bollywood

২১ বছরের বড় পরিচালকের সঙ্গে লিভ ইন, এই নায়িকার খুনে জেল হয় দেব আনন্দের দুই ভাইপোর

সেই সময় লন্ডনে ২২ বছর বয়সি ভিরার ছবি তুলেছিলেন এক ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফার। সেই ছবি কোনও ভাবে এসে পৌঁছয় বলিউডে, চেতন আনন্দের কাছে। প্রযোজক-পরিচালক চেতন সে সময় তাঁর নতুন ছবির জন্য নতুন নায়িকা খুঁজছিলেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০৯:১৫
Share:
০১ ১৭

উচ্চপদস্থ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর মেয়ে। নিজেও ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। অভিনয়ের টানে বেছে নিয়েছিলেন নায়িকার কেরিয়ার। নায়িকা জীবনে ওঠাপড়া এবং ব্যর্থতা তো ছিলই। কিন্তু শেষ অবধি মুখোমুখি হয়েছিলেন ভয়ঙ্কর পরিণতির। নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল প্রিয়া রাজবংশকে।

০২ ১৭

প্রিয়ার জন্ম ১৯৩৬-এর ৩০ ডিসেম্বর। জন্মগত নাম ছিল ভিরা সুন্দর সিংহ। তাঁর বাবা ছিলেন বন দফতরের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। সিমলায় পাহাড়ের কোলে দুই ভাইয়ের সঙ্গে বড় হয়েছিলেন ভিরা।

Advertisement
০৩ ১৭

সিমলার কনভেন্ট স্কুল এবং কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন তিনি। পড়াশোনায় মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি নাটকেও আগ্রহ ছিল ভিরার। মাত্র ন’বছর বয়সে প্রথম অভিনয় মঞ্চে। এর পর কলেজজীবনেও বেশ কিছু ইংরেজি নাটকে অভিনয় করেছেন।

০৪ ১৭

স্নাতক হওয়ার পরে ভিরা কিছু দিন কাটিয়েছেন লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট-এও। সে সময় একটি ইংরেজি ছবিতে অভিনয়ের কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষ অবধি ছবিটি আর তৈরি হয়নি।

০৫ ১৭

সেই সময় লন্ডনে ২২ বছর বয়সি ভিরার ছবি তুলেছিলেন এক ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফার। সেই ছবি কোনও ভাবে এসে পৌঁছয় বলিউডে, চেতন আনন্দের কাছে। প্রযোজক-পরিচালক চেতন সে সময় তাঁর নতুন ছবির জন্য নতুন নায়িকা খুঁজছিলেন।

০৬ ১৭

ভিরার ছবি পছন্দ হল চেতনের। ১৯৬২ সালে ভিরাকে ‘হকীকত’ ছবির নায়িকা হিসেবে মনোনীত করেন দেব ও বিজয় আনন্দের দাদা চেতন আনন্দ। তিনি ভিরার নাম পাল্টে দেন। নতুন নাম হয় প্রিয়া রাজবংশ।

০৭ ১৭

‘হকীকত’ ছবিটি বক্সঅফিসে সুপারহিট হয়। ভারতীয় ছবির ইতিহাসে এই ছবিটিকে অন্যতম সেরা ছবি বলা হয়। ছবির পরিচালক-নায়িকার সফল রসায়ন কার্যকর হয় পর্দার বাইরেও। বয়সে ২১ বছরের ব্যবধান দূরে সরিয়ে একে অন্যের প্রেমে পড়লেন চেতন আনন্দ এবং ভিরা।

০৮ ১৭

১৯৬৪ থেকে ১৯৮৬ অবধি বাইশ বছরে মাত্র সাতটি ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রিয়া। প্রত্যেক ছবির পরিচালকই ছিলেন চেতন আনন্দ। ‘হকীকত’ ছাড়া বাকি ছবিগুলি হল ‘হাথো কি লকীড়েঁ’, ‘কুদরত’, ‘সাহেব বাহাদুর’, ‘হাসতে জখম’, ‘হিন্দুস্তান কি কসম’ এবং ‘হীর ঝঞ্ঝা’।

