বলিউডের এই অভিনেত্রীর পদবীও ভট্ট। তবে শুধু বলিউডে নয়, ওয়েবসিরিজেও চমক দেখিয়েছেন তিনি। বলিউডের এই অভিনেত্রীর বাংলাটাও যথেষ্ট সাবলীল।
মুম্বইয়ে জন্ম এই অভিনেত্রীর। স্কুল থেকেই নৃত্য ও অ্যাথলেটিক্সে পারদর্শিতা ছিল তাঁর।
চিনতে পারছেন অভিনেত্রীকে? সম্প্রতি একটি ওয়েবসিরিজে তাঁর অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। তবে ছোট থেকে কিন্তু অভিনেত্রী হতে চাননি তিনি।
তিনি হৃষিতা ভট্ট। মুম্বইয়ের এই মেয়ে ছোটবেলায় চেয়েছিলেন বিমানচালক হতে। পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন হৃষিতা।
লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন হৃষিতা। তখনও ভাবতে পারেননি যে অভিনয়ের জগতে পা রাখতে চলেছেন।
হৃষিতা কত্থক নৃত্যে পারদর্শী। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোরিয়োগ্রাফার শামক দাভারের কাছে নাচ শিখেছেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতেও পারদর্শী তিনি।
নাচের সঙ্গে সঙ্গে অল্পস্বল্প মডেলিংয়ে ডাক পেতে থাকেন হৃষিতা। সেই সময় একটি সাবান কোম্পানির বিজ্ঞাপনে সুযোগ পান তিনি। সাবান সংস্থার বিজ্ঞাপনে তাঁর হাসি দর্শকদের নজর কেড়েছিল।
এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন তিনি, বলিউডে গুঞ্জন, বচ্চন পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক সাংবাদিক বন্ধুই নাকি ২০০২ সালে ‘শরারত’ ছবির জন্য নায়িকার নাম প্রস্তাব করেন।
‘শরারত’ ছবিতে ঋষিতার বিপরীতে ছিলেন অভিষেক বচ্চন। হৃষিতার উপস্থিতি, তাঁর ফিগারের জন্য আরও একটি বড় প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে।
শাহরুখ খান প্রস্তাব দিয়েছিলেন হৃষিতাকে। শাহরুখের বিপরীতে তিনি কাজ করেন ‘অশোকা দ্য গ্রেট’ ছবিতে।
যদিও ‘অশোকা..’ ছবিটিই প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি হৃষিতার। অর্থাৎ সেই হিসেবে প্রথম ছবিতে শাহরুখ খানের নায়িকা তিনি। দেবীর ভূমিকায় তাঁর কাজ সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিল।
এর পরই ‘দিল ভিল পেয়ার ভেয়ার’ ছবিতে জিমি শেরগিল, পরবর্তীতে ‘আউট অব কন্ট্রোল’ ছবিতে রীতেশ দেশমুখের বিপরীতে তিনি অভিনয় করেন। ইরফানের সঙ্গেও ‘হাসিল’ নামের একটি ছবিতেও কাজ করছেন হৃষিতা।
হৃষিতার জীবনে শুধুই যে সাফল্য এসেছে, তা নয়। ‘জিজ্ঞাসা’ নামের একটি ছবিতে কাজ করেন তিনি। সেটি নাকি মল্লিকা শেরাওয়াতের জীবনীচিত্র, এ জাতীয় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বেশ কিছু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। যদিও তিনি বলেছিলেন, পর্দায় কার কতটা চেহারা দেখা গিয়েছে, সেটাকে বোল্ড বলতে তিনি রাজি নন।
পরবর্তীতে বিবেক ওবেরয়, মাধবন, ইমরান হাসমির সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি। মনোজ তিওয়াড়ির সঙ্গে কাজ করেছেন ‘দেশদ্রোহী’ নামের একটি ছবিতে।
৫০টির কাছাকাছি ছবিতে অভিনয় করেছেন হৃষিতা। তবে শুধু হিন্দি নয় তেলুগু, মালয়ালম, মরাঠী ছবিতেও অভিনয় করেছেন। কিন্তু আচমকাই যেন বলিউডে ব্রাত্য হয়ে পড়লেন তিনি।
বলিউড ছাড়াও বাংলা ছবিতে কাজ করেছেন হৃষিতা। পরিচালক ছিলেন রাজু মুখোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি কৌশিক সেনের বিপরীতে ‘লালবাজার’ ওয়েবসিরিজে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।
ওয়েবসিরিজের হট অ্যাকট্রেস বলা হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু এই অভিনেত্রীর সঙ্গে বলিউডের এক অভিনেতার প্রেমের গুঞ্জনের কথা একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কে বলুন তো?
হৃষিতার সঙ্গেই নাকি প্রথম ডেট করতেন শাহিদ কপূর। তখনও বলিউডে সে রকম পরিচিতি নেই শাহিদের। একটি মিউজিক ভিডিয়োতে এক সঙ্গে কাজ করতেন তাঁরা।
‘আঁখো মে তেরা হি চেহরা’ মিউজিক ভিডিয়োতে কাজের সূত্রেই নাকি দু’জনের আলাপ। তার পর প্রেমে পড়েছিলেন নাকি পরস্পরের। যদিও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।
হৃষিতার কেরিয়ার বলিউডে সে অর্থে স্থায়ী হয়নি। পরে প্রযোজন শুরু করেন। ‘শকল পে মত যানা’ নামে একটি ফিল্ম প্রযোজনা করেন তিনি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের এক জন কূটনীতিকের সঙ্গে ২০১৭ সালে সাত পাকে আবদ্ধ হয়েছেন হৃষিতা। কিন্তু ছবির জগতকে ভুলে থাকা কি এতটা সহজ?
আবারও নতুন করে সিরিজে অভিনয়ের মাধ্যমে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন হৃষিতা, মনে করা হচ্ছে এমনটাই।