যিশু-টোটা-পাওলি-দীপিকা-বরুণ
করোনার দিনগুলিতে পরিস্থিতি শুধু অস্থির নয়, সেলেব থেকে সাধারণ মানুষ… গৃহবন্দি প্রায় সকলেই। যে তারকারা এক সময়ে সামান্য ফুরসত পাওয়ার সময় পেতেন না, তাঁরা এখন ঘরের কাজ করছেন। কিন্তু শারীরচর্চা? করোনার কারণে জিম বন্ধ, এমনকি জগিং করার সুযোগ নেই। তা হলে কি নিয়মিত ফিটনেস রেজিমও বন্ধ? না কি এর মাঝেও চলছে নিজেকে ফিট রাখার প্রয়াস?
ফিট থাকাই যখন মন্ত্র
এমন অনেক তারকা আছেন, যাঁরা কোনও পরিস্থিতিতেই শারীরচর্চা বন্ধ রাখেন না। যেমন টোটা রায়চৌধুরী। টোটা বললেন, ‘‘আমার কাছে এটা বেস্ট টাইম, ডিসিপ্লিনের সেরা সময়। হাতে কাজ থাকলে, নিজেকে শেপে রাখার আলাদা তাড়না থাকে। এই অনিশ্চয়তার সময়ে হয়তো অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু এ সময়টাকে যদি না ধরে রাখি, তা হলে পরে যখন কাজ শুরু হবে, তখন ফেরত যেতে অনেকটা সময় লাগবে।’’ অবসরকে কাজে লাগানোয় বিশ্বাসী নায়িকা প্রিয়ঙ্কা সরকারও। বলছেন, ‘‘যাঁরা অ্যাক্টিভ ছিলেন না, তাঁদেরও সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত।’’
জিম থাক বা না থাক
জিমে যেতে না পারলেও বাড়িকেই সম্বল করছেন সিনে পর্দার তারকারা। অভিনেত্রী পাওলি দাম যেমন বলছেন, ‘‘দু’-এক দিন জিম বন্ধ করে থাকতে পারি। কিন্তু তার বেশি হলে অস্বস্তি হয়। বাড়িতে বেসিক ইকুইপমেন্টস আছে আমার, যেগুলো আউটডোরে নিয়ে যাই। তাই দিয়েই কাজ চালাচ্ছি এখন।’’ আলাদা বডি পার্টের জন্য আলাদা কসরত করছেন পাওলি। সঙ্গে কোর ওয়র্কআউট আর কার্ডিয়ো বলতে হাই নি, জাম্প স্কোয়াট, বার্পিস। সকালটা ব্যায়াম করেই কেটে যাচ্ছে তাঁর।
আবার টোটা এমনিতে জিমে যাওয়ার পক্ষপাতী নন। বাইরে দৌড়ন নিয়মিত। তবে এখন তা বন্ধ রেখেছেন। তবে ফ্রি-হ্যান্ড, যোগাসন চলছেই। প্রিয়ঙ্কা জোর দিচ্ছেন বেসিক কার্ডিয়ো, স্কিপিংয়ে। নায়িকা বললেন, ‘‘ফ্রি-হ্যান্ড, যোগব্যায়াম, স্ট্রেচিং তো আছেই। আবার মিউজ়িক চালিয়ে নাচানাচিও ভাল ওয়র্কআউট। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে, তাদেরও ইনভলভ করুন। আমিও করছি। সহজ হয়তো ১০টা স্কিপও পারে না, কিন্তু আমাকে দেখে চেষ্টা তো করছে।’’
অঙ্কুশের বাড়িতেই রয়েছে জিম। বললেন, ‘‘ওয়র্কআউট নিয়ে অসুবিধে নেই। কারণ বাড়িতে একটা ঘরে জিমের পুরো সেট-আপ বানানো আছে। ফলে ওয়র্কআউট চলছেই। লকডাউনের আগেই আমি একটা লম্বা ট্রান্সফর্মেশনের মধ্যে ছিলাম। তাই চাপ তেমন হচ্ছে না। তবে সামান্য ওজন বাড়বেই। বাড়ির জিম যতই থাকুক, বাকি যা হাঁটাচলা বা সারা দিনের কাজে ক্যালরি বার্ন হত, সেটা তো হবে না।’’ ঘাম ঝরাচ্ছেন যিশু সেনগুপ্ত, অরুণিমা ঘোষও। ছবি দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বলিউডের অন্দরে
বলিউডের তারকারাও বাড়িতে ফিটনেস ট্রেনিংয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন। করিনা কপূর পোস্ট করছেন ফিটনেস পরবর্তী পাউটের ছবি। দীপিকা পাড়ুকোনের ক্লান্ত ছবির ক্যাপশনে লেখা, ‘ওয়ান টু... চা চা চা...’ আবার সারা আলি খান যেমন পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখিয়েছেন বার্পিস, মাউন্টেন ক্লাইম্বিং, রিভার্স লাঞ্জ, জাম্পিং জ্যাক। শিল্পা শেট্টি শুধু যোগব্যায়ামই করছেন না, বাড়ির ছোটদের সঙ্গে নিয়ে ওয়র্কআউট করার কথাও বলছেন। বরুণ ধওয়ন আবার মজার ছলে সিক্স প্যাক অ্যাবের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘এ ছবি তখনকার, যখন জিমে যেতাম। এখন তো শুধু ঘরেই থাকি।’ তবে সকলের চেয়ে এগিয়ে মিলিন্দ সোমন। অসংখ্য বার সিঁড়ি ভাঙছেন তিনি। লিখেছেন, সিঁড়ি ভেঙেই ফিট থাকছেন তাঁর মা এবং স্ত্রী।
ডায়েটেও লাগাম
পাওলি বললেন, ‘‘বাড়িতে থাকলেই ভাল ভাল রান্না করে খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। আমি রান্না করতে ভালবাসলেও খুব সাদামাঠা রেসিপিই করছি এখন। কারণ সীমিত রসদেই সকলকে চালিয়ে নিতে হবে।’’ একই বক্তব্য অঙ্কুশেরও। নায়ক বলছেন, ‘‘লাক্সারির সময় এটা নয়। তাই হালকা ডাল-ভাত খাচ্ছি। সন্ধেবেলা হয়তো একটা রুটি বা দুটো ডিম খাচ্ছি। ৬-৭ বার খেতাম, সেটা কমিয়েছি।’’ দীপিকা পাড়ুকোন ফ্রেশ জুস, বেশি করে ফল খেতে বলছেন এই সময়ে।
মনোবলই শেষ কথা
নিজেকে ফিট রাখার জন্য জিম বা ডায়েটে লাগাম তো রয়েছেই, তার আগেও জরুরি সংযম আর মনোবল। টোটা বলছেন, ‘‘খাওয়াদাওয়া বরাবরই মেপে করি। বাড়িতে আছি বলেই এক টুকরো চকলেট খেলাম বা রান্নায় সামান্য বেশি তেল পড়ল, এমনটা আমার ক্ষেত্রে একেবারে চলে না। বরং এখন আমার নিজের কাছেই পরীক্ষা। দেখতে চাই, কী ভাবে বজায় রাখতে পারি মানসিক দৃঢ়তা।’’
পর্দার বাইরে থেকেও তাই তারকাদের চলছে সংযমের পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা যে তাঁরা খুব আগ্রহের সঙ্গেই দিচ্ছেন, তা তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া দেখলেই স্পষ্ট।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।