এক টেবিলে অঞ্জন দত্ত, মিঠুন চক্রবর্তী, অঞ্জনা বসু। ছবি: পথিকৃৎ বসু।
২০২৫-এর ১০ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে পরিচালক পথিকৃৎ বসুর আগামী ছবি ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী’। ‘শাস্ত্রী’র পর আবার তিনি এবং মিঠুন চক্রবর্তী। বিপরীতে অঞ্জনা বসু। সমান্তরাল চরিত্রে অঞ্জন দত্ত। এই প্রথম মিঠুন-অঞ্জন দ্বৈরথ দেখবেন দর্শক। থাকছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, মধুমিতা সরকার, সত্যম ভট্টাচার্য, রোশনি ভট্টাচার্য-সহ এক ঝাঁক তারকা অভিনেতা। শুক্রবার ছবিমুক্তির তারিখ ঘোষণা করলেন পরিচালক।
‘মহাগুরু’ কি কোনও ভাবে পথিকৃতের অভ্যাস হয়ে উঠেছেন? ছবি প্রসঙ্গে প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
জুটিতে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং মধুমিতা সরকার। ছবি সংগৃহীত।
স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “হ্যাঁ পর পর দুটো ছবি। মিঠুনদা মানেই কেমন যেন ‘বাবা বাবা’ ব্যাপার। আরও একটা কারণ আছে। ওঁকে খুব কম প্রেমের ছবিতে অভিনয় করতে দেখেছি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছিল, যদি আমার ছবিতে ওঁকে সেই ভাবে দেখানো যায় কেমন হয়? কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, একটুও ভুল ভাবিনি।” পথিকৃৎ অবাক হয়ে দেখেছেন, টেনশনের চোটে সেটে সারা ক্ষণ অঞ্জন দাঁড়িয়ে থাকতেন! মিঠুনের শট দেখে পরের দৃশ্যে কী অভিনয় করবেন সেটা ঠিক করতেন, জানিয়েছেন তিনি। “মিঠুনদা এই বয়সেও প্রেমের দৃশ্যে যে কী করে ফেলতে পারেন, কেউ জানে না! ওই ভয়েই কাঁটা হয়ে থাকতেন অঞ্জনদা”, দাবি তাঁর।
মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে পরিচালক পথিকৃৎ বসু। ছবি: সংগৃহীত।
এই প্রজন্মের নাকি প্রেমে বিশ্বাস নেই। এই প্রজন্ম নাকি ভালবাসার জন্য অপেক্ষা করতে জানে না, অনেকের মতো এই উপলব্ধি পরিচালকেরও। সেই জায়গা থেকে পথিকৃৎ এমন গল্প বেছেছেন, সেখানে বিচ্ছেদ চেয়েও দম্পতি মিলনের আশায় বছরের পর বছর পরস্পরের জন্য ‘অপেক্ষা’ করেছেন। পরিচালকের কথায়, “ভালবাসায় যদি প্রতীক্ষা না থাকল তা হলে সেই সম্পর্কে প্রেম কই? এই অনুভূতি আবারও ফিরিয়ে আনতে হবে।”
জ্যোতিষে বিশ্বাস ফেরাতে গিয়ে ‘শাস্ত্রী’ বানিয়েছেন। ভালবাসা ফেরাতে চেয়ে ‘শ্রীমান ভার্সেস শ্রীমতী’। আগামী দিনে আর কী কী ফেরাতে চান?
একটু ভেবে পথিকৃৎ জানালেন, এর পরের ছবিটিও হয়তো তিনি ভালবাসা নিয়েই বানাবেন। কারণ, এই বিশেষ অনুভূতির অভাবে অনেক তুচ্ছ কারণে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। একের পর এক বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি, এই জন্য যাঁরা ভালবাসার ছবি বানান তিনি তাঁদের ছবি দেখতে বেশি পছন্দ করেন। ‘শাস্ত্রী’র মতোই দর্শক যদি আবারও মুখ ফেরান? এত পরিশ্রম, ছবিমুক্তির আনন্দের পাশাপাশি সেই ভয়ও কি কাঁটার মতো খচখচ করছে?
জুটিতে রোশনি, সত্যম ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
জবাবে ‘শাস্ত্রী’র ব্যর্থতার দায় কিছুটা স্বীকার করে নিয়েছেন পথিকৃৎ। বলেছেন, “আমরা বেশি প্রেক্ষাগৃহ পাইনি। যে ছবি বেশি প্রেক্ষাগৃহ পাবে সেই ছবি দেখতেই তো দর্শক দৌড়বে। আমি হলেও সেটাই করতাম।” পাশাপাশি, তিনি প্রচারের খামতির কথাও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আরও একটু প্রচারের দরকার ছিল।” যদিও পরিচালক আশাবাদী, “সবাই ভুল করতে করতেই শেখে। আমিও ভুল করেছি কিছু। আশা, আগামী ছবির ক্ষেত্রে একই ভুল করব না।”