সিরিয়ালের সেটে নবমিতা চট্টোপাধ্যায়।
রেশমি মিত্রের ‘লাইমলাইট’-এ সাংবাদিকের চরিত্র করলেন। ইন্ডাস্ট্রির প্রতিক্রিয়া?
আমি তো প্রথমে ভাবিনি ঋতুদির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করব। এটাই তো পাওয়া। ছোট চরিত্র।আমার চরিত্রের নাম ‘গার্গী’। আসলে তখন ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’ধারাবাহিকে বর্ষা-র চরিত্রও করছি। দুটো চরিত্র একেবারে আলাদা। তবে চেষ্টা করেছি কাজটা করতে। ‘লাইমলাইট’ছবিটা দেখার পর শ্রীলাদি, ঋতুদি দু’জনেই কাজের প্রশংসা করেছেন।
এখন ঠিক কী করছেন?
অপেক্ষায় আছি। বছরের শুরুতেই নতুন ধারাবাহিকে কাজ করার কথা। বিশ্বজিৎ ঘোষ আর প্রসেনজিৎ ঘোষের পরিচালনায় ‘আমি রবীন্দ্রনাথ’বলে ছবিতে কাদম্বরী করলাম। মূলত কাদম্বরী আর রবীন্দ্রনাথকে ঘিরেই গল্প। তবে এখানে পরকীয়ার চেয়ে দু’জনের ভালবাসা, একাকীত্বের বন্ধুত্বা এই জায়গাগুলো ধরা হয়েছে। ফেস্টিভ্যালে ঘুরে ছবিটা হলে আসবে। কাদম্বরী চরিত্র করার মধ্যে একটা চ্যালেঞ্জ তো আছে।আমি আসলে পুজোর পর থেকে এখন ব্রেক নিয়েছি। মেগা করা তো খুব শক্ত। টানা উনত্রিশ দিনের কাজ থাকত আমার।সুদীপাদি ফোন করে করে বলত, তোর জন্য এই সংলাপটা লেখা, তোকে ভাল করতেই হবে। খুব ইনস্পায়ার করেছে তাই কাজটা করতে পেরেছি। বাড়িতেও তো দেখেছি ভাস্বরকে, গৌরবকে, নিঃশ্বাস ফেলার সময় পায় না ওরা। তবে আবার শুরু করতে চাই আমি।
আর ঋতুপর্ণার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?
অত বড় শিল্পী, কিন্তু কোনও অহং নেই। খুব সাপোর্টিভ। এগুলো বলা হয়নি সেভাবে কোথাও।তবে আমি কাজ নিয়ে খুব কথা বলা, ফেসবুকে সব শেয়ার করা, এগুলো পারি না। আমি চুপচাপ কম কাজ করতে চাই। ভাল চরিত্র করতে চাই। মানে, প্রচুর কাজ করে বাড়ি-গাড়ি করার তাগিদ আমার নেই।
আরও পড়ুন-জয়ললিতার ভূমিকায় কঙ্গনা, ফার্স্টলুক প্রকাশ পেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হাসির রোল!
উত্তমকুমারের নাতনি আপনি। পারিবারিক এই গরিমা কি ব্যাগেজ নাকি সুবিধার?
নিজেকে উত্তমকুমারের নাতনি ভেবে অভিনয় করতে আসিনি। তবে এই জন্মে উত্তমকুমারের নাতনি আমি! এটা ভাবতে তো ভাল লাগে।
পরেরজন্মেও কি উত্তমকুমারের নাতনি হতে চান?
হুমম! এটা তো কখনও ভাবিনি! হলে ক্ষতি কী? ভালই তো। তবে নাতনি হয়ে জন্মাতে অসুবিধে নেই, কিন্তু দাদুকে বেঁচে থাকতে হবে। দেখতে চাই আমি দাদুকে।
নবমিতা-ভাস্বর
উত্তমকুমারের পছন্দের কোনও জিনিস আপনার কাছে আছে?
ঠাম্মাকে ভীষণ ভালবাসতেন দাদু। আর আমি মনে করি, দাদুর সমৃদ্ধি, তাঁর বিস্তার সব কিছুর পেছনে ঠাম্মার আত্মত্যাগ খুব পজিটিভলি কাজ করেছিল। ঠাম্মাকে দাদু পছন্দ করে যে সব শাড়ি গয়না কিনে দিয়েছিলেন তার বেশিরভাগটাই আমার কাছে আছে।
সে কী! বোন কিছু বলেনি?
মিকুনকে বলেছি তুই এগুলো নে।বলে আমি যা বেছে দিয়েছি তাতেই ও খুশি। ও বলেছে, আচ্ছা। আর ঝিকুন তো খুব চুপচাপ, এসবের মধ্যে ঢোকেই না। ঠাকুমার সাজের জিনিস যা দাদু বানিয়ে দিয়েছিল, যেমন ড্রেসিং টেবল,একটা বড় গোল আয়না, ওগুলো সব আমিই ব্যবহার করি। বোনকে ঠাকুমার আলমারির যে আয়না সেইখানে ঠেলে দিয়েছি(হাসি)।আয়না নিয়ে আমার অবসেশন আছে। যেখানেই যাই আয়না কিনি।
নিজে নিজের আয়না হয়ে উঠতে পেরেছেন কখনও?
(একটু ভেবে) হ্যাঁ পারি। আমি নিজের কাছে স্বচ্ছ। আমি নিজের খারাপ-ভাল দেখতেও পাই। আর সবাইকে সেটা দেখাতেও পারি! আমার কাছে ঢাকাঢাকির কোনও ব্যাপার নেই।
আরও পড়ুন-‘ভুল করে’ আলিয়ার বিয়ের কথা ফাঁস করে ফেললেন দীপিকা!
তাহলে বলুন তো, ভাস্বর আর আপনার সম্পর্ক এখন কোন পর্যায়ে?
দেখুন, আমরা খুব ভাল বন্ধু। রোজ পনেরো-কুড়ি মিনিট কথা বলা চাই।
বন্ধু মানে? আপনারা একসঙ্গে থাকেন না আর?
আপাতত আলাদা আছি। আমি আমার বাড়িতে, ভাস্বর ওর বাড়িতে।
কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির খবর, আপনাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে!
নাহ্, আমাদের ডিভোর্স হয়নি। আসলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। আমাদেরও একবার খুব ঝগড়া হল। ভাস্বর চুপচাপ হলে কি হবে, পয়েন্টে ঝগড়া করে। আমারও মাথা গরম। কোর্টে চলে গিয়ে দুম করে ডিভোর্স পেপার জমা দিলাম আমরা। খুব রাগ তখন দু’জনের! রাগ কমলে বুঝেছি কী করলাম! ভাস্বরও খুব স্বচ্ছ। ওকে বলি, এখন আমরা একসঙ্গে কথা বলি, বাইরে যাচ্ছি, লোকে দেখে তো বুঝবে আমাদের ডিভোর্স হয়নি। আর সব কিছু তো লোকের কথা ভেবে হবে না! একটাই তো জীবন! নিজেদের মতো থাকছি আমরা। দেখা যাক, পরবর্তীকালে ভাল কিছুই হবে আমাদের। আমরা তো ‘শেষ কথা’ বলে ছবিতে আবার কাজও করছি। ঝাড়গ্রামে শুট হবে। নতুন বছর নতুন সূর্যের কথা বলবে। এমনটাই ভাবি!