—ফাইল চিত্র।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে মাদক যোগ উঠে এসেছে। কিন্তু ছেলের অ্যাকাউন্ট থেকে যে ১৫ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন অভিনেতার বাবা, এখনও পর্যন্ত তার কিনারা করতে পারেননি তদন্তকারীরা। কিন্তু সুশান্তের অ্যাকাউন্টে ওই ১৫ কোটি টাকা জমা নাও পড়ে থাকতে পারে, এমন তথ্য এ বার সামনে এল। যে ছবির পারিশ্রমিক বাবদ ওই টাকা পাওয়ার কথা ছিল সুশান্তের, লকডাউনের জেরে সেই ছবির প্রযোজকের সঙ্গে চুক্তি আটকে যায়। তাই সুশান্তের অ্যাকাউন্টে টাকাও জমা দেওয়া হয়নি বলে ছবির পরিচালক নিজে তাদের জানিয়েছেন, এ বার এমনটাই দাবি করল একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম। ওই পরিচালকের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা গোপন ক্যামেরায় রেকর্ডিং করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
ছেলের মৃত্যুর জন্য অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে ইতিমধ্যেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বাবা। রিয়া তাঁর ছেলেকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন এবং টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। সুশান্তের অ্যাকাউন্টে যে ১৫ কোটি টাকার হদিশ মিলছে না, তার জন্যও রিয়ার দিকেই আঙুল তুলেছে তাঁদের গোটা পরিবার। যদিও প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন রিয়া। সুশান্তের মৃত্যুর পর একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, রুমি জাফরির পরিচালনায় একটি ছবিতে কাজ করার কথা ছিল সুশান্তের।
রিয়া জানান, ওই ছবিতে সুশান্তের সাইনিং অ্যামাউন্ট ঠিক হয়েছিল ১৫ কোটি টাকা। তা নিয়ে প্রযোজক বাসু ভাগনানির সঙ্গে পাকা কথাও হয়ে গিয়েছিল। শুটিং শুরুর কথা ছিল মে মাস থেকে। কিন্তু লকডাউনের জেরে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়ে ওঠেনি। তার জেরে ওই টাকাও জমা পড়েনি সুশান্তের অ্যাকাউন্টে। এ নিয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে রুমি জাফরির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হয়। সুশান্তের মৃত্যুতে তাঁকেও ইতিমধ্যে জেরা করেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। ওই সংবাদমাধ্যমকে রুমি সাফ জানান, সুশান্ত এবং রিয়াকে নিয়ে ছবি করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু লকডাউনের জেরে কোনও চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন:
রুমির কথায়, ‘‘এক সঙ্গে ছবি করার কথা ছিল আমাদের। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম সারির তারকাদেরই ১৫ কোটি টাকা দিতে পারেন না প্রযোজকরা। সাইনিং অ্যামাউন্ট তো পরের কথা। পুরো পারিশ্রমিক হিসেবে ১৫ কোটি টাকা দিতেও কালঘাম ছুটে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তো কোনও চুক্তিই স্বাক্ষরিত হয়নি। সে ক্ষেত্রে টাকার কথা আসছে কোত্থেকে? ওঁর কপাল খারাপ ছিল যে, ওই সময়ই লকডাউনের ঘোষণা হয়।’’
রুমি আরও বলেন, ‘‘আপনি পরিচালক হোন বা নায়ক অথবা নায়িকা, সবার আগে টাকার অঙ্কে একমত হতে হয় সকলকে। তবে, একসঙ্গে পুরো টাকা কখনই দেওয়া হয় না। বরং কিস্তিতে কিস্তিতে তা মেটানো হয়। ধরুন আমার সঙ্গে কারও ১০০ টাকার চুক্তি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সাইনিং অ্যামাউন্ট হিসেবে প্রথমে ওই ১০০ টাকার ৫ শতাংশ দেওয়া হবে আমাকে। দরাদরি করে বড় জোর তা ১০ শতাংশ করার চেষ্টা করতে পারি আমি। ছবির প্রোডাকশনের কাজ শুরু হওয়ার আগে বাকি ৫ শতাংশ দেওয়া হবে আমাকে। তার পর শুটিংয়ের প্রথম, দ্বিতীয় শেডিউল, ডাবিং এবং ছবির মুক্তির আগে ধাপে ধাপে বাকি টাকাটা দেওয়া হয়।’’
আরও পড়ুন:
সুশান্তের অ্যাকাউন্টে বিগত কয়েক মাসে কত লেনদেন হয়েছিল, তা নিয়ে এই মুহূর্তে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাদের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।