০৯ ১৭

চেহারা এবং উচ্চারণে পাশ্চাত্য প্রভাব থাকায় বলিউডে জনপ্রিয় নায়িকা হয়ে উঠতে পারেননি প্রিয়া। চেতনের ছবি ছাড়া অন্য কারও নির্দেশে কাজ করার বিশেষ ইচ্ছেও দেখাননি তিনি। গতানুগতিক বলিউডি নায়িকার বাইরে প্রিয়া যুক্ত থাকতেন ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজেও।

১০ ১৭

চেতন-প্রিয়া দীর্ঘ দিন ধরে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আলাপের আগেই স্ত্রী উমার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল চেতনের। কিন্তু তাঁর দুই ছেলে কেতন ও বিবেক আনন্দ কিছুতেই এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি।

১১ ১৭

মুম্বইয়ের জুহুতে চেতন আনন্দের রুইয়া পার্কের বাংলোয় থাকতেন দু’জনে। তবে প্রিয়ার নিজস্ব সম্পত্তিও কিছু কম ছিল না মুম্বইয়ে। মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকায় একটি বাড়ি ও বাংলোর পাশাপাশি চণ্ডীগড়ে ছিল পৈতৃক বাড়ি। তাঁর দুই ভাই কমলজিৎ লন্ডনে এবং পদ্মজিৎ থাকতেন আমেরিকায়।

১২ ১৭

১৯৯৭ সালের ৬ জুলাই ৮২ বছর বয়সে মারা যান চেতন আনন্দ। তাঁর মৃত্যুর পরে দেখা যায় তিনি দুই ছেলের সঙ্গে প্রিয়াকেও সম্পত্তির সমান ভাগ দিয়ে গিয়েছেন। এখানেই তীব্র হয় বিবাদ। জুহুর বাংলো বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন প্রিয়া। কিন্তু বাধা দেন এর বাকি দুই অংশীদার, চেতনের দুই ছেলে।

১৩ ১৭

সে সময় বাংলোর বাজারদর ছিল প্রায় ১ কোটি টাকা। ২০০০ সালের ২৭ মার্চ ওই বাংলোয় নিথর অবস্থায় পাওয়া যায় প্রিয়াকে। তাঁর দুই ভাই এবং টেলিভিশন অভিনেতা সুরেশ আরুমুগম অভিযোগ করেন, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করে পুলিশে গ্রেফতার করে কেতন ও বিবেক আনন্দকে।

১৪ ১৭

খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই বাংলোর এক পরিচারক ও এক পরিচারিকাকে। এই মামলায় দুই আনন্দ ভাইয়ের দাবি ছিল, বাথরুমে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রিয়ার।

১৫ ১৭

মামলার টানাপড়েনে খুনের সাক্ষ্য হিসেবে পেশ করা হয় চেতন আনন্দের ভাই বিজয়কে লেখা প্রিয়ার একটি চিঠিও। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে সেই চিঠিতে প্রিয়া লিখেছিলেন, তিনি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

১৬ ১৭

এই মামলায় কেতন ও বিবেক দোষী সাব্যস্ত হন। খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অপরাধে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। খুন করার অপরাধে পরিচারক ও পরিচারিকারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। পরে অবশ্য ২০০২-এ চার জন হাইকোর্টে জামিনে মুক্তি পান।

১৭ ১৭

প্রিয়ার দুই ভাইয়ের অভিযোগ, তাঁদের বোনের জীবনের এই করুণ পরিণতির জন্য দায়ী পরিচালক চেতন আনন্দ-ই। তিনি যেমন প্রিয়াকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলে, আবার তিনি-ই নাকি প্রিয়াকে অন্য পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে দেননি। চেতনের ছায়া থেকে বেরতে না পারার মাশুল প্রিয়াকে দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement