স্নিগ্ধজিৎ, অঙ্কিতা, গৌরব এবং সুমন। ছবি: নিরুপম দত্ত।
গত ন’মাস ধরে যাঁদের সুরের মূর্ছনায় মুখরিত ছিল বাঙালির ড্রয়িং রুম, অগণিত দর্শকের সঙ্গে তাঁরাও দিন গুনছেন অন্তিম মুহূর্তের। জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘সা রে গা মা পা’-এ চূড়ান্ত পর্বে নির্বাচিত হয়েছেন সুমন মজুমদার, অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, প্রীতম রায়, স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক, গৌরব সরকার ও নোবেল। চ্যাম্পিয়ন কে হবেন? অকপট স্নিগ্ধজিৎ, ‘‘আমি সব সময়ে বড় স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নও দেখেছি।’’ গৌরবের কথায়, ‘‘জেতার জন্য এসেছি। নিজেকে শীর্ষে দেখতে ভালই লাগবে।’’ গৌরব, স্নিগ্ধজিতের ‘জিগরি দোস্ত’ প্রীতম বলছেন, ‘‘আমরা তিন জনে এক ঘরে থাকতাম। কথা দিয়েছিলাম, ফাইনালে তিন জনেই থাকব। সেই কথা রাখতে পেরেছি। এটাই সবচেয়ে বড় পাওনা।’’ ও পার বাংলার নোবেলের কাছে প্রথম-দ্বিতীয় হওয়া বড় কথা নয়। ‘‘দুই বাংলা মিলিয়ে কোটি কোটি মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। এর চেয়ে বেশি কী চাইব?’’ মন্তব্য তাঁর।
ফাইনাল যত এগিয়ে আসছে, একটু হলেও চাপ বাড়ছে প্রতিযোগীদের। শুটিংয়ের আগে তাঁদের গলাকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা। কিন্তু সে সুযোগ আর হচ্ছে কই? শোয়ের সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী সুমনের কথায়, ‘‘সকলেই রেওয়াজ করছি। ঘরে ঘরে ঢুঁ মারলেই অনেক কণ্ঠ শুনতে পাবেন।’’ সুমনের চেয়ে বয়সে একটু বড় অঙ্কিতা আবার বলছেন, ‘‘এত দিন ছোটদের আলাদা করেই রাখা হত। কিন্তু এখন দলে আমি একাই মেয়ে। চাইলেও আলাদা করে রাখা যাবে না।’’
গত ন’মাসে জীবন বদলে গিয়েছে এই শোয়ের প্রতিযোগীদের। লোকসঙ্গীতে দক্ষ সুমন যেমন শিখে গিয়েছেন হিন্দি গানের কলি। তাঁর উচ্চারণও আগের চেয়ে অনেক স্পষ্ট। আবার প্রীতমের বেস ছিল ক্লাসিক্যাল। এই শোয়ের সুবাদে তিনি শিখেছেন কমার্শিয়াল গানের পারফরম্যান্স। সেরা যে-ই হোক, সকলেই একবাক্যে মানছেন, এত দূর আসতে পারাই তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় পাওনা।
স্বপ্নবিলাসী স্নিগ্ধজিৎ বলছেন, ‘‘রাস্তায় বেরোলেই লোকে চিনবে, এটাই চেয়েছিলাম। ফাইনালে জিতি বা না জিতি, সেই স্বপ্ন ছোঁয়া হয়ে গিয়েছে।’’ গানের কঠিন তালিমের পাশাপাশি নিজের ও বাকিদের ওজন বাড়ানোর দায়িত্ব নিয়ম করে পালন করে গিয়েছেন শোয়ের ‘ফুড-অ্যাপ’ গৌরব। রাতবিরেতে তাঁরা দলবেঁধে ফুড অভিযানেও গিয়েছেন, যা ফাঁস করতে চাইলেন না তিনি।
হাসিকান্নার এই মধুর স্মৃতি শেষ দিনেও যেন তাঁদের বন্ধুত্বে চিড় না ধরায়, সেটাই বারে বারে বলছেন প্রতিযোগীরা।