সৌরভ চক্রবর্তী। ছবি-ফেসবুক।
‘শব্দজব্দ’র প্ল্যানটা তো বেশ পুরনো, মধুমিতাও তো অংশ ছিল এই প্রজেক্টের। এখন সমীকরণ আলাদা, খারাপ লাগছে?
সেটা তো খুব স্বাভাবিক। এক মাসের ব্যবহার করা ব্রাশও যখন বদল করে আমরা নতুন ব্রাশ মাড়িতে ঘষি, ব্যথা লাগে। সেখানে আট বছরের একটা সম্পর্ক। হ্যাঁ, খুবই খারাপ লাগছে।
এত আগে প্ল্যান করেও এত দেরি হল কেন?
প্রথমত, আমার বাবার চলে যাওয়া এবং অবশ্যই আমার বিচ্ছেদ। আমার বাবার ক্যানসার হয়েছিল। চোখের সামনে একজন মানুষকে প্রতিদিন আরও অসুস্থ হতে দেখছি। ওই সময় কাজ কেন, নিজের বাঁচতেও ইচ্ছে করে না।
সামনেই তো মুক্তি, টেনশন হচ্ছে?
হ্যাঁ, তা তো হচ্ছেই। ট্রেলার ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়ে গিয়েছে। প্রচুর মানুষ দেখছেন ট্রেলারটা। আর রেসপন্সও বেশ পজিটিভ।
এতে তো আনন্দ পাওয়ার কথা!
আসলে এটা তো সাইকোলজিকাল থ্রিলার। এর চিন্তা পদ্ধতি, গঠন সবটাই ভিন্ন। সবাই এত খুঁটিয়ে দেখেছে ট্রেলার এবং টিজার, সবার মধ্যে এক্সপেকটেশন এত বেড়ে গিয়েছে...সেটাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। (হাসি)
শব্দজব্দ ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্য
অমিতাভ বচ্চন টুইট করে শব্দজব্দের টিজারের প্রশংসা করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতাটা কেমন?
বেশ রাতের দিকেই টুইট করেছিলেন উনি। আমি আর আমার মিউজিক ডিরেক্টর বসে জ্যামিং করছিলাম। গান-টান লিখছিলাম। হঠাৎ দেখি এরকম একটা টুইট। প্রথমে ভেবেছিলাম বিগ-বি’ র ফেক প্রোফাইল, কেউ জাস্ট মজা করার জন্য এ রকমটা করছে। সকাল বেলা ওঁকে আমরা মেল করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু উনি যে টুইটারে শেয়ার করবেন ভাবতে পারিনি।
তার পর?
খবরটা শুনে ভীষণ ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম সবাই।
পরিচালক না অভিনেতা, সৌরভের কোন সত্তা বেশি কাছের?
পরিচালক। অনেকেই জানেন না ইন্ডাস্ট্রিতে আমার হাতেখড়ি কিন্তু পরিচালনা দিয়েই। রানা দা , সুদেষ্ণাদিকেও অ্যাসিস্ট করেছি আমি।
শোনা যাচ্ছে, পরিচালনায় আসার পর অভিনেতা হিসেবে নাকি আপনার কাজ কমে যাচ্ছে?
সে তো বহুদিনই। আগে মানতে চাইতাম না পরে অনুভব করেছি যে কোনও একটা ট্যাগ থাকলে কাজ পেতে সুবিধে হয়। অভিনেতা এবং পরিচালক, একটা প্রযোজনা সংস্থাও রয়েছে সঙ্গে- সে জন্যই বোধহয় গণ্ডগোলটা হচ্ছে। ঠিকই, পরিচালক তকমাটা লাগার পর থেকেই আমার অভিনয়ের অফার আসা কমেছে।
আরও পড়ুন-কমল হাসনের ছবির শুটিং সেটে ক্রেন ভেঙে মৃত ৩, আহত ১০
আপনার ওয়েব সিরিজে প্রধান চরিত্রে রজত কপূর। স্বপ্নটা বড় ছিল...
আমরা এমন এক জনকে খুঁজছিলাম যাঁর চেহারার মধ্যে ওই দশ বারো বছর প্রথম বিশ্বে কাটানোর ছাপটা রয়েছে। দেখে মনে হয় একটু কম কথা বলেন, প্রচণ্ড শান্ত। একটা মায়া রয়েছে। কিন্তু সেটা লুকিয়ে রাখে। এই সব কিছু দেখা গেল, ওঁর মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। আমি নিজেও ওঁর অভিনয়ের ভক্ত। কিন্তু সেখানেও সমস্যা।প্রথমত, এত কম বাজেটে কাজ আর তার মধ্যে উনি সব স্ক্রিপ্ট শুনতেও চান না। এসভিএফ থেকে সাহায্য পাই। উনি রাজি হন স্ক্রিপ্ট শুনতে। কলকাতায় ম্যাকবেথের শুট চলছিল। ওঁকে পুরো ব্রিফটা দিই। অনেকগুলো চিত্রনাট্য পরিবর্তনের গল্প। রজত কপূরের ভাল লাগে। উনি শুনেই বলে দেন, “আমি করছি”। শুধু রজত কপূরই নন। মুমতাজ, পায়েল এদের অভিনয়ও মানুষের ভাল লাগবে। চমকে যাবে মানুষ কৌশিক রায়কে দেখলে।
সৌরভ এবং মধুমিতা
শোনা যায়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জন্যই নাকি আপনার বিচ্ছেদ হয়েছে?
(হাসি) আমার বক্তব্য আমি তো এখন সেই অর্থে ফ্রি। তাহলে সেই সব ‘সম্পর্ক’, সেই সব প্রেমিকারা কোথায় গেল? আমি কেন একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছি?
তা হলে আপনার আর মধুমিতার বিচ্ছেদের পিছনে অন্য সম্পর্কের অনুষঙ্গ নেই?
আমি জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি যারা পরকীয়া করেও নিশ্চিন্তে সংসার করে থাকেন। আসলে বিচ্ছেদ হলেই এগুলো উঠে আসবেই। খুব সভ্য ভদ্র ভাবে কারও ডিভোর্স নিয়ে আলোচনা হয়েছে এমনটাতো আজ অবধি দেখলাম না। আমি আর মধুমিতা খুবই ভালবাসা থেকে বিয়েটা করেছিলাম। লুকিয়ে, ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে। একেবারে সিনেমার মতো। তাই এই সব বাজে মন্তব্যগুলো আমাদের সম্পর্কে খাপ খায় না।
এখন তা হলে সিঙ্গল?
হ্যাঁ, পুরোদস্তুর।
মধুমিতারও ছবি রিলিজ করল কিছু দিন আগে। শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন?
না, ওর সঙ্গে আমার আর কথা হয় না।