ফাইল চিত্র।
জীতু কমলের গুরুদেব কে? অনেকেই হয়তো ‘অপরাজিত’ দেখার পর বলবেন সত্যজিৎ রায়। আনন্দবাজারের শনিবাসরীয় আড্ডা 'অ-জানাকথা'য় সত্যজিতের ‘ছায়া’ জানিয়েছেন, আদর্শগত দিক থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর ‘গুরুদেব’! এবং এই গুরুদেবে জীতু এতটাই মোহিত যে, ব্রিগেডের মঞ্চে বুদ্ধবাবুকে বাস থেকে দেখতে দেখতে প্রায় দিশেহারা হয়ে যেতেন। দুধসাদা ধুতি-পাঞ্জাবিতে শোভিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। হাওয়ায় উড়ছে ধবধবে সাদা চুল। চোখে কালো রোদচশমা। জীতু ওই ব্যক্তিত্বের জৌলুসে মুগ্ধ হবেন, না কান পেতে শুনবেন তাঁর বলা কথা? এক সময়ে নিজেই খেই হারিয়ে ফেলতেন। ‘অ-জানাকথা’য় এই প্রথম সেই অনুভূতি উজাড় করলেন অভিনেতা। বললেন, ‘‘সে সব কথা মনে পড়লে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। আমি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। চোখ ভিজে ওঠে।’’
জীতু এখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে। কিন্তু অতীতে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়ার সময় জিএস হয়েছিলেন। দীর্ঘকাল বাম ছাত্র-রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি বুদ্ধদেবে আকৃষ্ট হবেন, স্বাভাবিক। জীতুর যুক্তি যদিও অন্য। তাঁর দাবি, শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, ব্যক্তি বুদ্ধদেবেও মুগ্ধ তিনি। বাম নেতার জীবনযাপন, মেধা, শিক্ষা, আচরণ এবং সংস্কৃতিমনস্কতা অভিনেতাকে আজও টানে। জীতুর মতে, ‘‘কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এমনই হওয়া উচিত। আজও ইউটিউবে ওঁর আবৃত্তি শুনি। কিংবা যখন আগে মাইকে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে মঞ্চে উঠতেন! এ স্মৃতি ভোলার নয়।’’
অনীক দত্তের ‘অপরাজিত’ প্রেক্ষাগৃহে টেনে এনেছে বাম নেতা-কর্মীদের! শনিবার প্রিয়া প্রেক্ষাগৃহে বিকেলের শো-এ উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তী-সহ বেশ কিছু বাম নেতা এবং সমর্থক। এই দলে যদি বুদ্ধবাবুও থাকতেন? কী করতেন পর্দার ‘অপরাজিত রায়’? আড্ডায় এক দর্শক প্রশ্ন রেখেছিলেন অভিনেতার কাছে। উত্তর দিতে গিয়ে নিমেষে চনমনে জীতু। চওড়া হাসি হেসে তাঁর জবাব, ‘‘এটা যদি সত্যি হয়, তা হলে আমার জীবন সার্থক। বিশ্বাস করুন, আমি আর বাড়ি থেকে বেরোবই না!’’