রুমা গুহঠাকুরতা। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।
রুমা গুহঠাকুরতা, আমার দিদি।
ওঁর বুদ্ধি, ব্যক্তিত্ব, রুচি, শিক্ষা দিয়ে নিজেকে যে ভাবে গড়েছিলেন তিনি, তা এক কথায় সে যুগে কোনও পুরুষ বা মহিলার মধ্যে সেই সময়ে আমি অন্তত দেখিনি।
কখনও বসতে দেখিনি ওঁকে। কিছু না কিছু করে চলেছেন। নিরন্তর এই গতিময়তা ওঁর কাজের ক্ষেত্রকে, গানের ক্ষেত্রকে সুদূর প্রসারিত করেছিল। ওঁর সৃষ্টি ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার’-এর মধ্যেই ওঁকে সবচেয়ে বেশি করে পাওয়া যায় বলে আমার মনে হয়।এই কথা বলতে বলতে মনে হচ্ছে, রুমা গুহঠাকুরতা চলে যাওয়া মানে একটা সময়ের চলে যাওয়া।
কে বলবে আর ওঁর কয়্যার গড়ার কথা? সুর নিয়ে স্বপ্ন দেখার কথা?কেমনই বা ছিল ওঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা? তখনকার সময়ের এক মহিলা গান না শিখে এরকম কয়্যার তৈরি করলেন? এ বোধহয় জন্মগত ক্ষমতা! কে শেখাল ওঁকে? এমন করে ‘বাজে করুণ সুরে’গাইতে?
আরও পড়ুন: ‘মানুষ হিসেবে অনেক বড় মাপের ছিলেন রুমা’
এরকম শক্ত গান অনায়াসে খালি গলায় গাইতে পারা! ভাবাই যায়না!
বাবার ‘অভিযান’আর ‘গণশত্রু’-তে অভিনয় করেছিলেন দিদি। গানের মতোই অনায়াস অভিনয়।
‘গণশত্রু’-র সময় বাবা তখন বেশ অসুস্থ। আমার মা আর দিদি বাবার খেয়াল রাখতেন সারাক্ষণ।
এই খেয়াল রাখার বিষয়টাও খুব অনায়াসে সামলাতে দেখেছি ওঁকে। অমিতের কাছে মুম্বইতে আছে। কিন্তু কলকাতায় সকলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখবেন তিনি। কে কী করছে? কোথায় আছে? কার কী দরকার? সব জানা চাই।
আরও পড়ুন: প্রয়াত রুমা গুহঠাকুরতা (১৯৩৪-২০১৯)
মায়ের সঙ্গে ভীষণ বন্ধুতা দেখেছি। ছোটবেলা থেকেই। যখন গানের বিষয়ে কিছু দরকার হত, চলে আসতেন মার কাছে। স্বরলিপি, গায়কী...
অনেক ভাললাগা সময়ের সাক্ষী আমরা দিদির সঙ্গে।আজ রাতে ওঁকে অন্যভাবে দেখতে হবে।
গানটা ঘুরছে সারাক্ষণ...বাজে করুণ সুরে...আজ ঘুরে ঘুরে আসছে!
(এই লেখাটি প্রথম প্রকাশের সময় প্রয়াত রুমা গুহঠাকুরতাকে সন্দীপ রায়ের দিদা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল কিন্তু রুমা গুহঠাকুরতা সম্পর্কে সন্দীপ রায়ের দিদি। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী )