রানিমা হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন দিতিপ্রিয়া রায়
রানিমা হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন দিতিপ্রিয়া রায়। প্রায় ৪ বছরের অভ্যেস ছেড়ে বেরিয়ে আসা সোজা কথা নয়। শ্যুটিং শেষ হওয়ার আগেই বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিনেত্রী। মন খারাপ। দ্বিতীয় পরিবারকে ছেড়ে আসার বিরহ তাঁর মনে। পরবর্তীর পরিকল্পনা, ভাবনাচিন্তা— সব নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে আড্ডা দিলেন অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়।
সম্প্রতি কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন। তার পরে ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’-র শ্যুটিং করেছেন। সেটে কান্নাকাটিও হয়েছে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই লকডাউন। দেশে অতিমারির ঢেউ একটু শান্ত হতেই শেষ অধ্যায়ের শ্যুটিং করবেন তিনি।
দিতিপ্রিয়া জানালেন, ‘‘রানির বয়স হয়েছে। মৃত্যু তো অনিবার্য। সে কথা জানতাম। তাও মন খারাপ তো হবেই। আমার বড় হওয়ার সঙ্গী এই ধারাবাহিক।’’ ১৫ বছর বয়স থেকে প্রায় ১৯ বছর বয়স— বয়ঃসন্ধির গোটাটাই তাঁর কেটেছে ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়োয়। ধারাবাহিক এ বারে কোন দিকে গতি নেবে সেই নিয়ে কোনও ধারণা নেই অভিনেত্রীর। কিন্তু তাঁর জীবনের গতির কী পরিস্থিতি? কোন দিকে এগোনোর পরিকল্পনা তাঁর?
একটু চিন্তায় আছেন তিনি। ‘রানিমা’-র ভাবমূর্তি ভেঙে বেরিয়ে আসার রাস্তা সহজ নয়। ঠিক যে ভাবে ‘হ্যারি পটার’ না হওয়ার চেষ্টা করতে হয়েছিল ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফকে। সে ভাবেই তিনিও নির্দিষ্ট চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পরিশ্রম করবেন বলে বিশ্বাসী দিতিপ্রিয়া।
আপাতত ধারাবাহিকে ‘না’, বড় পর্দায় ‘হ্যাঁ’। নতুন মন্ত্র দিতিপ্রিয়ার? বড় পর্দায় কাজ করতে চান অভিনেত্রী। সে কথা আগেও বলেছিলেন আনন্দবাজার ডিজিটালকে। আগামী দিনে মোট ৬টি ছবি তাঁর হাতে। ৪টি মু্ক্তির অপেক্ষায়। দু’টি অতিমারি শেষের অপেক্ষায়। বাকি শ্যুটিং শেষ হবে দেশ সুস্থ হলে। কিন্তু ধারাবাহিক থেকে পরিচিতি পেয়েও ছোট পর্দায় ‘না’ কেন? অভিনেত্রী জানালেন, ‘‘ধারাবাহিকে কাজ করতে চাই না, তা নয়। নিশ্চয়ই করব। তবে এখনই না। তার ৩টি কারণ, প্রথমত, বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে নাড়াঘাটা করতে চাই। দ্বিতীয়ত, আমার বয়সের কাছাকাছি চরিত্র চাই। ধারাবাহিকে বয়স খুব দ্রুত গতিতে বেড়ে যায়। তৃতীয়ত, পড়াশোনা করতে চাই মন দিয়ে। ছবি করলেই সেটা সম্ভব বলে মনে হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, অভিনয় ছাড়া যদি আর কোনও পেশা তাঁকে গ্রহণ করতে হয়, তবে তা কেবল পড়াশোনা নির্ভর কোনও কাজ।
রানিমার চরিত্র করার সময়ে তিনি জানতেন না ৬০ বছরের বৃদ্ধার চরিত্র তাঁকেই করতে হবে। কেবল ‘রাসমণি’-র ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করবেন বলেই জানতেন। শেষে দর্শকের ভালবাসার ফলাফল গত ৪ বছরের যাত্রা। তবে একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘জীবনের কোনও ভরসা নেই। কোনও ভাল ধারাবাহিকের সুযোগ আসলে, অবশ্যই করব।’’
ধারাবাহিক করার সময়ে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অর্থ ঘরে আসত। সেটা আর আসবে না। কোথাও গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দিতিপ্রিয়া? অভিনেত্রীর স্পষ্ট উত্তর, ‘‘এত বছর কাজ করলাম। পরিকল্পনা করেই জীবন যাপন করেছি। তাই আপাতত সেটা নিয়ে একটুও চিন্তা নেই। আর আমি অভিনয় করতে এসেছিলাম অভিনয় করার জন্য। টাকা নিয়ে এখনই চিন্তা করলে হরেক রকম অভিজ্ঞতাই হবে না।’’
তবে টেলি-পাড়ার খবর, দিতিপ্রিয়াকে আরও একটি ধারাবাহিকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন তিনি। প্রশ্ন জাগে, ধারাবাহিক থেকে বিরতি নেওয়ার জন্যই রাজি হলেন না? নাকি চিত্রনাট্য ভাল লাগেনি তাঁর। সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি অভিনেত্রীর কাছ থেকে।