডি ডাবল ছাড়াই অংশ নিয়েছিলেন। যা ওঁর পক্ষে প্রচন্ড বিপজ্জনক। আবীর কিন্তু ভয় পাননি।’’