বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায় ও মোনালিসা মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তর কলকাতা, পুরনো দিনের বাড়ি। এই বাড়িতেও এক আকাশ ছাদ। আন্তর্জাতিক স্তরে কাজ, মুম্বইয়ে বিজ্ঞাপনী ছবির বহুল চর্চা থাকলেও, কলকাতা এলে বিলাসবহুল হোটেল নয়, বরং এই ছাদওয়ালা ঘোরানো সিঁড়ির বাড়িতেই থাকতে অভ্যস্ত বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায় ও মোনালিসা মুখোপাধ্যায়। ‘তিনকাহন’, ‘দ্য ভায়োলিন প্লেয়ার’, ‘হুইস্পারস অফ ফায়ার অ্যান্ড ওয়াটার’ ইত্যাদি ছবি প্রযোজনার পরে একফালি মেঘ নিয়ে তাঁরা উপস্থিত কলকাতায়। সামনে আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রশ্ন: ‘মানিকবাবুর মেঘ’ ছবি প্রযোজনা করলেন কেন?
বৌদ্ধায়ন: সিনেমা আমার কাছে একটা ব্রহ্মাণ্ড। যেখানে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, কর্ণ জোহর, সৃজিত মুখোপাধ্যায় আছেন। সে রকম পরিসরে অবশ্যই একটা ‘মানিকবাবুর মেঘ’ থাকা প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন ধরনের ছবির সহাবস্থান না থাকলে ব্রহ্মাণ্ড বলব কী করে? ‘মানিকবাবুর মেঘ’ মার্জিনালাইজ়ড ছবি। ‘মানিকবাবুর মেঘ’-এর মতো ছবি অধিকাংশ পরিচালক ও প্রযোজক বানাতে চাইবেন না। এই ছবির চরিত্রের জন্য ইনস্টাগ্রামে অনুরাগীদের সংখ্যার নিরিখে অভিনেতা বাছাই করা হয়নি। এই ছবি বাজারমুখীও নয়। ইদানীং ছবি বানাতে গেলে যে যে মাপকাঠির প্রয়োজন, তার কোনওটিই মেলে না এই ছবির সঙ্গে। কিন্তু এই ধরনের ব্যতিক্রমী ছবি করে যাওয়াটাই আমাদের ইচ্ছে।
মোনালিসা: শুধু ছবি নয়, জীবনের সব ক্ষেত্রেই ৩৬০ ডিগ্রি দিতে চাই আমি। আমার তো মনে হয় এমন পেশা বেছে নেওয়া উচিত যেখানে মন দেওয়া যাবে। আমার সন্তানকেও তাই বলি। মন থাকলে টাকা এমনিই আসবে। মনকে ভাল রাখতে হবে।
প্রশ্ন: কিন্তু ‘মানিকবাবুর মেঘ’ দেখার পরে অনেকের মনখারাপ হয়ে যেতে পারে।
মোনালিসা: এই ছবি দেখে যদি কান্না পায়, কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে না করে, কিছু দিন মনে হয় আমি জঙ্গলে চলে যাই, তা হলেই আমার পয়সা উসুল। আমি চাই, ছবিটা দেখে মানুষ একটু ভাবুক।
‘মানিকবাবুর মেঘ’ ছবির একটি দৃশ্যে চন্দন সেন।
প্রশ্ন: স্বামী-স্ত্রীর যৌথ প্রযোজনা, মতবিরোধ হয়?
বৌদ্ধায়ন: সে তো আকছার হয়। আগে হিন্দু একান্নবর্তী পরিবার যে ভাবে চলত সে ভাবে আমরা ‘লিটল ল্যাম্ব ফিল্মস’ চালাতে শুরু করি। তখনকার দিনে মা যে ভাবে টিনের কৌটো বা চালের বস্তায় টাকা রাখতেন, বাবা ব্যাঙ্কে টাকা জমাতেন একটু একটু করে, টাকা জমিয়ে সেখান থেকেই একটা দার্জিলিং ভ্রমণ, বাড়িতে রঙিন টিভি, আমরা ঠিক সে ভাবেই বিজ্ঞাপনী ছবি করে উপার্জন করা টাকার একটা অংশ জমিয়ে ছবি প্রযোজনা শুরু করি। মোনার সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি হয়। আগে মোনাকে বলেছিলাম, আমরা বাড়িতে কাজের কথা বলব না। কিন্তু সেটা দেখলাম সম্ভব নয়। খাবার টেবিলে, ঘুমোতে যাওয়ার আগে, ঘুম থেকে উঠে সব সময় আমাদের কাজের কথা! এমনও হয়েছে যে খুব অশান্তি হয়েছে, কথা বন্ধ। কিন্তু কাজে গিয়ে আমরা কথা বলেছি। মোনা পেশা আর পরিবারের মধ্যে সমতা রাখতে পারে তাই আমাদের সংসার টিকে আছে এখনও। আমার তো শুধু কাজ আর কাজ!
