শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
ষাটের দশকের শহর কলকাতা। বসের অপমান মেনে না নিতে পেরে চাকরিতে ইস্তফা দেয় বছর তিরিশের শ্যাম। ব্যস্ত শহরের এক কোণে মানুষটির একাকিত্বকে কেন্দ্র করেই তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণপোকা’ লিখেছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বহুল পঠিত উপন্যাসটির সিনেমার স্বত্ব নিয়েছেন পরিচালক পলাশ দে। এই ছবির ভাবনা নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন পরিচালক।
এর আগে পলাশ পরিচালিত ‘তরঙ্গ’ ও ‘অসুখওয়ালা’ ছবি দু’টি মুক্তি পেয়েছে। সম্প্রতি ‘ওস্তাদ’ ছবির সম্পাদনার কাজ তিনি শেষ করেছেন। ‘ঘুণপোকা’ নিয়ে ছবি তৈরি করতে চাইছেন কেন পলাশ? পরিচালক বললেন, ‘‘বাংলায় লেখা হলেও আন্তর্জাতিক স্তরের এই উপন্যাসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তার মধ্যে সমাজের অনেকগুলো মানুষের সফর রয়েছে, যার সঙ্গে আজও পাঠক নিজেদের মিল খুঁজে পান। জীবনকে উদ্যাপন করে, এ রকম একটা উপন্যাস নিয়ে ছবি তৈরি হওয়া প্রয়োজন বলেই আমার মনে হয়েছিল।’’
পলাশের মতে, বাংলা সাহিত্যে গল্পের অভাব নেই। তাই চাইলেই ভাল ছবি তৈরি করা যায়। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ, ‘‘অনেক সময়েই সেই গল্পগুলো নিয়ে প্রযোজকেরা ছবি করতে আগ্রহী হন না।’’ কথাপ্রসঙ্গে সাম্প্রতিক চর্চিত জাপানি ছবি ‘পারফেক্ট ডেজ়’ এবং ইরানের পরিচালক আজ়গর ফারহাদির ‘আ সেপারেশন’ ছবিটির উদাহরণ দিলেন পলাশ। তাঁর যুক্তি, ‘‘নগরজীবনে একাকিত্ব কিন্তু শীর্ষেন্দুর উপন্যাসেও রয়েছে। অথচ দর্শক হিসেবে আমরা বেশির ভাগ সময়েই বিদেশি ছবিকে প্রাধান্য দিই।’’
পলাশ জানালেন গত বছর তিনি ‘ঘুণপোকা’র স্বত্ব কিনেছেন। তার পর থেকে এই ছবি নিয়ে ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনি। পরিচালক বললেন, ‘‘বেশ কয়েকটি প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ে আমার কথা হয়েছে। তবে আমি ভাল প্রযোজক খুঁজছি।’’ নেপথ্যে একাধিক কারণ উল্লেখ করলেন পরিচালক। পলাশের মতে, ‘ঘুণপোকা’ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। তাই সেই উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি ছবির নির্মাণ থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে মুক্তির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ছবিটা কোনও তাড়াহুড়ো করে তৈরি করতে চাই না। সময় নিয়ে তৈরি করতে চাই।’’
ছবিটি তৈরি হলে সেখানে শ্যামের চরিত্রে কাকে ভাবছেন পলাশ? বললেন, ‘‘এক জন বাঙালি তারকা অভিনেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু যত ক্ষণ পর্যন্ত প্রযোজনা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি চূড়ান্ত হচ্ছে, তত ক্ষণ কিছুই বলতে পারব না।’’ পলাশ জানালেন, শুটিং থেকে ছবিমুক্তি পর্যন্ত যাবতীয় প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু ভাবে দায়িত্ব নেবেন, এমন কোনও প্রযোজক পেলেই তিনি ছবির কাজ শুরু করবেন।