ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।
ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের আরও একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। এ বছরের রাখির দিনে, রবিবার সন্ধেয় ‘দিদি নং ১’-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘কাশ্মীরী কন্যা’ হুমেরার হাত থেকে রাখি পরলেন তিনি। কাশ্মীরী এই বোনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রিয়্যালিটি শো-এ খেলতে এসেছিলেন। খেলার শুরুতে শো-এ সঞ্চালক রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাস্বর জানান, কী ভাবে কাশ্মীরে গিয়ে আলাপ হয় হুমেরার সঙ্গে। অভিনেতার দাবি, ‘‘নেটমাধ্যমে প্রথমে আলাপ হয় হুমেরার দাদার সঙ্গে। জানতে পারি, ওরা প্রকৃত কাশ্মীরী মুসলিম। যদিও বহু বছর কলকাতার বাসিন্দা। এই বছর প্রথম ওদের সঙ্গে আমি রোজা রেখেছিলাম। ইদ পালন করেছিলাম।’’
হুমেরার খুব ইচ্ছে ছিল ভাস্বরকে রাখি পরাবেন। জি বাংলার রিয়েলিটি শো-এর মঞ্চ সেই সুযোগ করে দেয়। এখানেই গোটা বাংলার সামনে সত্যিকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়েন অভিনেতা। তাঁর হাতে ফুলের রাখি পরিয়ে দেন হুমেরা। প্রথা মেনে মিষ্টিমুখও করান। বোনের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেন ‘দাদা’ ভাস্বর। উপস্থিত সবাই তখন খুশিতে টইটম্বুর।
পাশাপাশি, প্রতি বছর এই দিনে তিনি নিজের বোনকেও রাখি পরান। ভাস্বর দেখেছেন, ভাইয়েরা রাখি পরে যখন ঝলমলে মুখে ঘুরে বেড়ান তখন বোনেদের মুখ অল্প হলেও যেন ম্লান। কে তাঁদের রাখি পরাবে? বোনফোঁটার মতোই মেয়েদের হাতে রাখি পরানোর জন্যও তো কেউ নেই! আজ নয়, ছোটবেলায় এই বিষয়টি খেয়াল করেছিলেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির নিয়ম বদলে দিয়েছেন। রবিবার, রাখিপূর্ণিমার দিনে ভাস্বরের সামাজিক পাতায় লেখা সেই স্মৃতি। অভিনেতা জানিয়েছেন, ‘আমাদের বাড়িতে রাখি পরার চল একটু অন্য রকম। ছোটবেলায় যখন বোন আমাদের দুই ভাইকে রাখি পরাতো আমরা খুশি হতাম। কিন্তু বোনের মুখ গোমড়া। ওর অভিযোগ, ওর হাত শূন্য কেন থাকবে? তখন থেকে আমরাও শুরু করলাম ওকে রাখি পরানো। সেই ঐতিহ্য আজও অব্যাহত’।
শুধু লিখেই ভাস্বর কর্তব্য সেরে ফেলেছেন, তা নয়। তিন ভাই-বোন মিলে রাখি পরে ছবিও ভাগ করে নিয়েছেন। ছবি বলছে, বোনের হাতে বাঁধা ফুল দিয়ে বানানো বড় আকারের বিশেষ রাখি। ভাইদের থেকে এমন রাখি উপহার পেয়ে চওড়া হাসি বোনের মুখে। নিজের বোনের পাশাপাশি ‘বাবা লোকনাথ’-এর কিন্তু কড়া নজর দেশের সমস্ত বোনের দিকে। সামাজিক পাতায় তাই তাঁর অনুরোধ, এই রীতি যদি প্রতি ঘরে চালু হয় তা হলে মন্দ কী! বছরের একটা দিন তা হলে বোনেদের মুখেই হাসি ফোটে। ভাস্বরের এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। তাঁর কথায়, তাঁদের বাড়িতে ভাইফোঁটার দিন বোনফোঁটার প্রচলন রয়েছে।