মোনালিসা: বৌদ্ধায়ন চা, কফি, ধূমপান, মদ্যপান কিছুই করে না। তাই মাঝেমধ্যে ভাবি ‘ওয়ার্কঅ্যাহলিক’ স্বামী ভাল, না ‘অ্যালকোহলিক’ স্বামী! কিন্তু যখন শিল্প, নান্দনিকতার প্রসঙ্গ আসে, তখন আমার আর বৌদ্ধায়নের মত এক। বৌদ্ধায়ন কিন্তু কোথাও কোথাও ঘরের শত্রু বিভীষণ! অনেক সময় ও টাকাপয়সার ক্ষেত্রে গন্ডগোলও করে। কিন্তু আমাকে রাজি করিয়ে নিলে তখন আবার আমরা একসঙ্গে।
প্রশ্ন: মুম্বইয়ে থেকে বাংলা ছবি প্রযোজনা, হিন্দি ছবিতে এই গল্প বলা যেত না?
মোনালিসা: শান্তিনিকেতনে প্রথম অভিনন্দন আমাকে এই গল্পটা শোনায়। আমি তখনই বলেছিলাম এই গল্প নিয়ে যদি কাজ করতে হয় তা হলে কলকাতাতেই করতে হবে। বাঙালিদের জীবনযাপন, নীতি, আদর্শ যা কিছু আছে তার সবটাই ‘মানিকবাবুর মেঘ’-এ আছে। অন্য রাজ্যের মানুষের মধ্যে আমি মানিকবাবুকে দেখতে পাইনি।
বৌদ্ধায়ন: অভিনন্দন, আমি, মোনা— আমরা তিন জন বর্তমানে মুম্বইয়ে থাকি। কিন্তু তাই বলে কি কলকাতা ভুলে যাব! আমি কলকাতাকে অসম্ভব ভালবাসি। আমি যদি বাঙালি না হয়ে জন্মাতাম, তা হলে হয়তো মানুষ হিসাবেই জন্মাতাম না। এই শহর, বাংলা ভাষা, বাংলা ভাষার ছবি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। প্রায়শই কলকাতায় বিজ্ঞাপনী ছবির শুটিং করি। ছোট ইন্ডাস্ট্রি হোক, টাকা না আসুক! তা-ও বাংলা ছবিই প্রযোজনা করব। সেই দায়বদ্ধতা রয়েছে আমাদের।
প্রশ্ন: অনেক মানুষ আপনাদের কাছে পৌঁছতে চাইবেন ছবি প্রযোজনার জন্য। প্রস্তুতি কেমন?
মোনালিসা: চিত্রনাট্য ও পরিচালক ভাল হলে আমরা প্রযোজনার কথা ভাবব।
বৌদ্ধায়ন: তবে একটা বিষয় ভেবেছি আমরা, যাঁরা নতুন পরিচালনায় আসছেন, তাঁদের নিয়ে ছবি বানাব আমরা। যাঁরা প্রতিষ্ঠিত পরিচালক, তাঁদের ছবি বানাব না। দেখুন, আমার প্রথম পরিচালনা ‘তিনকাহন’ প্রযোজনা করেছে মোনালিসা। অভিনন্দনের প্রথম ছবি ‘মানিকবাবুর মেঘ’ প্রযোজনা করছি আমরা। লুব্ধকের প্রথম কাজ ‘হুইস্পারস অফ ফায়ার অ্যান্ড ওয়াটার’ প্রযোজনা করেছি আমরা। বর্তমানে যে তথ্যচিত্রটি প্রযোজনা করছি, সেটিও এক পরিচালকের প্রথম কাজ। আমি জানি এই ভাবে ছবি দর্শকের কাছে পৌঁছে দিয়ে তা থেকে অর্থ উপার্জন খানিকটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ পরিচালককে কেউ চেনেন না। ‘তিনকাহন’-এর সময় বুঝেছিলাম প্রথম ছবি করাটা কী কঠিন কাজ! তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, যে নতুন পরিচালকদের চিত্রনাট্য ভাল লাগবে তাঁদের ছবি প্রযোজনা করব।
মোনালিসা: একটা কথা বলতে চাই, মনটাকে ভাল রাখতে হবে। কাজের পরিবেশ ভাল হতে হবে। এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা ক্যামেরার নেপথ্যে থাকেন, তাঁরা সেটে অসম্ভব গালাগালি করেন। যেটা একেবারেই কাম্য নয়। তাঁদের নাম প্রকাশ্যে বলতে চাই না আমি। নিজেদের কাজে পারদর্শী তাঁরা, কিন্তু ওই স্বভাবের জন্য আমরা তাঁদের সঙ্গে কাজ করি না। নারী-সহ যে কোনও মানুষ যেন সুস্থ কাজের পরিবেশ পান। র্যাগিং বা বুলি করা না হয় যেন। এটা আমরা আমাদের কাজের পদ্ধতিতে খেয়াল রাখি।
প্রশ্ন: বাংলায় ফেডারেশনের মাপকাঠি, নিয়মকানুন নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। ৫০ জনের ইউনিটে যে কাজ সেরে ফেলা যায়, ফেডারেশনের জন্য ১৫০ জনের ইউনিটে সেই কাজ করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে শুটিং করে কলকাতায় ছবি মুক্তি পাচ্ছে। আপনাদের এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে?
