বলিউডে ক্রমশ জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠছেন কৃতী শ্যানন। দক্ষিণী ছবি দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। টাইগার শ্রফের সঙ্গে ‘হিরোপন্তি’ হিট করায় কৃতী নজরে আসেন। শাহরুখ খান, বরুণ ধবনের সঙ্গে তাঁর ‘দিলওয়ালে’ না চললেও, কৃতীর কেরিয়ারের জন্য ছবিটি উল্লেখযোগ্য ছিল। আগামী ছবি ‘রবতা’র প্রচার নিয়ে তিনি এখন বেশ ব্যস্ত।
‘রবতা’ নিয়ে চর্চা চলছে। ছবির গল্প তো বটেই, সবচেয়ে বেশি আলোচ্য সুশান্ত সিংহ রাজপুতের সঙ্গে কৃতীর সম্পর্ক।
কৃতীও কিন্তু সুশান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বলছেন, ‘‘ভীষণ হার্ড ওয়ার্কিং আর খুঁতখুঁতে অভিনেতা। খুব মেথডিকালি কাজ করে। কিন্তু যখন সেটে আসে, তখন একদম স্বতঃস্ফূর্ত।’’ বোঝাই যাচ্ছে, সুশান্তের প্রশংসায় কৃতী অনর্গল কথা বলতে পারেন। কিন্তু দু’জনের প্রেম নিয়ে তাঁর কী বক্তব্য? ‘‘কোনও বক্তব্যই নেই। আসল সত্যিটা আমরা দু’জনেই জানি। ‘রবতা’র শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই এই গুজব শুনে আসছি। মিডিয়ার লেখাগুলো পড়ে ভীষণ অবাক লাগত! বাস্তবের সঙ্গে ওগুলোর তো কোনও সম্পর্ক নেই,’’ বললেন কৃতী।
তাঁদের জোরদার কেমিস্ট্রিই কি এই গুজবের কারণ? ‘‘সেটা বলতে পারব না। স্ক্রিপ্টের বাইরে গিয়ে অনেক কিছু অনসেট করেছি। যেটা খুব ভালও বলে মনে হয়েছে সকলের,’’ খানিকটা এড়িয়ে গিয়েই জবাব দিলেন কৃতী।
তবে সুশান্ত আর তিনি যে খুব ভাল বন্ধু সেটা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভাল বন্ধু বলেই হয়তো কথাগুলো রটেছে। ও ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রপ করেছে। আর আমি পুরোপুরি ইঞ্জিনিয়ার। তাও ও আমার চেয়ে বেশি জানে! আমার ব্যাপারে সুশান্ত ভীষণ প্রোটেক্টিভও। ‘রবতা’র সেটে স্টান্ট করার সময় ও আমার খেয়াল রাখত।’’ কৃতী মুখে স্বীকার করছেন না বটে। কিন্ত তাঁর কথা থেকে স্পষ্ট, সুশান্তের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা শুধু বন্ধুত্বের থেকে বোধহয় একটু বেশিই। সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন আসছে দেখে নিজেই অনুরোধ করলেন, ‘‘প্লিজ, আমরা ছবিটা নিয়ে একটু কথা বলি।’’
এই প্রথম ডাবল রোল করছেন কৃতী। বললেন, ‘‘দুটো চরিত্র একদম বিপরীত মেরুর আর আলাদা সময়ের। একটা চরিত্র ফ্ল্যাশব্যাকে আসবে। সেখানে আমার নাম সাইবা। একজন ওয়ারিয়র প্রিন্সেস। শিকার করতে ভালবাসে। কিছুতেই ভয় পায় না। আর হ্যাঁ, সে সুন্দরীও বটে এবং তার মধ্যে অহংকারও আছে। খুব জোরালো একটা চরিত্র।’’ কৃতী এই চরিত্রের জন্য মার্শাল আর্ট থেকে ঘোড়া চালানো সবই শিখেছেন। আর একটা গল্পের পটভূমি বুদাপেস্ট। সেখানকার মেয়ে সাইরার চরিত্রটা বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে। কৃতী জানাচ্ছেন, বুদাপেস্টে শ্যুটিং করতে গিয়ে শহরটার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। ‘‘দু’মাস ওখানে ছিলাম। ভীষণ শান্ত শহর। বেশি লোকজন নেই। শ্যুটিং না থাকলে সকালেই বেড়াতে বেরিয়ে পড়তাম। কিছু হাঙ্গেরিয়ান ভাষাও শিখে নিয়েছিলাম।’’
‘রবতা’র সঙ্গে দক্ষিণী ছবি ‘মগধীরা’র মিল রয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করছে। রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার ‘মিরজা’র সঙ্গেও মিলের কথা শোনা যাচ্ছে। কৃতী অবশ্য মিলের বিষয়টা অস্বীকার করে বললেন, ‘‘ওই ছবিগুলোর
সঙ্গে প্রেম আর জন্মান্তর ছাড়া আর কোনও মিল নেই।’’
কেরিয়ারের শুরুতেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কৃতী। এই স্টারডম কেমন উপভোগ করছেন? ‘‘স্টারডমের আমি দেখেছি কী? মোটে দুটো ছবিই তো করেছি। তবে লোকে এখন আমাকে চেনে। ব্যক্তি হিসেবে কিন্তু আমার মধ্যে কোনও পরিবর্তন হয়নি। যদিও জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন অটোতে চড়তে পারি না। পায়জামা পরে রাস্তায় ফুচকা খেতে যেতে পারি না। এগুলো খুব মিস করি। অনেকের ধারণা, গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে সব কিছু গ্ল্যামারাস। সব কিছু চট জলদি হয়। সেটা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল। অনেক পরিশ্রম জড়িয়ে রয়েছে এর পিছনে।’’
কৃতী ফিল্মি পরিবারের সন্তান নন। একটা সময় তাঁর নিজেকে আউটসাইডার মনে হতো। এখনও কি সেই অনুভূতিটা আছে?
‘‘নিশ্চয়ই আছে। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনও গডফাদার নেই। বেশি বন্ধুও নেই। তবে হ্যাঁ, যে পার্টিতে আমি যাই, সেটা আগের চেয়ে বেশি ইন্টারেস্টিং হয়ে যায়,’’ হাসতে হাসতে বললেন কৃতী!