‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ টিম। ছবি: সংগৃহীত
নতুন ছবিতেও তো সোনাদা, আবির আর ঝিনুক। নতুন কী থাকছে?
(আবির বলতে যাবে তার আগেই ইশা বলে ওঠে)
ইশা: আসলে এ বার আমার আর ছবির চরিত্র আবিরের কেমিস্ট্রিটা পরিণত হয়েছে। আর ফ্লোরে আবিরদার সঙ্গে অভিনয় করা সত্যি অভিজ্ঞতা। স্টার ভাবে না নিজেকে। এক্কেবারে আমাদের প্রিয় সোনাদা। তবে আমাকে সবাই মিলে ঠাট্টা করেছে। দেখুন এখন কেমন তাকিয়ে আছে!
আবির: যাহ বাবা! আমরা তো তোর কথাই শুনছি। তাহলে উঠে যাই। সত্যি বলতে সুবিধে হবে।
আরও পড়ুন: ঋষি কপূর, আমির-প্রসেনজিৎদের নায়িকা বলিউডের এই ডাকসাইটে সুন্দরী এখন কী করছেন?
অর্জুন: আরে তুমি কি উঠবে। ইশা তো পুরো কথা শেষ করতে পারে না। বলবে 'এই শোন আমি কিন্তু...' এ বার গ্যাপ ভরাও।
আবির: উফফ! ঝিনুক শান্ত হও!না ছবির প্রসঙ্গে আসি। 'গুপ্তধনের সন্ধানে' ছবিতে মণিকান্তপুরের জমিদারবাড়ি থেকে শাহ সুজার বাদশাহি গুপ্তধন উদ্ধার করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সোনাদা, ঝিনুক ও আবির। আবারও নতুন গুপ্তধনের সন্ধান করতে তৈরি সোনাদা। এবার গন্তব্য দুর্গেশগড়। খুব হৈ হৈ করে ছবিটা করা। আর ছবিতেও একটা হই হই ব্যাপার আছে। ইদানিং প্রচুর বাংলা ছবি হচ্ছে কিন্তু এই হই হই টা আমি ছবিতে মিস করি।
মানে? পারিবারিক ছবিতে হই হই নেই?
আবির: কটা পারিবারিক ছবি হচ্ছে? যেগুলো হয় তাতে ছোটরা থাকলেও বিষয়টা বড়দের।আবার উল্টো হয়। ছবিতে সবাই বড় বিষয়বস্তু ছোট বড় সকলের জন্য। সোনাদার ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্ষেত্রে বলা যায় এটা সকলের ছবি। এ বার সোনাদার সঙ্গে আবির ঝিনুকের দূরত্ব কমছে। সোনাদা আগের ছবিতে আবির ঝিনুকের ঠাট্টা করত এ বার আবির ঝিনুক ও সোনাদাকে নিয়ে ঠাট্টা করছে।
শুটিংয়ের সময় আবির, ইশা, অর্জুন, কমলেশ্বর। ছবি: সংগৃহীত
ধ্রুব: এই ছবি সারা পৃথিবীর বাঙালিকে এক জায়গায় আনবে। গুপ্তধন খোঁজার রাস্তা মানেই তো শিকড়, সংস্কৃতি, ইতিহাসের রাস্তায় নামা। এই ছবি সেই কাজটাই করেছে।
অর্জুন: খুব সুন্দর ভাবে দুই প্রজন্মকে মিলিয়েছে এই ছবি। আমার একটা সংলাপ আছে যেমন আমাকে বলা হচ্ছে সোনা চরিত্র আমার কাকা হয়। তো সেই প্রসঙ্গে আমি বলছি আগে ও সব কাকা, জ্যাঠা ও ভাবে বলা হতো এখন সবাই দাদা। এই ভাবে কাল আর আজ মিলে যাচ্ছে ছবিতে।
আরও পড়ুন: টাইগার নাকি টাইগার নন, জ্যাকি পুত্রের আসল নাম…
আবির: এ বারের ছবিতে দুর্গা পুজো আছে। খাওয়া দাওয়ার মধ্যে ক্লু আছে।
ধ্রুব: বাঙালিয়ানার উত্তরাধিকারের খোঁজ। রেখে যাওয়া বাঙালিয়ানা। সোনাদা প্রত্যেক পরিবারের সোনার বাঙালি ছেলে। তার কাছে আবদার করা যায়। সে প্রফেসর।
ছবি করার সময় চুটিয়ে মজা করেছেন ত্রয়ী। ছবি: সংগৃহীত
তাহলে সে গোয়েন্দা নয়?
ধ্রুব: নাহ। সে খুঁজতে যাওয়ার জন্য বেরোয় না। ঘটনাচক্রে এসে যায় অনুসন্ধানের জায়গা। আবির যেমন বাঙালি পরিবারের ছেলে। একটু ফাঁকিবাজ।অথচ কাপুরুষ নয়। প্রত্যেক বাঙালি পরিবারে ঝিনুক আছে। বুদ্ধিমতী। উচ্ছ্বল। ফলে অ্যাডভেঞ্চারের গল্প হলেও খুব দূরে তারা যায় না। পরিবারের মধ্যেই তো গুপ্তধন আছে। আর বাংলার ভৌগোলিক সীমা সোনাদা কোনোদিন পেরবে না।
আবির: আহা রে! ঝিনুকের মুখটা শুকিয়ে যাচ্ছে। ও তো প্রচণ্ড ভাবে সোনাদার বিদেশে যোগাযোগে আগ্রহী।পারলে ধ্রুবকে দিয়ে কোহিনূর আনার গল্প লিখিয়ে নেয়! বেচারি!
ইশা: আবার সব ছেড়ে তুমি আমায় নিয়ে পড়লে! তবে বাইরে আমরা যেতেই পারি। সোনাদার ইউকে কানেকশন!
সব ছবিকে জনপ্রিয় হতে গেলে চেনা গল্পের মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। দর্শক নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মধ্যেই ছবির পূর্ণতা?
ধ্রুব: বাড়ির তিনটে ছেলে মেয়ে গুপ্তধনের সন্ধানে যাচ্ছে এটা দেখা, চেনা বা দর্শকের সঙ্গে মেলে না কিন্তু। আমার মনে হয় গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতায় দর্শক তাকে নিজের করে নেয়। সিনেমা তো গল্প। আমি যে কারণে বলি আমি প্রফেশনাল স্টোরি টেলার।
আবির: লোকাল আসলে গ্লোবাল। যে গল্প চিনি। বা যে গল্প জানি না সেই কানেক্ট দরকার। গুপ্তধন দেখার পর লোকে জানতে চেয়েছিল রাজবাড়িটা কোথায়? মানে লোকে রাজবাড়ি চেনে না যেতে চায়। মানে বাড়িটা চেনা নয় কিন্তু এই যেতে চাওয়া অ্যাডভেঞ্চারটা চেনা।
অর্জুন: সব সময় যে রিলেট করতেই হবে সেটা আমি সিনেমার ক্ষেত্রে মানি না। লার্জার দ্যান লাইফ ছবিও তৈরি হয়। 'অ্যাভেন্জারস্' দেখে লোকে বলছে সুপার হিউম্যান ড্রামা। চরিত্র কানেক্ট না হলেও তার ইমোশনের সঙ্গে দর্শক যুক্ত হচ্ছে।
ইশা: ইমোশনটাই আসল। দুর্গেশগড় কিন্তু বাঙালির ইমোশন নিয়েই ডিল করেছে।
ধ্রুব: ইমোশন আর ইনোসেন্স এই চূড়ান্ত মিশ্রণে দুর্গেশগড় তৈরি।
আপনাদের কনিষ্ঠ সদস্যর কথা বলুন?
ইশা: তিনি রীতিমতো ভদ্রলোক।
আবির: আমাদের চরিত্রের নামে ডাকে। কেউ আমায় আবির বললে ও ঠিক করে দিয়ে বলে 'ও আবির নয় সোনাদা'।আর হ্যাঁ ইশা আর ও মোটামুটি এক। জুনিয়র মোস্ট সদস্য কুচো। সবচেয়ে প্যাম্পারড ইশা।
আরও পড়ুন: সঙ্গীত প্রতিভা সামনে আনতে দেবজ্যোতির নতুন গানের পাঠশালা
ইশা: বুঝতে পারছেন তো? এতগুলো লোক সারাক্ষণ আমাকে নিয়ে এমন করেছে।আমি খুব সেজেছি তো হিংসেতে সাইড করে রাখার চেষ্টা করছে।
'দুর্গেশগড়ের' পরের চিত্রনাট্য তো রেডি তো?
ধ্রুব: আরো দুটো চিত্রনাট্য তৈরি আমাদের। তবে এ ছবিতে অর্জুনের দিক থেকে প্রচুর সারপ্রাইজ আছে। তিন মাস ধরে খেটেছে। আর এ ছবিতে আবিরকে প্রথম এ ভাবে নাচতে দেখা যাবে। দারুণ লেগেছে! ওর ফলোয়ার বাড়বে। আর ঝিনুককে কোনও ছবিতে এত ভাল লাগেনি।
কিন্তু সোনাদার বিয়ে?
ইশা: আমরা দায়িত্ব নিয়েছি এটা দেখতে হবে।
অর্জুন: কী দরকার ঝামেলা বাড়িয়ে। তবে যদি এসে যায় অবশ্যই কাকিমা বলে প্রণাম করব।