বৌদ্ধায়ন: এটা তো আমাদের মেয়ের বিয়ে দিচ্ছি না। ছোট ইউনিটে কাজটা করা যেত না? ব্যাঙ্ককে বিজ্ঞাপনের শুটিং করতে গিয়ে দেখেছি ১২ জনের ইউনিট শুট করে ফেলল। কলকাতা বা মুম্বইয়ে এই শুট হলে ২০০ জনের ইউনিট লাগত। প্রযোজকদের তো সবাইকে টাকা দিতে হয়। অনেক সময় শুটিং ফ্লোরে গিয়ে দেখি, ইউনিটের কিছু লোক কী কাজ করছে তা বুঝতেই পারি না।
মোনালিসা: ছবির জন্য সত্যিই যে অর্থ লাগবে, সেই টাকা দিতে রাজি আমি। কিন্তু যেখানে দরকার নেই, বাড়তি টাকা দিতে আমি নারাজ।
বৌদ্ধায়ন: আরও একটি বিষয়, বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে স্বতন্ত্র ছবির ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য করা হবে কেন? এটা হতে পারে না। বড় প্রযোজনা সংস্থায় গিল্ডের নিয়ম জারি করা যায়। কিন্তু স্বাধীন ছবির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম তো থাকতেই হবে। না হলে তরুণ স্বাধীন পরিচালক তৈরি হবে না।
প্রশ্ন: বাংলা ছবির দর্শকের রুচিতে বদল ঘটেছে? কী মনে হয়?
বৌদ্ধায়ন: আমি ঠিক জানি না। তবে আমার মনে হয় সব ধরনের ছবির দর্শক এখনও আছেন। দর্শকের একটি অংশ বাইরের দেশের ওটিটির কন্টেন্ট দেখেন। তাঁরা সেই ধরনের কন্টেন্ট বাংলা ছবিতে পাচ্ছেন না বলে বাংলা ছবি দেখছেন না। তাই বাংলার দর্শকের রুচি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা ঠিক নয়। ছবির প্রতি দর্শককে আকর্ষিত করার দায় কিন্তু ছবিনির্মাতাদের উপর। আমরা কী বানাচ্ছি তার প্রলোভনেই দর্শক হলমুখী হবেন।
শুটিং ফ্লোরে কাজের অবসরে বৌদ্ধায়ন ও মোনালিসা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: মহিলা প্রযোজক হিসাবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন?
মোনালিসা: শুরুর দিকে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। তবে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হয় মহিলা প্রযোজক হিসাবে আমি রাজত্ব করছি।
প্রশ্ন: কিন্তু মহিলা প্রযোজকের সংখ্যা এখনও বেশ কম…
মোনালিসা: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে অপর্ণা সেনকে দেখেছি আমরা, তবে পরিচালক হিসাবে। প্রযোজনার ক্ষেত্রে মহিলারা প্রযোজনা সংস্থার মুখ হয়ে যান। কিন্তু সেই প্রযোজনা সংস্থা চালনার নেপথ্যে একজন পুরুষই থাকেন। তবে আগের তুলনায় পরিস্থিতির অনেক বদল ঘটেছে। আগামী দিনে এই চিত্রে আরও পরিবর্তন আসবে।
বৌদ্ধায়ন: নন্দিতাদি, ইন্দ্রাণী, মোনালিসা ছাড়া আর কাউকে বাংলা ছবি প্রযোজনা করতে দেখি না। কিন্তু যদি একটু পিছিয়ে যাই, পূর্ণিমা দত্ত এক সময় প্রচুর ছবি করেছেন। কেন মহিলারা ছবি প্রযোজনায় আসতে চান না, আমার মনে হয় সেটা তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। পরিবেশের কারণে হতে পারে। এখনও তো আমাদের পুরুষশাসিত ইন্ডাস্ট্রি।
মোনালিসা: আমার মনে হয় মেধা বা আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়ে সমস্যা নেই। নিরাপত্তা আর মর্যাদা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। মনে পড়ে প্রথম যখন শুটিং করতে আসি কলকাতায়, প্রযোজনা সংস্থার আপ্তসহায়কের আমার নির্দেশ মেনে কাজ করতে আপত্তি ছিল। আমি এত অবাক হয়েছিলাম! আমি যে কলকাতায় বড় হয়েছি, সেখানে মহিলাদের জন্য বসার জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয় অথবা অন্ততপক্ষে সমানাধিকার থাকে। সেই কলকাতায় একজন মানুষের অসুবিধা হচ্ছে তাঁর নির্দেশক শুধুমাত্র মহিলা বলে! এটা খুব যন্ত্রণাদায়ক। মোদ্দা কথা, মহিলাদের উপরে উঠতে দেওয়া যাবে না! বলে রাখি, সে বছর, ২০০১ সালে প্রথম বৌদ্ধায়নের সঙ্গে আলাপ হয় আমার।
প্রশ্ন: আপনি প্রযোজক, বৌদ্ধায়ন পরিচালক। এ রকম আরও বাংলা ছবির পরিকল্পনা রয়েছে?
