কোয়েল মল্লিক এবং রঞ্জিত মল্লিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের জেরে আসন্ন দুর্গোৎসব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নাগরিক সমাজের একাংশ পুজোর বিরোধিতা করছেন, অন্য পক্ষ অবশ্য পুজোর পক্ষে। চলতি বছরে ভবানীপুরের মল্লিকবাড়ির পুজোর শতবর্ষ। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই মল্লিকবাড়ির পুজোয় কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাড়ির পুজো এবং শারদীয়া প্রসঙ্গে তাঁর পরিকল্পনা জানালেন মল্লিক পরিবারের কর্তা রঞ্জিত মল্লিক।
এই বছর মল্লিকবাড়ির পুজো অনাড়ম্বর ভাবেই পালিত হবে। প্রতি বছর ভবানীপুরের এই ঐতিহ্যবাহী পরিবারের প্রতিমা দর্শনের জন্য দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। তবে এ বছর তাঁদের হতাশ হতে হবে। কারণ, মল্লিকবাড়িতে পুজোর সময়ে দর্শনার্থীদের কোনও প্রবেশাধিকার থাকছে না। হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন? আনন্দবাজার অনলাইনকে রঞ্জিত বললেন, ‘‘আমাদের পুজো দেখতে প্রচুর মানুষ আসেন। তাঁদের আমরা খুবই ভালবাসি। কিন্তু, এই বছর মন ভাল নেই। আমাদের পরিবার ঠিক ‘উৎসব’ পালনের মুডে নেই।’’
আরজি কর আবহে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ এখনও চলছে। মানুষের মন উৎসবে নেই। কিন্তু তা বলে দেবীর আরাধনা বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। কলকাতার বাড়িতে পুজো একশো বছর পূর্ণ করছে। তার আগে এই পুজো হত গুপ্তিপাড়ায় রঞ্জিতের পৈতৃক বাড়িতে। রঞ্জিতের কথায়, ‘‘আমাদের পরিবারে কারও প্রয়াণের সময়েও দুর্গাপুজো থেমে থাকেনি। পুজো হয়েছে তার নিয়মেই। এ বছর আমরা পুজো করব। কিন্তু কোনও উৎসবে শামিল হব না।’’
চার বছর আগে অতিমারির সময়েও মল্লিকবাড়িতে দর্শনার্থী প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ জারি ছিল। কিন্তু এ বারে সেই ক্ষেত্রে একেবারেই ইতি টানা হয়েছে। রঞ্জিত বললেন, ‘‘আমাদের বাড়ির প্রতিমা তো কাঁধে আসে। সে বছর ছোট প্রতিমা তৈরি করতে হয়েছিল, যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়। আমরা কাউকেই নিরাশ করতে চাই না। কিন্তু এ বছর কোনও উপায় নেই।’’ এই সিদ্ধান্তে কোয়েলের কী মতামত? রঞ্জিত বললেন, ‘‘আমরা তো সকলে মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোয়েলও সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।’’
আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে একাধিক শুনানি হয়েছে। প্রতিবাদের পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকেরাও কাজে ফিরতে সম্মত হয়েছেন। নির্যাতিতার ‘ন্যায়বিচার’ নিয়ে কী ভাবছেন রঞ্জিত? অভিনেতা বললেন, “এত মানুষের আশা কখনও বিফলে যেতে পারে না। নিশ্চয়ই সুবিচার পাওয়া যাবে। আমি চাই, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। বাকিদের মতো আমিও সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছি।’’