Porimoni Arrest Warrent

পরীমনির পাশে আজীবন থাকব, তবে আমাদের দেশে বিনোদন দুনিয়া সত্যিই ভাল নেই

“নায়িকাদের নিয়ে কী অশ্লীল বার্তা যে দেশে, সমাজে, মানুষের মনে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে! মনে হচ্ছে, বিনোদন দুনিয়াই বোধ হয় শেষ।”

Advertisement

মেহেরান সানজানা

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৯
Share:

পরীমনির পাশে মেহেরান সানজানা। ছবি: ফেসবুক।

সোমবার আদালতে পরীমনির সঙ্গে আমারও যাওয়ার কথা ছিল। রবিবার রাত করে বাড়ি ফেরায় নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি হতে পারিনি। তবে ফোনে কথা হয়েছে। পরীমনির মতো সাহসিনীদের আমাদের দেশে আরও দরকার। ওঁরাই হয়তো প্রতিবাদ জানিয়ে বিনোদন দুনিয়ার উপরে কিছু মানুষের জাত আক্রোশ মুছতে পারবেন। ওঁদের স্পষ্টবাদিতা বাকিদের সাহস জোগাবে। চিন্তা করবেন না পরী, আপনার সঙ্গে ছিলাম, থাকব।

Advertisement

খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা ভাল নেই। আমাদের দেশের বিনোদন দুনিয়া ভাল নেই। বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত বেশির ভাগ মানুষ ভাল নেই। বিশেষ করে নায়িকারা। হালের উদাহরণ পরীমনি। তালিকায় মেহজাবীন, গায়িকা পড়শী, গায়ক জেমস-ও আছেন। তিন দিন আগে শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে জেমসের গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে যাঁদের নাম বললাম তাঁরাও অনুষ্ঠান করতে যেতে পারছেন না। বিভিন্ন সংগঠন বাধা দিচ্ছে তাঁদের।

আসলে গত বছরের জুলাই থেকে ভাল নেই বাংলাদেশ। ৫ অগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই যেন বিনোদন দুনিয়ার উপরে একদল মানুষ, সংগঠনের ক্রোধ। শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িতেরা আক্রান্ত হচ্ছেন যখন-তখন। গণঅভ্যুত্থানের আগেও বিনোদন দুনিয়ার ব্যাপারে কিছু মানুষের আপত্তি ছিলই। কিন্তু তাঁরা তখন ন্যক্কারজনক আচরণ করতে সাহস পেতেন না। পুরো ব্যাপারটা নিবু আঁচের মতো ধিকিধিকি জ্বলছিলই। এখন তার মারাত্মক প্রকাশ! আমাদের এখানে ‘ওয়াজ়’ বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। সেখানে অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষার ব্যবহার শুনলে আপনারা কানে আঙুল দেবেন।

Advertisement

এ বার প্রশ্ন, কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে? দেশের মাথায় অভিভাবকের ছায়া নেই বলে। নির্বাচিত কোনও সরকার নেই বলে। আপনারা জানতে চাইতেই পারেন, অন্তর্বর্তিকালীন সরকার কি তা হলে বিনোদনের বিরোধী? একের পর এক যে ভাবে অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তা দেখে সত্যিই সন্দেহ জাগছে। ছবি হয়তো মুক্তি পাচ্ছে, কিন্তু ভয়ের চোটে লোকে রাস্তায় বার হতে পারছেন না! যেখানে-সেখানে হাঙ্গামা, মারপিট শুরু হয়ে যাচ্ছে। গত সন্ধ্যার কথাই বলি। আমার বাড়ি ফেরার রাস্তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ। সেখানে, নিউ মার্কেটের সামনে তুমুল মারামারি। এই সব পেরিয়ে প্রাণ হাতে করে আমাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের প্রাণ বাঁচাব, না ছবি দেখতে যাব? কারও কোনও নিরাপত্তাই নেই!

এই নিয়ে মুখ খুললেই ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বাক্‌স্বাধীনতা থাকছে না। সম্ভবত তারই শিকার পরীমনি, অন্তত আমার তেমনই মনে হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement