‘আদিপুরুষ’ ছবিতে রাবণের চরিত্রে সইফ আলি খান। ছবি: সংগৃহীত।
ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল জানুয়ারি মাসেই। কিন্তু প্রথম ট্রেলার দেখামাত্রই যা বিতর্ক শুরু হল, তাতেই প্রভাস-কৃতি শ্যানন-সইফ আলি খানের ‘আদিপুরুষ’-এর মুক্তি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নির্মাতারা। ট্রেলার নিয়ে আপত্তির মূল কারণ ছিল দু’টি। এক, সিজিআই-এর কাজ অতি নিম্নমানের বলে হাসির রোল ওঠে চারদিকে। দুই, রাবণরূপী সইফ আলি খানের চেহারা নিয়ে আপত্তি তোলে নানা রাজনৈতিক দল। তাঁদের বক্তব্য ছিল, রাবণের চেহারা এমন মুসলমান দস্যুর মতো কেন! অনেকেই সইফের সঙ্গে আবার আলাউদ্দিন খিলজির তুলনা টেনেছিলেন।
ট্রেলারের প্রতিক্রিয়া হেলাফেলা করেননি নির্মাতারা। তাঁরা সময় নিয়ে আবার নাকি প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ করে সিজিআই-এর কাজ আরও একটু ঘষামাজা করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সইফের লুক বদল হবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল দর্শকের মনে। প্রথম ট্রেলার নামিয়ে নেওয়ার অনেক পরে আরও কিছু ট্রেলার দেখা গিয়েছিল ছবিমুক্তির আগে। খুব সন্তর্পণে সেখানে রাবণের কোনও ঝলক দেখানো হয়নি। একমাত্র সীতাহরণের সময়ে সাধুরূপে রাবণকে দেখা গিয়েছিল পর্দায়। হয়তো নির্মাতারা আর বেশি বিতর্ক চাননি। হয়তো অভিনেতা নিজেও চাননি। তাই বাকি কলাকুশলী ছবির প্রচারে নানা জায়গায় গেলেও সইফকে কোথাও দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে রাবণের লুক নিয়ে আরও কৌতূহল তৈরি হয়েছিল সকলের মধ্যে।
সে সব কৌতূহল মিটল শুক্রবার। ১৬ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল ‘আদিপুরুষ’। শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সইফের চেহারা দেখা গেল বড় পর্দায়। কোনও রকম বদলই হয়নি তাঁর চেহারায়। সেই দাড়ি, সেই নীলচে চোখ এবং সেই সাজপোশাক। প্রথম ট্রেলারে যেমন দেখা গিয়েছিল, ঠিক তেমনই। রাবণ ঠিক কেমন দেখতে ছিলেন, সেটা সকলেই নিজের মতো কল্পনা করতে পারেন। কিন্তু লঙ্কা যদি সমুদ্রের ধারে হয়, সেখানকার আবহাওয়া তো গরমই হওয়ার কথা। তা হলে সেখানকার রাজা কেন ‘গেম অফ থ্রোন্স’-এর জন স্নো ধাঁচের পোশাক পরেন, তা ঠিক বোঝা গেল না। সিজিআই-এর কারসাজিতে রাবণের চেহারা আয়তনে অনেক বড় করে দেখানো হয়েছে। তবে কেন সইফ গোটা ছবি জুড়ে কিংকংয়ের মতো হাঁটলেন, সেটাও ঠিক বোঝা গেল না। যা-ই হোক, শুধু রাবণের সাজ নয়, রামায়ণের অনেক কিছুই যে হেতু বদলে ফেলেছেন নির্মাতারা, তাই আলাদা করে সইফের লুক নিয়ে আর সমালোচনা করার মানে হয় না। বিশেষ করে সেন্সরবোর্ড যখন ‘ইউ’ শংসাপত্র দিয়েই দিয়েছে।