অনিমেষ রায়। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের বগাছড়া গ্রামের ছেলে তিনি। ভারত-বাংলাদেশ বর্ডার থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। ছোটবেলা থেকেই গানবাজনার পরিবেশে বড় হওয়া। আপাতত তাঁর কণ্ঠে মজে ও পার বাংলার শ্রোতারা। বাংলাদেশের উঠতি গায়ক অনিমেষ রায়। তাঁর গাওয়া ‘নাসেক নাসেক’, ‘নাহুবো’ গানের ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই পার করেছে লক্ষ ভিউ। শুরুতে অনেক সংগ্রামও পার করতে হয়েছে তাঁকে। এই প্রথম এ পার বাংলার ছবিতে গান গাইলেন অনিমেষ। বাংলাদেশের হাজং সম্প্রদায়ের মানুষ তিনি। বাড়িতে মা-দাদাদের সঙ্গে হাজং ভাষাতেই কথা বলেন তাঁরা। এই ভাষার গানকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন গায়ক। সম্প্রতি কলকাতার সিনেমার জন্য প্লেব্যাক করলেন অনিমেষ।
পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী তৈরি করছেন নতুন ছবি ‘ও অভাগী’। সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের গল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে ছবিটি তৈরি করছেন তিনি। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন রফিয়াত রশিদ মিথিলা। এই ছবিতে টাইটেল ট্র্যাকটি গেয়েছেন অনিমেষ। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। বাংলাদেশ থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে নিজের আনন্দের কথাই ভাগ করে নিলেন অনিমেষ।
‘ও অভাগী’ ছবিতে রফিয়াদ রশিদ মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত
গায়ক বললেন, “আমি সত্যিই খুশি। যে আমার উপর এতটা ভরসা করেছেন মৌসুমীদিদিরা। অর্ণবদা (শায়ন চৌধুরী অর্ণব) আমায় প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন কোক স্টুডিয়োয়। তার আগে লকডাউনের সময় ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুকে নিজের গান তৈরি করে দিতে শুরু করি। আমার দাদু, বাবা, মা সকলেই কিন্তু গানবাজনার মানুষ। পরিবারের থেকেই আমার এই গানের প্রতি ভালবাসা।” বাড়িতে মা ছাড়াও রয়েছে তাঁর দুই দাদা এবং একটি দিদি। সকলেই গান ভালবাসেন। হাজং ভাষাতেই গান গাইতেন। কিন্তু সংসারের চাপে আর গান নিয়ে এগোনো হয়নি। অনিমেষ বলেন,“তাই তো সব দায়িত্ব এখন আমার কাঁধে। পরিবারের স্বপ্নপূরণ আমায়ই করতে হবে। আমার পড়াশোনাও লোকগীতি নিয়ে। সদ্য মাস্টার্স ডিগ্রি শেষ হয়েছে।”
অনিমেষের স্বপ্ন তাঁদের হাজং ভাষা এবং সম্প্রদায়কে বিশ্বের দরবারে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আপাতত ছোট্ট ছোট্ট পায়ে এগিয়ে যেতে চান। বাংলাদেশের বেশ কিছু গানের কাজ রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। এ ছাড়া আগামী দিনে কলকাতাতেও কাজ করতে চান অনিমেষ।