'এখন যুদ্ধটা চলে নিজের সঙ্গে'

ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে লড়াইয়ের রূপটা বদলে বদলে যায়। এমনটাই বলছেন রাজকুমার রাও ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে লড়াইয়ের রূপটা বদলে বদলে যায়। এমনটাই বলছেন রাজকুমার রাও

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
Share:

রাজকুমার

অন্য ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ‘নিউটন’-এ কখনও তিনি সৎ সরকারি চাকুরিজীবি, যে নির্বাচনের কাজ করতে গিয়ে নির্দ্বিধায় বন্দুক উঁচিয়ে প্রতিবাদ করতে পারে। আবার ‘বরেলী কী বরফি’তে তাঁর অভিনীত চরিত্রের দ্বৈত সত্তা দেখলে রীতিমতো অবাক হতে হয়। তিনি রাজকুমার রাও। বলা ভাল, হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে ভিন্ন ধারার ছবির অন্যতম মুখ তিনি। এ বার ফিরছেন বায়োপিকে। হনসল মেটার পরিচালনায় ‘ওমের্তা’য় রাজকুমারের অভিনীত চরিত্রটি সন্ত্রাসবাদী আহমেদ ওমর সইদের জীবনের উপর নির্ভর করে তৈরি।

Advertisement

তবে হনসল-রাজকুমারের জুটি কিন্তু মোটেও নতুন নয়। ‘শাহিদ’, ‘সিটিলাইট’, ‘আলিগ়ড়’-এর পর ‘ওমের্তা’ এই পরিচালক-অভিনেতা জুটির চতুর্থ ছবি। রাজকুমার বললেন, ‘‘হনসল আমার মতোই নির্ভীক। আবার সংবেদনশীলও। তাই ছবির বিষয়বস্তু যা-ই হোক না কেন, উনি সহজেই সেটা ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আর পরিচালক হিসেবে আমার মতো এক জন অভিনেতার কাজটাও অনেক সহজ করে দেন।’’

‘শাহিদ’ ছবিটি রাজকুমারকে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাঁকের মুখে দাঁড় করিয়েছিল। এই ছবির জন্যই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তাই পরিচালকের গুণমুগ্ধ রাজকুমার বললেন, ‘‘হনসল একাধারে আমার বন্ধু, প্রশিক্ষক, পথ প্রদর্শক। ওঁর সঙ্গে আমি ছবি থেকে রাজনীতি, খেলাধুলো থেকে তত্ত্বকথা— সব আলোচনা করতে পারি।’’

Advertisement

হনসলের সঙ্গে কাজ করাটা সহজ হলেও ‘ওমের্তা’ কিন্তু বেশ কঠিন। এ কথা নিজেই মানছেন রাজকুমার, ‘‘আমার মতে, আহমেদ ওমর সইদের ঘটনাটা সত্যি। আর দর্শকের মনের মধ্যে সত্যি ঘটনাগুলো পর্দার মাধ্যমে চাক্ষুষ করার অদম্য কৌতূহল থাকে। তাঁরা জানতে চান, আদতে কী ঘটেছিল। এ ছাড়াও, বিশ্বের নানা প্রান্তে এমন অনেক কিশোর রয়েছে, যারা সহজে প্রভাবিত হয়ে সন্ত্রাসবাদের পথ গ্রহণ করে। আমাদের সকলেরই সমস্যাটার ভিত বোঝা উচিত। খুঁজে বের করা উচিত এর প্রতিকার।’’

ছবিতে রাজকুমার

এই বাস্তব-সমস্যা আর তার প্রতিকার খোঁজার মতো কঠিন না হলেও, ‘ওমের্তা’র প্রস্তুতি পর্বও কিন্তু সহজ ছিল না। অভিনেতা বলছেন, ‘‘কঠিনের চেয়েও ‘ওমের্তা’র প্রস্তুতিপর্ব ছিল দীর্ঘস্থায়ী। প্রথমে লন্ডনে গিয়ে ভাষা রপ্ত করতে হয়েছে। ওদের কথা বলার ধরনের খুঁটিনাটি জানতে হয়েছে। ওমর পাকিস্তানি হলেও জন্ম ব্রিটেনে। ফলে ওর জীবনযাপনের ধারা জানা জরুরি ছিল। তার পর চরিত্রটার জন্য শারীরিক পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখা। তিন মাসের চেষ্টায় দাড়ি বড় করি, নিজের শারীরিক ক্ষমতা আর পেশির জোর বাড়ানোর উপর কাজ করি। এ ছাড়া নানা ধরনের বই পড়া, ভিডিয়ো দেখা তো আছেই।’’

আরও বলছেন, ‘‘আমার কাছে ‘বরেলী কী বরফি’র পর থেকেই অনেক হালকা মেজাজের চিত্রনাট্য আসছে। এখন বোধ হয় সকলেই বুঝতে পারছেন যে, আমি ‘নিউটন’-এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে পারি। তাই ‘ওমের্তা’র পরে আমার হাতে রয়েছে শ্রদ্ধা কপূরের সঙ্গে ‘স্ত্রী’, কঙ্গনা রানাবতের বিপরীতে ‘মেন্টাল হ্যায় কেয়া’, সোনম কপূরের সঙ্গে ‘এক লড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লগা’।’’

সব ধরনের চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করতে পারেন বলেই কি অনেকে আপনাকে মজা করে গিরগিটি বলে? রাজকুমার হেসে জবাব দিলেন, ‘‘চেষ্টা তো করি। খেয়াল রাখি, আমার করা প্রত্যেকটা ছবির বিষয় আর আমার চরিত্রগুলো যেন একদম আলাদা হয়।’’ তা হলে নিশ্চয়ই ইন্ডাস্ট্রিতে লড়াইটা এ বার কমেছে? ‘‘একদম শুরুতে লড়াইটা ছিল অন্য বিষয় নিয়ে। তখন মনের মতো চিত্রনাট্যই পেতাম না। লোকে ভরসা করত কম। সেই ভরসাটা পেয়ে গিয়েছি। তবে এখন যুদ্ধটা চলে নিজের সঙ্গে। এক জন অভিনেতা হিসেবে নিজের মান ধরে রাখা জরুরি,’’ স্পষ্টবাদী রাজকুমার।

পত্রলেখার সঙ্গে জমিয়ে প্রেম করার পাশাপাশি একসঙ্গে থাকাও শুরু করেছেন। তা হলে কি এ বার গাঁটছড়া বেঁধে ফেলার পরিকল্পনা করছেন? ‘‘একদমই নয়। পত্রলেখা আমাকে নানা বিষয় নিয়ে সাহায্য করে, মতামত দেয়। আমি আর পত্রলেখা এই মুহূর্তে খুব খুশি। বিয়ের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই নই। তবে সময়টা এখনও আসেনি,’’ জানাচ্ছেন রাজকুমার। নিজের কিছু বদলাতে চান? ‘‘কিচ্ছু না। তবে আমি ভীষণ আবেগপ্রবণ। আর মানুষকে বড্ড তাড়াতা়ড়ি বিশ্বাস করে ফেলি,’’ হাসলেন রাজকুমার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement