ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
ইন্দুবালা, আঙুরবালা, তিনকড়ি দাসী। বালা, দাসী, বাই, জান— এই শব্দগুলি বঙ্গ সমাজে পরিচিত হলেও তার ব্যবহার বা গ্রহণ স্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু এই বৃত্ত থেকেই জন্ম নেয় আঙুরবালা, ইন্দুবালা। যাঁদের গান বাংলার নবজাগরণের এক সম্পদ। মঞ্চে তাঁদের দাপুটে অভিনয়, সঙ্গে গান বঙ্গজীবনের সংস্কৃতি নির্মাণে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল। এই গান আর নারী যদিও আজ উপেক্ষিত। বাবুরা আজও স্মরণীয়। রবিবাবু, দ্বিজুবাবু সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র, গিরীশচন্দ্রের মতো বাবুদের ইতিহাস মনে রাখলেও বিবিদের খানিক দূরে সরিয়ে রেখেছে।
আজ সেই বাবু আর বিবির গান, কথা মঞ্চস্থ হতে চলেছে এক ভিন্ন আঙ্গিকে। নৃত্য, গান আর পাঠের অপেরাটিক ফর্মে মঞ্চে উনিশ শতকের বাবু-বিবি সংবাদ-এ।
‘অ্যাকাডেমি থিয়েটার’, ‘ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় মিউজিক অ্যাকাডেমি’ এবং ‘শূন্য’র সম্মিলিত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই অভিনব পিরিয়ড অপেরা। ‘‘বাংলার এই পর্যায়ের গান সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। এক জন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে এই ভাবনাকে নতুন প্রজন্মের সামনে আনার চেষ্টা করছি আমি, যাতে এই সুরভাণ্ডার চিরকালীন হয়,’’ তাঁর ভাবনা প্রকাশ করলেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়।
সে যুগের আঁধার ঘরের রমণীরা মঞ্চে নিজেরা আলো নিয়ে ফিরেছেন। সেই আলো আজও শাশ্বত। দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বললেন, ‘‘সে যুগের বহু মঞ্চ অভিনেত্রীর মাঝে এমনই এক জন বিনোদিনী বা তারাসুন্দরী। অন্য দিকে নবীন বসুর মতো বাবুও ছিলেন, এক লাখ টাকা খরচ করে সে যুগে বাংলা থিয়েটার করেন। এই সময়ের ভাষা, সুর, শব্দ উচ্চারণকে একসঙ্গে আমরা ধরতে চাইছি ‘বাবু বিবি সংবাদ’-এ।
আইসিসিআর-এ বুধবার সন্ধ্যায় গানে রয়েছেন ঋদ্ধি এবং দেবজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। উনিশ শতকের ফ্যাশনকে মাথায় রেখে পোশাক ডিজাইন করেছেন শর্বরী। অন্য দিকে, অভিরূপ সেনগুপ্তের পরিচালনায় আর রেশমী বাগচীর ছন্দে মিশে যাবে বাহারি মজলিশ।