বাঁ দিকে পরিণীতি এবং ডান দিকে সুশান্ত।
সুশান্তের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন। ‘হাসি তো ফাঁসি’-তে অভিনয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেও ভেস্তে গিয়েছিল প্ল্যান। সুশান্ত টিভি-র অভিনেতা, তাই ব্যাকআউট করেছিলেন পরিণীতি। বেঁকে বসেন সুশান্তও, এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন পরিচালক অনুরাগ কশ্যপ।অনুরাগ জানান, ২০১৪-য় মুক্তি পাওয়া ওই ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল সুশান্তের। বিপরীতে প্রয়োজন ছিল এক অভিনেত্রীর। প্রস্তাব যায় পরিণীতির কাছে। অনুরাগের কথায়, “পরিণীতি রাজি হয়নি। ওর যুক্তি ছিল, ছোট পর্দার কোনও অভিনেতার বিপরীতে কাজ করবে না। আমরা ওকে বোঝাই। সুশান্ত সম্পর্কে ওকে জানাই। ইতিমধ্যেই সুশান্ত 'পিকে’তে অভিনয় করে ফেলেছে। ছবি যখন মুক্তি পাবে তখন সুশান্তের পরিচয় শুধু মাত্র ‘ছোট পর্দার অভিনেতা’ থাকবে না।”
কিন্তু এই পরিণীতিকেই তো প্রায় একই সময়ে যশরাজ প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’-এ সুশান্তের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। যদি অনুরাগের কথাই সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে পরিণীতি কেন ওই ছবিতে কাজ করলেন? “পরিণীতির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি যশরাজ ব্যানারে একটি ছবি করছে ও। আমার মনে হয়, সুশান্তের সম্পর্কে পরিণীতিকে বিস্তারিত জানানোর পর ও যশরাজের সঙ্গে কথা বলে। এর পরেই ওই সংস্থা থেকে সুশান্তের কাছে ‘শুদ্ধ দেশি...’-র অফার আসে। আর সুশান্তও আমাদের কথা দিয়েও ওই ব্যানারে কাজ করতে চলে যান", জানিয়েছেন অনুরাগ।সুশান্তের পরিবর্তে ওই ছবিতে নেওয়া হয় সিদ্ধার্থ মলহোত্রকে। যদিও নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেন পরিণীতিই। অনুরাগের দাবি, এটাই এক মাত্র নয়, কথা দিয়েও কথার খেলাপ আরও এক বার করেছেন সুশান্ত। তাঁর কথা অনুযায়ী, “সাল ২০১৬। আমার কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়া (বর্তমানে পরিচালক) সুশান্তের কাছে আমার লেখা এক স্ক্রিপট নিয়ে যায়। আমাদের উত্তর প্রদেশ এবং বিহারে বেড়ে ওঠা কোনও ছেলের দরকার ছিল। সুশান্ত স্ক্রিপ্ট শোনেও। কিন্তু এর পরেই ‘ধোনি…’ মুক্তি পায়। হিট হয়। সুশান্তও আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি।” যদিও অনুরাগের বক্তব্য, এতে তিনি কিছু মনে করেননি। তবে ওই ছবিটি আর হয়নি।
যশরাজের প্রতি সুশান্তের যে বিশেষ টান ছিল তা সাক্ষাৎকারে বারে বারে বলেছেন অনুরাগ। যদিও সুশান্তের মৃত্যুর পর আদিত্য চোপড়ার ওই প্রযোজনা সংস্থার বিরুদ্ধে সুশান্তকে ভাল প্রজেক্ট থেকে বঞ্চিত করার অনেক অভিযোগ উঠেছিল। যশরাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় ভাল ভাল ছবি হাতছাড়া হয়েছিল সুশান্তের। তার মধ্যে রয়েছে সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর বেশ কয়েকটি হাই বাজেট ফিল্ম। দিন কয়েক আগে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যশরাজের সঙ্গে চুক্তি শেষ করার সিদ্ধান্ত নিলে আদিত্য চোপড়া (যশরাজের বর্তমান কর্ণধার) নাকি সুশান্তকে বলিউডে ব্ল্যাকলিস্ট করে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- ‘আমাকে চুপ করাতে অন্য এক নারীকে মিথ্যেয় শামিল করতে হল’, যৌন হেনস্থার অভিযোগে অনুরাগের নিশানায় কঙ্গনা
অনুরাগের কথায়, যে সুশান্ত দু’বার তাঁর অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, মৃত্যুর কিছু দিন আগে তিনিই নাকি কাজ করতে চেয়েছিলেন অনুরাগের সঙ্গে। অনুরাগের দাবি, অভিনেতার মৃত্যুর তিন সপ্তাহ আগে তাঁর ম্যানেজার দেখা করতে এসেছিলেন অনুরাগের সঙ্গে। পাশপাশি সুশান্ত তাঁর ম্যানেজারকে এ-ও বলেছিলেন, “যদি তুমি আমার নাম নিয়ে অনুরাগকে ফোন কর তবে অনুরাগ তোমার ফোন ধরবে না।” কথার খেলাপ করে সুশান্তও কি ভুগছিলেন অনুশোচনায়?
অন্য দিকে, শনিবারই অনুরাগের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন বাঙালি অভিনেত্রী প্রায়েল ঘোষ। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দফতরকে ট্যাগ করে অনুরাগ তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টি সামনে আসতেই মুহূর্তের মধ্যে মাঠে নেমে পড়েন কঙ্গনা রানাউত। অনুরাগের গ্রেফতারির দাবি তোলেন তিনি। প্রথমে চুপ থাকলেও নাম না করে কঙ্গনাকে উদ্দেশ্য করে অনুরাগ খানিক পর টুইটারে লেখেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার যে আমাকে চুপ করানোর চেষ্টা করতে এত সময় লেগে গেল। সে না হয় ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে চুপ করানোর জন্য এত মিথ্যে বলতে হচ্ছিল যে নারী হয়ে অন্য এক নারীকে সেই মিথ্যেয় শামিল করতে হল। ম্যাডাম, অন্তত একটু শালীনতা বজায় রাখুন। আমি শুধু এইটুকুই বলব যে, যা যা অভিযোগ আনা হয়েছে, সব ভিত্তিহীন। আমাকে কালিমালিপ্ত করতে গিয়ে আমার কলাকুশলী, এমনকি বচ্চন পরিবারকে টেনে আনাটা মোটেই বুদ্ধির কাজ হয়নি।’’