লাইভে এসে দেব এবং শাশ্বত ছবি তৈরির নানা গল্প তুলে ধরেন।
পুজো-মুক্তির আগেই বড় ঘোষণা প্রযোজক দেব অধিকারীর। জানিয়েছেন, প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দর্শক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ দেখলে এর সিক্যুয়েল বানাবেন। মঙ্গলবার ছবির রাজামশাই ওরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে লাইভে এসেছিলেন সাংসদ-অভিনেতা। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ছবিটি কি রূপকথার মোড়কে বর্তমান রাজনীতির কথা বলবে? দেবের উত্তর, ‘‘হাস্যরস আর ব্যঙ্গ কৌতুক নিয়ে তৈরি ছবি অনেক সময়েই দ্ব্যর্থক হয়। তাই কেউ কোনও রাজনৈতিক গন্ধ পেলে জানবেন, পুরোটাই কাকতালীয়।’’
লাইভে এসে দেব এবং শাশ্বত ছবি তৈরির নানা গল্প তুলে ধরেন। দেব বলেন, ‘‘অনিকেতদা যখন চিত্রনাট্য শুনিয়েছিলে্ তখন হবুচন্দ্র রাজার চরিত্রে আমায় অভিনয়ের জন্য বলেছিলেন। কিন্তু গল্পে রাজার যেমন বর্ণনা, তার সঙ্গে আমায় মানাচ্ছিল না। তখনই আমি বলি, একমাত্র শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এই চরিত্রের জন্য উপযুক্ত। রাজার মন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয় খরাজ মুখোপাধ্যায়কে। ‘রানি’ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়।’’ দেবের কথায়, ‘রানি’ চরিত্রের জন্য একাধিক অভিনেত্রীর নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু সবার মনে হয়, শাশ্বতর বিপরীতে অর্পিতাকেই মানাবে। শাশ্বত জানান, ছোটবেলায় শোনা গল্পের চরিত্রে তিনি যে কোনও দিন অভিনয় করবেন ভাবতেও পারেননি। দেবের সৌজন্যে সেটাও সম্ভব হল। দেব এও জানান, ‘বুড়ো মন্ত্রী’ হিসেবে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় দর্শক বহু দিন মনে রাখবেন। আজ পর্যন্ত এই ধরনের চরিত্রে দেখা যায়নি তাঁকে।
২০১৯-এ যখন ছবির শ্যুটিং শুরু হয়, তখন লোকসভা নির্বাচন। সাংসদ দেবকে সেই সময় শাসক দলের হয়ে প্রচারে বেরোতে হয়েছিল। নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গে শ্যুটের ঝক্কি। কী করে সব সামলেছিলেন? দেবের দাবি, ‘‘ওই জন্যেই তো আমার চেনাজানাদের হাতে ছবির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলাম। যাতে নিশ্চিন্তে আমার কাজ করতে পারি। অনিকেতদা, খরাজদা, অপুদা (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) থেকে শুরু করে সেটের প্রায় সবার সঙ্গে আগে কাজ করেছি। আমায় তাই সে ভাবে দেখতেই হয়নি।’’ দেব এবং শাশ্বত দু’জনেই স্বীকার করেন, এর সঙ্গে বাড়তি পাওনা কবীর সুমনের সঙ্গীত পরিচালনা। এই ছবির অলঙ্কার এবং অহঙ্কার কবীর সুমন। যাঁর সুরে বাঁধা গান শ্রোতাদের পৌঁছে দেবে ‘ঠাকুর্দার থলে’তে বলা ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমীর আমলে। এ ছাড়া, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কবিতার ছন্দে বলা ছবির সংলাপ। প্রযোজক, মুখ্য অভিনেতার মতে, এটা সত্যিই বড় চাপ। এক ভাবে এই ধারা ধরে রাখার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।
আড্ডার শেষে জানতে চাওয়া হয়, বিশাল অর্থ ব্যয় করে ছোটদের জন্য এই রূপকথার ছবি বানিয়েছেন প্রযোজক দেব। সাহস করে এর সিক্যুয়েল বানাবেন? তখনই দেব বলেন, ‘‘আমার সাহস আপনারা, দর্শকেরা। আপনারা যদি প্রেক্ষাগৃহে এসে ছবিটি দেখেন, ভালবাসেন, তা হলে কথা দিচ্ছি, অবশ্যই 'হবুচন্দ্র রাজা'-র সিক্যুয়েল বানাব।’’ সঙ্গে সঙ্গে শাশ্বতর রসিকতা, ‘‘দেব তো ছবির প্রযোজক নয়! ও তো স্পট বয়। প্রযোজকেরা চেয়ারে বসে নির্দেশ দিয়েই খালাস। দেব সারাক্ষণ সেটে থাকত। নিজের হাতে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ করত। কোনও প্রযোজক এমন করেন?’’