Chanchal Chowdhury

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, ‘দেশবাসী’র নিশানায় চঞ্চল চৌধুরী, কোন পদক্ষেপ অভিনেতার?

দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়ে পোস্ট দেন অভিনেতা। তাতেই যেন দেশাবাসীর রোষানলের মুখে চঞ্চল চৌধুরী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৫২
Share:

বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করে কেন সমাজমাধ্যমের নিশানায় চঞ্চল? ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশে জুলাই থেকে অগস্ট মাসের মধ্যে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক পরিবর্তন যেমন ঘটেছে, তেমনই সামজিক বদলও চোখে পড়ার মতো। আর এই পরিবর্তনে যেন বার বার সমাজমাধ্যমে নেটাগরিকদের নিশানায় পড়তে হয়েছে তারকাদের। শুধু বাংলাদেশ নয়, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ডে যেই না সরব হয়েছেন তারকারা, এক শ্রেণীর মানুষের রোষানলে পড়েছেন বিনোদন জগতের খ্যাতনামীরা। তেমনটাই হচ্ছে বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে। এই মুহূর্তে ভারী ব়ৃষ্টির ফলে প্লাবিত বাংলাদেশ। বন্যা পরিস্থিতি দেশে। ভিটেমাটি, মাথার ছাদ চলে গিয়েছে জলের তলায়। দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়ে সমাজমাধ্যমেই লেখেন অভিনেতা। তাতেই যেন দেশাবাসীর একাংশের কটাক্ষের মুখে চঞ্চল।

Advertisement

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন চলেছে, সেই সময় অভিনেতা ছিলেন আমেরিকায়। এ পার বাংলার শিল্পীদের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যান তিনি। দেশে আন্দোলনের খবর শুনতে পান, আন্দোলনকে ঘিরে হতাহতের ঘটনার খবর পৌঁছয় তাঁর কাছে। ১৭ জুলাই সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘সমাধানের অন্য কোনো পথ কি খোলা ছিল না? গুলি কেন করতে হলো? বুকের রক্ত না ঝরিয়ে সুষ্ঠু সমাধান করা যেত না? যা ঘটে গেল, এটা যেমন মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়, বিষয়টা তেমনি হৃদয়বিদারক, মর্মান্তিক ও সভ্যতাবহির্ভূত।” (সমাজমাধ্যমে সেই ব্যক্তির লেখা অপরিবর্তিত রাখা হল)

বাংলাদেশে মাত্র ২৩ দিনের ব্যবধানে ছাত্র আন্দোলন গণ আন্দোলনে পরিণত হয়, আর তার ফলে শেষে দেশ ছাড়তে হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তার পর ৮ অগস্ট, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গড়া হয় সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সময় অভিনেতা জানিয়েছিলেন, মানসিক ভাবে তিনি বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন। কারণ তাঁকে নিয়ে পত্রপত্রিকা ও সমাজমাধ্যমে বেশ কিছু লেখালিখি হয়, যা সত্য নয় বলেই অভিনেতার দাবি। যদিও সেই সময় অভিনেতার মা অসুস্থ থাকায় দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি নীরব ছিলেন। কিন্তু তার পর থেকেই নিজের দেশের একটা অংশের মানুষের কাছে নিন্দিত হতে শুরু করেন চঞ্চল।

Advertisement

এ বার বাংলাদেশে নয়া বিপদ। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সকলকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করছেন সে দেশের তারকারা। এ বার বানভাসিদের নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন অভিনেতা, “আসুন, আমরা সবাই বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াই।” আর তাতেই যেন অভিনেতার উপর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁর সহ-নাগরিকেরা। কঠিন ভাষায় আক্রমণ করেছেন তাঁকে। কিছু ক্ষেত্রে তা আবার শালীনতার মাত্রাও ছাড়িয়েছে। অভিনেতার পোস্টে প্রায় ১১,০০০ হাসির প্রতিক্রিয়া পড়েছে। মন্তব্য বাক্সে কেউ লিখেছেন, ‘‘আপনাকে পাশে দাঁড়াতে হবে না। আমরাই যথেষ্ট। গুলি খাইতেছিলাম, তখন তো পাশে দাঁড়ানোর কথা মনে ছিল না, এখন আসছে মায়াকান্না দেখাতে।” কেউ কেউ আবার তাঁকে ‘দালাল’, ‘সুবিধাবাদী’ সহ নানা কথা বলেছেন। শেষমেশ অভিনেতা নিজের সর্বশেষ পোস্টটিতে মন্তব্য বাক্স বন্ধ করে রেখেছেন। সম্প্রতি ভারতে তাঁর ছবি ‘পদাতিক’মুক্তি পেয়েছে। তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। একটা সময় চঞ্চল চৌধুরীর প্রতিভা, অভিনয় নিয়েও দরাজ প্রশংসা করেছে সে দেশের শিল্পী মহল। এই মুহূর্তে তাঁকে নিয়ে যে ভাবে কটাক্ষ করা হচ্ছে, তাতে এখনও পর্যন্ত সে দেশের অন্য কোনও শিল্পী এগিয়ে এসে সহ-শিল্পীর পাশে দাঁড়াননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement