চিকিৎসক রুদ্রজিতের সঙ্গে নতুন অধ্যায় সূচনা মল্লিকার। ছবি: ফেসবুক।
মনের মতো মন খুঁজে পেলেন অভিনেত্রী মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ। যদিও বেশিরভাগ সময় খলচরিত্রেই দেখা গিয়েছে। বাস্তবে অবশ্য মানুষটা অন্য রকম। পর্দার চরিত্রের সঙ্গে একেবারেই মিল নেই মল্লিকার। আসর জমাতে ওস্তাদ। তিন দিন শুটিংয়ে না গেলে একবাক্যে সহকর্মীরা খোঁজ করেন তাঁর। চারপাশে মানুষের অভাব ছিল তেমন নয়। তবে জীবনে বার বার ঠকে যেন বিশ্বাস করতে, ভরসা করতে ভুলে গিয়েছিলেন মল্লিকা। তাঁর জীবনের ভেঙে যাওয়া বিশ্বাস ফের জোড়া লাগল। ১৫ বছর পর ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন মল্লিকা। ১৭ বছরের মেয়ের মা তিনি। মেয়ের উৎসাহেই ফের দ্বিতীয় বিয়ে করছেন মল্লিকা। পাত্র চিকিৎসক রুদ্রজিৎ রায়। ২৪ জানুয়ারি বিয়ে। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর অভিজ্ঞতা।
অল্প বয়সে প্রেম করে বিয়ে করেন মল্লিকা। মেয়ের বয়স যখন ৯ সেই সময় স্বামী এসে জানান পরকীয়ায় জড়িয়েছেন। সেই থেকে শুরু লড়াই। একা হাতে মেয়েকে বড় করে তোলা। মেয়ের দায়িত্ব সামাল দিতে গিয়ে নিজের জীবনের দিকে তাকানোর সময় পাননি। তবু মাঝে প্রেম আসে মল্লিকার জীবনে, তিনিও ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ। কিন্তু বছর খানেকের মধ্যে সেখানেও প্রতারণা। তার পর যেন বিশ্বাস উঠে যায় সম্পর্ক থেকে। তবু মায়ের চিন্তা, মেয়ে বড় হচ্ছে কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর নিজস্ব জগত হবে। সে কথা ভেবে মনস্থির করেন, ফের চেষ্টা করবেন। মল্লিকা জানান, কোভিডকালে রুদ্রজিতের সঙ্গে দেখা। তাঁর ও মেয়ের চিকিৎসক ছিলেন। পরে অবশ্য একটি অনুষ্ঠানে আলাপ। মল্লিকার কথায়, ‘‘রুদ্রর তরফ থেকেই প্রস্তাবটা আসে। আমি বহু বার না করেছি বলা ভাল ওকে বলেছি ভেবে দেখতে। কারণ একটা বড় মেয়ে নিয়ে বিয়ে করা। মেয়ের যেমন মেনে নেওয়ার ব্যাপারটা থাকে, তেমনই তাঁদের আমার মেয়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার রয়েছে। কিন্তু রুদ্র হাল ছাড়েনি। ওঁর মধ্যে অসম্ভব ধৈর্য সেটাই সব থেকে বেশি আকর্ষণ করেছে আমাকে। ভরসা ফিরিয়ে দিয়েছে আমার মানুষের প্রতি।’’
কিন্তু মেয়ে এখন বয়ঃসন্ধির সময়ে, যৌবনে পা দেবেন। সেখানে দাঁড়িয়ে মায়ের বিয়ে, বলা ভাল মায়ের জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে মেয়ে গরিমাই সাহায্য করেছেন। মল্লিকার কথায়, ‘‘মেয়ের যখন ১১ বছর বয়স সেই সময় থেকেই ও আমাকে বলেছিল নতুন করে ভাবার কথা। এখন রুদ্র আর মেয়েকে কথা বলতে দেখলে কেউ বলবে না যে ও গরিমার বাবা নয়। সত্যি বলতে বেশি বয়সে বিয়ে কুন্ঠাবোধ হচ্ছিল। মেয়েই উৎসাহ নিয়ে সবটা করিয়েছে। আর আমার মেয়ে ১৭ বছর হলেও একটু ছেলেমানুষ। এখন তাঁর আনন্দ মায়ের বিয়ে দেখবে। ওর ইচ্ছে মায়ের বিয়েতে নিতকনে হবে।’’ যে হেতু মল্লিকার কাছে মেয়েই তাঁর জগত তাই মেয়ে খুশি থাকলেই সে খুশি। উল্লেখ্য, বর্তমানে ‘গীতা এলএলবি’ ও ‘দুই শালিক’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন মল্লিকা। এছাড়াও রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘সাদা রঙের পৃথিবী’ ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।