‘বাঘাযতীন আলাপ’-এর ‘জুলিয়াস সিজ়ার’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
‘দ্য ট্র্যাজেডি অফ জুলিয়াস সিজ়ার’, সংক্ষেপে ‘জুলিয়াস সিজ়ার’। উইলিয়াম শেক্সপিয়রের অবিস্মরণীয় সৃষ্টিগুলির মধ্যে অন্যতম। রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজ়ারের জীবনের শেষ কিছু দিনকে নিজের নাটকে তুলে ধরেছিলেন শেক্সপিয়র। ষোড়শ শতকে প্রথম বার মঞ্চস্থ হয়েছিল এই নাটক। তার পর থেকে অসংখ্য বার বিভিন্ন ভাষায় মঞ্চস্থ হয়েছে এটি। বাংলা থিয়েটারের সঙ্গেও ‘জুলিয়াস সিজ়ার’-এর যোগও বহু পুরনো। বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেই যোগসূত্রকে আরও এক বার উদ্যাপন করল ‘বাঘাযতীন আলাপ’। মঞ্চস্থ হল ‘আলাপের জুলিয়াস সিজ়ার’।
‘বাঘাযতীন আলাপ’-এর ‘জুলিয়াস সিজ়ার’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
১২ বছর আগে পার্থপ্রতিম দেব তাঁর কিছু সতীর্থকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেন ‘বাঘাযতীন আলাপ’। তাঁদের লক্ষ্য ছিল বাঘাযতীন অঞ্চলের যুবকদের নিয়ে থিয়েটার চর্চা। প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে ‘নান্দীকার’-এর সঙ্গে থিয়েটার চর্চা করেছেন পার্থপ্রতিম। নাটক লেখা থেকে নির্দেশনা, এমনকি অভিনয়ও করেছেন একাধিক সফল নাটকে। পার্থপ্রতিমের নেতৃত্বে ‘বাঘাযতীন আলাপ’-এর হাত ধরে মঞ্চস্থ হয়েছে ‘গয়নার বাক্স’, ‘কৃষ্ণপ্রিয়া’, ‘পরশমণি’, ‘সাগিনা মাহাতো’, ‘রাণীর ঘাটের বৃত্তান্ত’ ইত্যাদি নাটক। নাট্যদল তৈরির এক যুগ পরে এ বার ‘বাঘাযতীন আলাপ’-এর পরিবেশনা, ‘জুলিয়াস সিজ়ার’। ৬ সেপ্টেম্বর জ্ঞান মঞ্চে পরিবেশিত হল সেই নাটক।
বাংলায় আগে একাধিক বার ‘জুলিয়াস সিজ়ার’ মঞ্চস্থ হলেও প্রতি বারই তা হয়েছে বাংলা ভাষায়। তবে ‘বাঘাযতীন আলাপ’-এর এই পরিবেশনার বিশেষত্ব হল, ইংরেজি ভাষাতেই এই নাটককে দর্শকের সামনে তুলে ধরেছে নাট্যদল। রুদ্ররূপ মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয়েছে ‘আলাপের জুলিয়াস সিজ়ার’। এর আগে একাধিক নাটকে অভিনয় করলেও, এই প্রথম নির্দেশনার কাজ করলেন তিনি। ভাষার সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে যাতে দর্শকের কাছে প্রাসঙ্গিক ও মনোগ্রাহী হয়ে ওঠে ষোড়শ শতকের এই নাটক, সেই লক্ষ্যেই এগিয়েছিলেন রুদ্ররূপ। একঝাঁক তরুণ নাট্যকর্মীকে নিয়ে আজকের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে ফেলে ‘জুলিয়াস সিজ়ার’কে সুচারু ভাবে পরিবেশন করেছেন তিনি। শুধু ‘জুলিয়াস সিজ়ার’-ই নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেই ইতিহাসের পটভূমিকায় রচিত নাটক ‘আগুন’ মঞ্চস্থ করেছে ‘বাঘাযতীন আলাপ’। ‘জুলিয়াস সিজ়ার’-এর পাশাপাশি সেই নাটকও জায়গা করে নিয়েছে দর্শকের মনে।