মোনালিসা: নিশ্চয়ই। তবে বাংলা ছাড়াও অন্যান্য আঞ্চলিক ছবির পরিকল্পনা রয়েছে। গল্প যে ভাষা দাবি করবে সেই ভাষাতেই ছবি বানাব।
প্রশ্ন: বাংলা ছবি দেখেন?
মোনালিসা: দেখি, তবে কম দেখা হয়।
প্রশ্ন: কেন?
মোনালিসা: আমি বড় পর্দায় ছবি দেখতে ভালবাসি। ফলে যখন কলকাতায় আসি, ছবি দেখি। এ ছাড়াও নন্দনে যাই। নাটক দেখতে ভালবাসি। বাঙালিরা নাটক দেখতে যান, এটা বড় ভাল লাগে আমার। তবে একটা বিষয় বলতে চাই, সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে দর্শক কমে গিয়েছে। সব দর্শকের বড় হলে গিয়ে এত টাকা দিয়ে ছবি দেখার সামর্থ্য নেই। এ দিকে সিঙ্গল স্ক্রিনে লাভের অঙ্ক আসছে না তাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: একটা ছবি বেশি দিন জায়গা পাচ্ছে না হলে…
মোনালিসা: সে আর কী বলব! ‘তিনকাহন’ ভালই চলছিল। কিন্তু ‘সিং ইজ় ব্লিং’ আসার পরে লাথি মেরে ছবি বার করে দিল হল থেকে!
প্রশ্ন: যৌথ ভাবে ছবি নিয়ে কী স্বপ্ন রয়েছে?
বৌদ্ধায়ন: ভূমিকা বদল করতে চাই আমি। মোনালিসা পরিচালক, আমি প্রযোজক। আরও একজন পরিচালক আত্মপ্রকাশ করবেন। আরও একটি আশা, আমাদের কন্যা ছবি পরিচালনা বা ছবি সংক্রান্ত অন্য কোনও কাজ করবে। আপাতত আমি আর ও যৌথ ভাবে একটা চিত্রনাট্য লেখার কাজ শুরু করেছি। মোনালিসা প্রযোজনা করবে বলেছে। আর যা মনে হচ্ছে, হয়তো আমরা দু’জন একসঙ্গে পরিচালনা করব। যে মেয়েটিকে কুড়ি বছর আগে জন্মাতে দেখেছি সে আজ আমার সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখছে। এটা একই সঙ্গে আনন্দদায়ক ও কঠিন বিষয়।
মোনালিসা: মাথার মধ্যে সর্ব ক্ষণ দুটো সমান্তরাল জগতের ভাবনা নাড়া দিচ্ছে। একটা জায়গা, যেখানে স্বাধীন ছবি প্রদর্শন করা যাবে। সরকারের সমর্থন থাকবে। নন্দনের মতো একটা জায়গা। আমি যদি এই ধরনের একটা জায়গা তৈরি করতে পারি খুব ভাল লাগবে। বেশি সময় নেই যদিও, ৫১-এর কোঠায় আমি। আর অন্য একটি জগতে, মনে হয় কয়েক বছর পরে সব ছেড়ে দিয়ে জঙ্গলে চলে যাব। আর কোনও দেনাপাওনা নেই। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে না।
প্রশ্ন: স্বামী-সন্তানের মায়া…
মোনালিসা: দু’জনকেই বড় করে দিয়েছি। একটা সময়ের পরে এটাই ঠিক আছে।