মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রথম থেকেই সরব তিনি। “আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সরাসরি স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করে দিন”, কটাক্ষ করলেন অভিনেতা মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দীপ ঘোষের নিন্দা করে মৈনাক বলেন, “তিনি তো মহান মানুষ! অবশ্য মানুষ শব্দটা এখানে প্রযোজ্য কি না বলতে পারব না। কোন ভাষায় এই ব্যক্তির নিন্দা করব বুঝে উঠতে পারছি না। এই লোকটাকে নিয়ে সিবিআই কী ভাবছে তা-ও বোঝা যাচ্ছে না। প্রতি দিন সিবিআইয়ের দফতরে যাচ্ছে আর আসছে।”
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ১৪ অগস্ট ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচিতেও যোগ দিয়েছিলেন মৈনাক। আনন্দবাজার অনলাইনকে মৈনাক বলেন, “এর চেয়ে খারাপ কিছু আর ঘটতে পারে না। কর্মরত অবস্থায় এক চিকিৎসকের এই ভয়ানক পরিণতি হচ্ছে। ১৪ তারিখের প্রতিবাদে আমি ও আমার স্ত্রী ছিলাম। সেখান থেকেই আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের খবর পাই।” তবে এ সবের মধ্যেই একটি বিষয়ে তিনি অভিভূত। তাঁর কথায়, “প্রতি দিন প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামছেন মানুষ। মানুষের একটাই দাবি, এই ঘটনার বিচার চাই। এর জন্য সাধারণ মানুষকে আমি সেলাম জানাই। যদিও এই প্রতিবাদ মিছিল নিয়েও নানা বিতর্ক হয়েছে— রাজনৈতিক না কি অরাজনৈতিক। মেয়েদের মিছিলে ছেলেরা কেন? একটা কথাই বলব, এই বিতর্ক তৈরি করে আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্যটাকে নষ্ট করবেন না। মানুষের মনের আগুনটা যেন নিভে না যায়।”
৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় চিকিৎসকের দেহ। তার পর কেটে গিয়েছে দুই সপ্তাহ। প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠছিল, এই ঘটনার সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই প্রসঙ্গে মৈনাক বলেন, “প্রথম থেকেই নানা গাফিলতি রয়েছে। কেন এই মৃত্যুকে প্রথমেই আত্মহত্যা বলে দেওয়া হল? দ্বিতীয়ত, দেহ উদ্ধারের এতটা সময় পরে কেন অভিযোগ দায়ের করা হল? হাসপাতালের চিকিৎকদের তো সহজেই বোঝার কথা, চিকিৎসক অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন, না কি মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল তাঁকে।”
কটাক্ষের সুরে মৈনাক বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বলেছেন, ৩০ বছরের কর্মজীবনে তিনি এমন ঘটনা দেখেননি। সত্যিই উন্নতি করেছে তো বাংলা। এটাই বাংলার উন্নয়ন।”এই ঘটনায় আরও একটি পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন মৈনাক। তাঁর কথায়, “কিছু ঘটলে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইট করেন। অবাক লাগছে, এ ক্ষেত্রে তাঁদের পক্ষ থেকে কোনও টুইট এখনও দেখতে পেলাম না।”
আরজি করের তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো দিন। মৈনাকের কথায়, “জানি, তদন্তে সময় লাগে। তবে এ বার সিবিআইয়ের কাছেও প্রশ্ন, তদন্ত কত দূর এগোল? যদিও শেষ পর্যন্ত আমাদের সিবিআইয়ের উপরই ভরসা রাখতে হবে।”