Durga Puja 2024

বৈদ্যবাটির মণ্ডপে বেআইনি ভাবে বন্দি উট! ‘রচনাদিকে জানিয়েও ফল পাচ্ছি না’, অভিযোগ তথাগতের

তথাগতের আরও অভিযোগ, তিনি পুজোর সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই নাকি এই কাজ করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:১১
Share:

(বাঁ দিক থেকে) তথাগত মুখোপাধ্যায়, বন্দি উট, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

পশুর প্রতি অমানবিক বাংলা। বৈদ্যবাটির এক মণ্ডপে পুজোর বিষয়বস্তুকে জীবন্ত করতে একটি উটের গলায় শিকল পরিয়ে তাকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি চোখে পড়েছে পরিচালক-অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “পুজোর থিম জীবন্ত করতে এ ভাবে মণ্ডপের বাইরে একটা উটকে শিকল পরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখার আইন কোথায় রয়েছে?” তিনি বিষয়টি সাংসদ-অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনারও চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “হুগলি জেলার সাংসদ রচনাদি। ফোনে ওঁকে পাইনি। বাধ্য হয়ে মোবাইলে বার্তা লিখে পাঠাই। এখনও তাঁর থেকে সাড়া মেলেনি।” তথাগত যোগাযোগ করেছিলেন পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গেও। তাঁদের দাবি, পুলিশের অনুমতি নিয়েই নাকি তাঁরা উটটিকে মণ্ডপে রেখেছেন।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে বৈদ্যবাটির এক পুজো মণ্ডপে। সেখানকার নার্সারি রোডের ‘ঐক্যতান’-এর পুজোয় একটি উটকে মানুষের বিনোদনের জন্য শিকলে বেঁধে রেখে দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপের থিম হরপ্পা-মহেঞ্জোদড়ো। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়ে তথাগতের কটাক্ষ, “আমাদের রাজ্যের শিক্ষার মান অনুযায়ী উট বেঁধে প্রমাণ করতে হচ্ছে, এটা সেই যথার্থ থিম!” এখানেই শেষ নয়। অভিযোগকারী আরও জানিয়েছেন, উট কামড়ে দেয় বলে ওর মুখে মাজ়ল পরিয়ে রাখা হয়েছিল। যা আরও অমানবিক। সেই ছবি তিনি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেওয়ার পর উটের মুখ থেকে মাজ়লটি খুলে নেওয়া হয়।

কেন তথাগত বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন? তার কারণও তিনি জানিয়েছেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। তিনি বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের ২০১৫-র আদেশ অনুযায়ী উট গৃহপালিত পশু। বেআইনি পাচার বা কেনাবেচা রুখতে উটকে তাই রাজস্থানের বাইরে কোথাও উন্মুক্ত ভাবে রাখার নিয়ম নেই। দিন কয়েকের জন্য কোথাও ভাড়া নিয়ে যেতে হলে আইনি অনুমতির প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে অনুমতি নিতে হয়।” তাঁর দাবি, বিষয়টি জানিয়ে তিনি পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা পরিচালক-অভিনেতাকে জানান, তাঁরা ওড়িশা থেকে উটটি নিয়ে এসেছেন। প্রশাসন এ ভাবে মণ্ডপের বাইরে একটি প্রাণীকে বেঁধে রাখার অনুমতি দিয়েছেন! আনন্দবাজার অনলাইনও পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিল। তাঁদের তরফ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।

Advertisement

খবর, সমাজমাধ্যমে তথাগত ছবি-সহ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোয় নড়েচড়ে বসেছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁরা দিনে উটটিকে সরিয়ে রাখছেন। রাত নামলে তবে মণ্ডপের বাইরে রাখছেন তাকে। তথাগতের পোস্ট দেখে কলকাতায় পশুদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ছায়া’ বিষয়টি নিয়ে তৎপর। ‘পারিয়া’ ছবির পরিচালকের দাবি, সংস্থার তরফ থেকে ইতিমধ্যেই শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে হুগলির সাংসদ রচনার তরফ থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি একই সঙ্গে বিস্মিত এবং ব্যথিত। তথাগতের ক্ষোভ, “পথপশু সংক্রান্ত বিষয়ে যখনই কোনও বিধায়ক বা সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি। ব্যতিক্রম রচনাদি।”

তাঁর প্রশ্ন, “শহর কলকাতার ঘটনা নয় বলেই কি সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছেন না কেউ?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement