প্র: গৃহবন্দি থাকার দিন কেমন কাটছে?
উ: সত্যি বলতে, মন্দ লাগছে না। বরং এ সময়টাকে সেল্ফ ইন্ট্রোস্পেক্টের দিন বলা চলে!
প্র: ‘মেন্টালহুড’-এ আপনি মায়ের চরিত্রে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সন্তান বিপথে গেলে মাকে দোষারোপ করা হয়। এ দৃশ্য কি বদলাবে?
উ: খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সমাজের নানা স্তরেই কন্ডিশনিং রয়েছে। আর তার শিকড় অনেক গভীর পর্যন্ত ছড়িয়ে। পরিস্থিতি বদলাতে গেলে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন অ্যাকসেপ্টেন্স। বদলানোর মানসিকতা তৈরি হলেই বদল আসতে বেশি সময় লাগবে না।
প্র: সন্তান ও কেরিয়ার সামলানোর দ্বন্দ্বে পড়েন চাকুরিজীবী মায়েরা। আপনার চরিত্রও তেমন। ব্যক্তিগত জীবনে তেমন পরিস্থিতি এলে কী ভাবে ব্যালান্স করবেন?
উ: সন্তান বড় হলে তাদের নিজের জগৎ তৈরি হয়। মায়েরাও একাকিত্বে ভোগেন। তাই কোনও কিছুর জন্যই স্বাবলম্বী হওয়াকে দূরে সরানো ঠিক নয়। আমার তো মনে হয়, কারও পক্ষে সব কিছু একা সামলানো সম্ভব নয়, দরকারও নেই। চারপাশে এত সাহায্য রয়েছে, সে সবের হেল্প নেব। গোটা পরিবারকেই বুঝতে হবে যে, একাই সব করে ফেলব… এই মানসিকতা ঠিক নয়।
প্র: এত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন, অথচ আপনার কাজ এত কম কেন?
উ: হ্যাঁ, জানি। আমি যেটুকু কাজ করেছি, তাতেই সন্তুষ্ট। কারণ, আমার সমস্ত কাজই দর্শক ভালবেসেছেন। এখনও তাঁরা আমার সে সব কাজ মনে রেখেছেন। একজন শিল্পী হিসেবে এর চেয়ে বেশি আর কী চাইব? ফলে আত্মতুষ্টি তো রয়েছেই।
প্র: কিন্তু ‘চক দে ইন্ডিয়া’ বা ‘বি এ পাস’-এ আপনার অভিনয় প্রশংসিত হওয়ার পরে কখনও মনে হয়নি যে আরও কাজের সুযোগ আসতে পারত?
উ: সব কিছুরই সময় থাকে বলে আমি মনে করি। যদি মন দিয়ে, ভালবেসে কিছু করি, দেরিতে হোক বা তাড়াতাড়ি… ফল মিলবেই। আমি একটা জিনিসে খুব বিশ্বাস করি। যত বেশি প্রত্যাশা করব, হতাশাও আসবে তত বেশি। শিল্পীদের তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। নীনা গুপ্তকেই দেখুন না… এখন কত ধরনের কাজ করছেন। একটা জিনিস সকলকেই বুঝতে হবে যে, দেয়ার ইজ় নো রাইট টাইম অর রং টাইম। বরং এটা মনে হয় যে, তখন অনেক বেশি কাজ পেলে, এত দিনে বোধহয় ওভার-এক্সপোজ়ড হয়ে যেতাম। সে দিক থেকে তো ভালই হয়েছে।
প্র: পুরোপুরি বাণিজ্যিক, মশলাদার ছবির চেয়ে একটু অন্য ঘরানার কাজই করতে কি বেশি ভালবাসেন? অন্তত আপনার কেরিয়ার গ্রাফ তো তাই বলছে…
উ: প্রত্যেক শিল্পীর একটা করে কাট আউট থাকে। যে যেটায় বেশি স্বচ্ছন্দ। মারদাঙ্গা হোক বা ভিন্ন ঘরানা… সবেরই আসল লক্ষ্য দর্শককে বিনোদন দেওয়া এবং তাঁদের ইমোশনের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করা। আমি এক ভাবে করি, আর একজন হয়তো অন্য ভাবে। এটুকুই। এর বেশি পার্থক্য তো নেই।
প্র: নতুন কী কী কাজ করছেন?
উ: কয়েকটি ওয়েব সিরিজ় এবং একটি ছবিতে কাজ করছি এখন। কিন্তু ইদানীং পিআর এবং প্রোটোকল এমনই আঁটোসাঁটো যে, এ সব নিয়ে মুখ খোলা বারণ। তবে সময় তো বদলাচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার জন্য এটা সকলের কাছেই দারুণ সময়। আর আমি আশাবাদী যে, এই লকডাউনের সময়ে ইন্ডাস্ট্রির সকলেই বোধহয় ভাবছেন, আগামী দিনে কী ভাবে দর্শককে বিনোদন দেওয়া যায়, বাস্তবের মোড়কে কতটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সিনেমা-সিরিজ়কে।