আলি আব্বাস জাফর
তাঁর কাঁধে গুরুদায়িত্ব। বছরের অন্যতম প্রতীক্ষিত ছবি ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর কান্ডারি আলি আব্বাস জাফর সেই প্রত্যাশা সম্পর্কে অবগতও। ছবির নামের রেশ টেনে সাক্ষাৎকার শুরুর আগে কুশল বিনিময়ের সময়ে বললেন, ‘‘আই অ্যাম সারভাইভিং।’’
সলমন খানের সঙ্গে এটি আলির দ্বিতীয় কাজ। ‘‘প্রথম বার ‘সুলতান’-এ সলমনের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে পরস্পরকে জানতে বুঝতে সময় লেগেছিল। কিন্তু এ বার সেই সম্পর্ক অনেকটা ম্যাচিয়োরড। স্ক্রিপ্ট নিয়ে দু’জনেই দু’জনকে আগের চেয়ে বেশি স্বচ্ছ ও সৎ মতামত দিয়েছি। ক্যাটরিনা আমার প্রথম ছবির (‘মেরে ব্রাদার কী দুলহন’) নায়িকা, অনেক পুরনো বন্ধু। আর আমাদের সম্পর্কের সহজ সমীকরণ ছবিতেও দেখতে পাবেন,’’ বললেন পরিচালক। সলমনের শেষ ছবি ‘টিউবলাইট’ তো বক্স অফিসে চলেনি। তার জন্য কি আপনার দায়িত্ব বেড়ে গেল? ‘‘ছবির হিট বা ফ্লপ হওয়া এই পেশার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঠিকই। তবে পরিচালক হিসেবে মনে করি, যে গল্প বলব, তাতে যেন আমার শতকরা একশো ভাগ আস্থা থাকে। চাপ অস্বীকার করি না। এত বড় মাপের ছবি, তার উপর সিক্যুয়েল! তবে ভাল ছবি বানাতে হবে। তা হলেই সেটা চলবে।’’ তার মানে বক্স অফিসের চিন্তা নেই? ‘‘আমার চিন্তা ভাল ছবি বানানো। খারাপ ছবি বানালে প্রযোজকও জানেন, বক্স অফিস সদয় হবে না,’’ হাসতে হাসতে বললেন আলি।
পরিচালক হিসেবে সলমনের স্টারডম কখনও অন্তরায় মনে হয়েছে? জবাবে আলি বললেন, ‘‘একেবারেই নয়। সলমনের স্টারডম আমার কাছে প্লাস পয়েন্ট। তবে আমি ওর জন্য এমন চরিত্র লিখি, যা ওর স্টারডমের পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। পরদায় সলমন আবেগের দৃশ্য করুক বা অ্যাকশনের, দর্শক যেন ওকে সুপারহিরো না ভাবে। পরিচালক হিসেবে সেটাই আমার দায়িত্ব। বরং ও যেন দর্শকেরই একজন হয়ে ওঠে। হল থেকে দর্শক যখন বেরোবেন, যেন মনে হয়, সলমন তাঁদের জীবনে কিছু অবদান রেখে গেল।’’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর গল্প ইরাকে অপহৃত ৪৬ জন ভারতীয় নার্সের সত্যি ঘটনার আধারে বোনা। আবু ধাবিতে ছবির অনেকটা শ্যুট হয়েছে। বলা হচ্ছে, হিন্দি ছবির ইতিহাসে বিদেশে তৈরি সবচেয়ে বড় সেট এটি। টানা ৪০ দিন বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি জয় করে শ্যুট হয়েছে। ছবির একটি গানের শ্যুট হয়েছে আল্পসের মাইনাস ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডায়। ‘সোয়্যাগ সে স্বাগত’ গানের জন্য গ্রিস, ত্রিনিদাদ, ফ্রান্স থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একশো ব্যালেরিনাকে আনা হয়েছে। দু’দিন আগে সলমনের বেয়ার-বডি ছবি শেয়ার করে পরিচালক ফাঁস করেছেন নায়কের ফিটনেস রহস্যও।
‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’-এর একটি দৃশ্য
ছবির প্রাথমিক উদ্দেশ্য কিন্তু বিনোদন। সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে বিশ্বাস করেন দিল্লির কিরোরি মাল কলেজের বায়োকেমিস্ট্রির ছাত্র আলি। তাঁর কলেজেরই স্বনামধন্য প্রাক্তনী অমিতাভ বচ্চন, সতীশ কৌশিক, কুলভূষণ খরবান্দা। কলেজের দিন থেকেই ‘দ্য প্লেয়ার্স’ নামে থিয়েটার গ্রুপের সক্রিয় সদস্য আলি। আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় পরিচালক হওয়ার ইচ্ছে।
এ বছর ‘বাহুবলী টু’ বা ‘গোলমাল এগেন’-এর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবি ভীষণ সফল। এই ধরনের ছবি পরিচালনা করা কি নিরাপদ? ‘‘এটা দু’-ধার তরোয়ালের মতো। ভালও আছে, খারাপও আছে। দর্শকের প্রত্যাশা অন্য ছবির চেয়ে অনেক বেশি। আশা করি, বড়দিনে শেষ হাসি হাসতে পারব,’’ বললেন আলি।