‘ডাল বাটি চুরমা’ মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনে আড্ডায় প্রযোজক বনি সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: প্রযোজক হওয়ার চাপ কি বুঝতে পারছেন?
বনি: এখন বুঝতে পারছি বিষয়টা প্রবল চাপের। কিছু জনের চাহিদা মেটানোর জন্য কত যে ভাবতে হয় প্রযোজকদের, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। শুটিংয়ের আগে আর শুটিং হওয়ার সময়টা এক রকম। কিন্তু তার পরের বিষয়টা আরও অন্য রকম। কারণ, বড় সংস্থাগুলো সব থিয়েটারের সময় নিয়ে বসে থাকে। এর মাঝে যখন আমাদের মতো ছোট সংস্থারা নিজেদের জায়গা করার চেষ্টা করে, তখন অসুবিধা তো একটু হবেই। নতুন বলে আমরা কারও সঙ্গে ঝামেলাতেও জড়াতে চাই না।
প্রশ্ন: নায়ক-নায়িকাদের খামখেয়ালিপনা সামলানোর ঝক্কিটা বুঝতে পারছেন তা হলে?
বনি: আমি তো নিজেই নায়ক। তাই কিছু যদি বলি, তা হলে যাঁদের উদ্দেশে বলছি, তাঁরা বুঝে যাবে। তবে কিছু কিছু চাহিদা আছে যা সত্যিই শিল্পীদের প্রযোজন হয়। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, সেই সব চাহিদা পূরণ করার।
ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: আগে বদ্ধমূল ধারণা ছিল, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পেতে গেলে উঠতি নায়িকা কিংবা অভিনেত্রীদের বিনিময়ে কিছু দিতে হবে, অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন। বর্তমানে বেশির ভাগ নায়ক প্রযোজক হয়ে ওঠায় সেই প্রবণতা কি কমল?
বনি: প্রবণতা তো নিশ্চয়ই অনেকটা কমেছে। এখন আর তেমন কিছু হয় না। বর্তমানে আসলে সবটাই সম্মতিমূলক। আর মাঝে যা ‘মিটু’ বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই ভয়ে আরও সব বন্ধ করে দিয়েছে। তবে হ্যাঁ, এটাও ঠিক, এখন তো নিজেদের প্রযোজিত ছবিতে আমরা অনেক সময় নিজেরাই নায়ক হই। তবে জিৎদা, দেবদা অন্য রকম ভাবে ভাবার চেষ্টা করছে। আমরাও পরবর্তী কালে নতুনদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করেছি।
প্রশ্ন: বড় সংস্থার সঙ্গে হাত মেলালে কি প্রযোজনার ক্ষেত্রে সুবিধা হত?
বনি: প্রথম বার এই কাজ স্বাধীন ভাবেই করতে চেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, দেখি না করতে পারি কি না। অন্যদের সাহায্য নিলে তখন কথা উঠত যে, এরা নিজেরা কিছুই করতে পারে না। অমুক দাদা ছিল বলে উতরে গেল। তেমন কথা হোক চাইছিলাম না। সবাই বড় বড় হেঁকে ফেলে কাজ করতে পারে না। তাই আমরা নিজেদের মতো করে কাজ করে গিয়েছি। অবশ্যই এটা মানি যে, বড় সংস্থা সঙ্গে থাকলে প্রক্রিয়াটা অনেক সহজ হত। কিন্তু এখনও অসুবিধা হচ্ছে না। মা (পিয়া সেনগুপ্ত) আছে তো। ইম্পা (ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন)-এর প্রেসিডেন্ট পাশে আছে যখন, কিছু হলেই অভিযোগ জানিয়ে দেব (মজার ছলে)।
প্রশ্ন: এসভিএফ-এর সঙ্গে আপনাদের সমস্যা মিটে গিয়েছে?
বনি: হ্যাঁ, এখন আর কোনও সমস্যা নেই। সব মিটে গিয়েছে। এমন কি ‘হইচই’ থেকে সিরিজ়ের কথাও বলেছিল। কিন্তু হয়ে ওঠেনি।
প্রশ্ন: প্রযোজক-পরিচালকের কাছে অভিনেতা বনির গুরুত্ব বাড়ল?
বনি: হ্যাঁ। এখন চিত্রনাট্য পছন্দ না হলে বলতে পারি, এই কাজটা আমার জন্য নয়। অনেক সিনিয়র পরিচালকও এখন ফোন করছেন। কথা বলতে চাইছেন, ভাল লাগছে।
প্রশ্ন: আর কি রাজনীতিতে আসবেন না?
বনি: এই মুহূর্তে তো না। আগে হয়ে গিয়েছে। তখন এত হাওয়া উঠেছিল তাই একটা ঘূর্ণিঝড়ে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই ঝড় থেকে এখন ছিটকে বেরিয়ে এসেছি, আপাতত সিনেমাতেই মন দিতে চাই। আর সত্যি বলতে মাখন লাগিয়ে কাজ করতে পারব না।
কবে বিয়ে করছেন বনি? ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: বিয়ের তারিখ তো নাকি ঠিক হয়ে গিয়েছে আপনাদের?
বনি: হ্যাঁ, বয়স তো বাড়ছে। এ বার তো বিয়েটা করতে হবে। না তবে তারিখ এখনও নিশ্চিত কিছু বলতে পারব না। আমাদের নতুন ফ্ল্যাটটা এখনও তৈরি হয়নি। ওটা পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলেই বিয়েটা করে ফেলব।