দেব চৌধুরী ও ম্যাক। —নিজস্ব চিত্র।
সম্প্রতি কলকাতার বুকে ‘সহজিয়া’-র সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিলেন এবং বাংলাদেশের রকস্টার মাকসুদুল হক ওরফে ‘ম্যাক’। ‘কলকাতা সবলা মেলা’-য় ভারত-বাংলাদেশের এই মৈত্রীর সাংস্কৃতিক বন্ধনের সাক্ষী থাকলেন কয়েক হাজার দর্শক।
মঞ্চে ম্যাক উঠতেই করতালির শব্দ জানান দিয়ে গেল ভিন দেশেও এই শিল্পীর জনপ্রিয়তা। পরিবেশন করলেন ‘মৌসুমী’, ‘চিঠি’, ‘এমনি করে সবাই যাবে’, ‘কেন এলে না’- র মতো বিখ্যাত সব গান। ম্যাকের কণ্ঠ ও আবেদনে দর্শকরা ভেসে গেলেন সেই নব্বই দশকের নস্টালজিয়ায়।
কম যায় না সহজিয়াও। ওই দিন তারা তাদের নিজস্ব ঘরানার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের সেই বিখ্যাত গান ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’ গেয়ে প্রয়াত রকস্টার আয়ুব বাচ্চুকে শ্রদ্ধা জানাল। এ ছাড়াও প্রতিমা বড়ুয়ার গাওয়া ‘মাহুত বন্ধু রে’ এবং রাধারমণ দত্তের ‘ভ্রমর কইও গিয়া’ গান দু’টি রক মিউজিকের ধারায় পরিবেশন করে। এদের এই যৌথ পারফর্মান্স সহজেই মন জয় করে শ্রোতাদের।
তখন উত্তাল সত্তরের দশক। ১৯৭৫-এ কলকাতায় গৌতম চট্টোপাধ্যায় এবং ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের সূচনা করছে সবে। তখনই ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মাকসুদুলের হাত ধরে তৈরি হচ্ছে ‘ফিডব্যাক’, এরাই পরবর্তীতে বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের এক নজিরবিহীন রূপকার। ১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক কারণে ম্যাক ‘ফিডব্যাক’ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ড তৈরি করেন। এখনও তিনি চুটিয়ে ‘গ্লোবাল বাউলিয়ানা’-কে সম্বল করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গানবাজনা নিয়ে সেখানকার যন্ত্রী সঙ্গে কাজ করছেন।
ব্যান্ড সহজিয়া-র সঙ্গে ম্যাক।
ম্যাক এবং সহজিয়ার প্রধান গায়ক দেব চৌধুরী মিলে সে দিন গাইলেন দুই বাংলার বিখ্যাত দু’টি গান। রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘আমার ভিতর বাহিরে’ এবং ম্যাকের ‘মেলায় যাই রে’। কলকাতার ব্যান্ড সঙ্গীতের শ্রোতারা এই সম্প্রীতির সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকে মনে রাখবেন অনেক দিন।