Koel Mullick

‘এই দিনটার জন্যই তো আমি অপেক্ষা করে ছিলাম’

মাতৃত্ব প্রসঙ্গে বললেন কোয়েল মল্লিক। কেমন কাটছে তাঁর সময়? মাতৃত্ব প্রসঙ্গে বললেন কোয়েল মল্লিক। কেমন কাটছে তাঁর সময়?

Advertisement

পারমিতা সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১১
Share:

কোয়েল

প্র: এক দিকে মা হওয়ার আনন্দ, অন্য দিকে গোটা পরিবার করোনায় আক্রান্ত হওয়া... ভাল-খারাপের দোলাচলের মধ্য দিয়ে কেমন কেটেছে সময়টা?

Advertisement

উ: নিঃসন্দেহে জীবনের সেরা সময়, তাই তাকে খারাপ বলতে পারব না। মা হওয়ার মুগ্ধতাটা অনেক বেশি ছিল। হ্যাঁ, কিছুটা সময় খুবই চিন্তায় কেটেছে। আমরা ভাবতেও পারিনি যে, এ রকম কিছু হতে পারে। তবুও এ সবের মধ্যে আমার সন্তান বাড়ির পরিবেশ বদলে দিয়েছিল। বাড়িতেই কোয়রান্টিনে ছিলাম আমরা। রানের (নিসপাল সিংহ) সঙ্গে আমার এক ঘরে থাকাও বারণ ছিল। ওর যখন ছেলেকে দেখতে ইচ্ছে করত, তখন আমি বারান্দার একদিকে ছেলেকে কোলে নিয়ে দাঁড়াতাম। ও অন্য প্রান্ত থেকে দেখত। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাসী, সেটাই আমাকে বিপদে শক্তি দেয়।

প্র: আপনার স্বামীও (নিসপাল সিংহ) খুবই ব্যস্ত মানুষ। কতটা বদলেছে আপনাদের জগৎ?

Advertisement

উ: রানের পৃথিবী এখন সন্তানকে ঘিরে। বাবাকে দেখলেই ছেলে খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। অনেক কথা বলতে শুরু করে। আমি তো মা, তাই কাজের মধ্যে থাকলেও ওর খবর আমাকে নিতেই হবে। আগে যে রকম নিশ্চিন্তে বেরিয়ে পড়তাম, সেই জীবনটা আর নেই। তার জন্য দুঃখ নেই। জীবনের এই নতুন অধ্যায় বেশ উপভোগ করছি।

প্র: পর্দাকে মিস করছেন?

উ: কিছু দিন আগে একটা রিয়্যালিটি শোয়ে গিয়ে ভীষণ ভাল লেগেছিল। সেই ক্যামেরা, লাইট, কস্টিউম, মেকআপ... যে সবের মধ্যে আমি এত বছর কাটিয়েছি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, বাড়িতে যখন ছেলের সঙ্গে থাকি, তখন মনে হয় এই দিনের জন্যই তো আমি অপেক্ষা করে ছিলাম। আবার সেটে গিয়ে মনে হয়েছে, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে কী ভাল লাগছে!

প্র: জন্মের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের ছবি দিয়েছিলেন। আপনারা যে রকম ব্যক্তিগত ঘেরাটোপে থাকা মানুষ, তার সঙ্গে ব্যাপারটাকে মেলানো যায় না। সোশ্যাল মিডিয়ার চাপ?

উ: আমরা একেবারেই সোশ্যাল মিডিয়া টাইপ মানুষ নই। কিন্তু সে দিনের ওই ছবিটা আমাকে দিতে হত, কারণ আমাদের বিরাট বড় পরিবার। সকলে ওকে দেখতে চেয়েছিল। তা ছাড়া আমার যারা শুভাকাঙ্ক্ষী তাদেরও আগ্রহ ছিল ওকে দেখার। অনেকে প্যানডেমিকের কারণে আসতে পারেনি। সকলের কথা ভেবেই ছবিটা দেওয়া। এবং আমরাও সে ব্যাপারে ভীষণ সাবধান ছিলাম।

প্র: সে সময়ে শোনা গিয়েছিল, মা-বাবা হওয়ার আনন্দে আপনাদের বাড়িতে পার্টি হয়েছিল এবং তার পরেই করোনার খবর...

উ: কী বলব এর উত্তরে! শুধু এটুকু বলতে পারি, বাচ্চার কথা ভেবে আমরা ভীষণ সতর্ক ছিলাম এবং পুরোপুরি বাড়িতেই ছিলাম।

প্র: এ সবের মধ্যেই পুজোয় রিলিজ় করছে ‘রক্তরহস্য’!

উ: এ ছবির চরিত্র স্বর্ণজা আমার খুব প্রিয়। এত দিন পর্যন্ত আমি যত চরিত্র করেছি, সেগুলো ভীষণ কনফিডেন্ট, যা জেনেবুঝেই বেছেছিলাম। এই প্রথম বার এমন চরিত্রে অভিনয় করলাম, যার আত্মবিশ্বাস শূন্য, কারণ সে জীবনের সব ক্ষেত্রে হেরেই চলেছে। কিন্তু সে-ও একটা সময়ে জেতে। সবাই তো বাঘিনী হয় না। এ রকম আন্ডারডগ চরিত্র সৌকর্যর (ঘোষাল) আগে আমাকে কেউ দেয়নি। চরিত্রটা করতে গিয়ে এ রকমও দিন গিয়েছে যে, আমার রাতে ঘুম হত না। এত মনখারাপ লাগত। একটা জায়গায় আমাকে চরিত্রটা থেকে বেরোতে হয়, কারণ আমি যদি নিজেকে বেচারা ভাবতে থাকি, তা হলে চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পারব না।

প্র: এই অনিশ্চিত সময়ে ছবি রিলিজ় করা কি ঝুঁকির হল না, যেখানে সব বড় ছবির মুক্তি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে?

উ: ‘রক্তরহস্য’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত এপ্রিলে, তাই ঠিক করে রেখেছিলাম, হল খুললেই ছবিটা মুক্তি পাবে। আর পুরো ইন্ডাস্ট্রিটাই একটা চেন। ছবি আটকে থাকলে সব কিছুই বন্ধ হয়ে থাকবে। তাই ঝুঁকিটা নিতেই হত। আর সে জন্য পুজোর চেয়ে ভাল সময় আর হয় না। মা আসছে মানে এ বার সব ভয় কেটে গিয়ে নতুন কিছু শুরুর আশা।

প্র: গত ক’মাসে সুরিন্দর ফিল্মস বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে বহু কথা শোনা গিয়েছে। আপনাদের দু’জনের চুপ করে থাকাও কি এ ধরনের কথায় ইন্ধন জোগাচ্ছে না?

উ: এ ব্যাপারে আমার আর রানের স্বভাব খুব মেলে, সে কারণেই হয়তো আমরা স্বামী-স্ত্রী। বহু মানুষের অনেক সময় আছে এ সব গসিপ করার জন্য। তাতে আরও কিছু মানুষ আনন্দ পায়। তার উত্তর দেওয়া মানে নিজেদের শান্তি ও সময় নষ্ট করা। আমাদের জীবনে ব্যক্তিগত পরিসর আর শান্তি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement