করোনা তাঁর জীবনে অভিশাপের মতো এসেছিল, কিন্তু সেই করোনাই যে তাঁকে শীর্ষে নিয়ে আসবে, তা কি ভেবেছিলেন কণিকা কপূর?
দিনটা ২০ মার্চ। ইনস্টাগ্রামে নিজেই পোস্ট করে কণিকা জানিয়েছিলেন তিনি করোনায় আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসা চলছে। অনুরাগীরা প্রথমে সহানুভুতি জানালেও, পরে যখন জানাজানি হয় মার্চের শুরুতে কোয়রান্টিন থাকার পরিবর্তে তিনি পার্টি করে বেরিয়েছেন! তখনই শুরু হয় ব্যাকল্যাশ।
ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামে জমা হতে থাকে সমালোচনার পাহাড়। কণিকা কপূরের নাম যাঁরা এর আগে কোনও দিন শোনেনইনি, তাঁদের কাছেও কৌতূহলের কারণ হয়ে দাঁড়ান ‘বেবি ডল’ সিঙ্গার।
আর তাতেই দীপিকা-ক্যাটরিনা-প্রিয়ঙ্কাকে পিছনে ফেলে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মোস্ট সার্চড বলি সেলেবের (ফিমেল) লিস্টে মার্চের ২০ তারিখ থেকে মার্চের ৩১ তারিখ পর্যন্ত রীতিমতো রাজ করেছেন কণিকা। এ দেশে ফিমেল বলিউড পারফরমারদের মধ্যে মানুষ সবচেয়ে বেশি বার খুঁজেছেন তাঁকেই।
গুগলের হিসেব বলছে, ২০ মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত কণিকা সম্পর্কিত দৈনিক সার্চের গড় সূচক ৮.৮৮। দীপিকা এবং প্রিয়ঙ্কার ক্ষেত্রে যা অনেকখানি কম। প্রিয়ঙ্কার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ৪.৭১ এবং দীপিকার ক্ষেত্রে তা ৩.২৯।
কিন্তু ২০ মার্চের আগে দীপিকা-প্রিয়ঙ্কাকে টক্কর দেওয়া তো দূর, কাছাকাছিও ছিলেন না কণিকা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আর এক সার্চ ইঞ্জিন ‘ইয়াহু’-তেও চিত্রটা একই রকম। মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের শুরুতেই সেই সার্চ ইঞ্জিনেও দীপিকা-প্রিয়ঙ্কাকে সরিয়ে রেখে মানুষ খুঁজেছেন কণিকাকে। সার্চ ইঞ্জিনে কোনও দিন প্রথম সারিতে না থাকা কণিকা উঠে এসেছেন এক্কেবারে পয়লা নম্বরে।
২০ মার্চ, যে দিন কণিকার করোনা সংক্রমণের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে সে দিন থেকেই এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত ইয়াহু লিস্টে এক নম্বরে (মোস্ট সার্চড ফিমেল বলি সেলেব) থাকা প্রিয়ঙ্কা চোপড়াকেও সরিয়ে দিয়ে ‘প্রথম’ হন কণিকা।
দ্বিতীয় স্থানে প্রিয়ঙ্কা। তৃতীয় দিশা পাটানি। চতুর্থ স্থানে দীপিকা পাড়ুকোন এবং পঞ্চম স্থানে সারা আলি খান। ক্যাটরিনা কইফ কিন্তু টপ ফাইভের বাইরে চলে গিয়ে রয়েছেন ষষ্ঠ স্থানে।
কণিকা সেরে উঠেছেন। বাড়িও ফিরে গিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা উৎসাহতেও গত কয়েক দিনে ভাটা পড়েছে। সার্চের সংখ্যাও কমছে ক্রমশ।
তবে করোনা সংক্রমণ যে হঠাৎ করেই তাঁকে এতটা জনপ্রিয় করে তুলবে তা হয়তো তিনি নিজেও ধারণা করতে পারেননি কণিকা। অনেকেই মনে করেন, “এনিকাইন্ড অব পাবলিসিটি ইজ গুড পাবলিসিটি”— নেতিবাচক বা ইতিবাচক যাই হোক না কেন, দিনের শেষে একজন সেলেবের ক্ষেত্রে প্রচারটাই নাকি আসল।
তবে তাঁর বিরুদ্ধে ক্রমাগত নেগেটিভ প্রচারে খুশি নন কণিকা। সুস্থ হয়ে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লেখেন, “আমার বিরুদ্ধে অনেক গল্প বানানো হয়েছে। চুপ ছিলাম বলে তা সত্যি মনে করে নেওয়া হয়েছে। চুপ ছিলাম মানে এই না যে আমি ভুল ছিলাম, সত্যি যাতে ঠিক সময়ে প্রকাশ হতে পারে সে প্রতীক্ষাতেই ছিলাম আমি। কারও সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য ছড়ানো মানেই তা সত্যি বদলে দিতে পারে না।