অনির্বাণ ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
অনির্বাণ ভট্টাচার্যের প্রথম মার্কিন যাত্রা বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনের হাত ধরে। সেখানে তৈরি হওয়া একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিষ্কার বাংলায় লিখেছিলেন, ‘এই প্রথম আমি এত দূরে একটি জায়গায় যাচ্ছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমার অনেক কিছু দেখে বিস্ময় হবে। যদি অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ফেলি, আপনারা আমায় মার্জনা করবেন।’ সেই সফরে সবাই যখন পানাহারে ব্যস্ত অভিনেতা তখন নীচে নেমে এসে গলা খুলে গাইছেন কবীর সুমনের গান, ‘‘যারা সুখে আছ তারা সুখে থাক, এ সুখ রইবে না...।’’
অনির্বাণের সেই সারল্য আজও আছে? নাকি, ক্রমাগত পরিণত হতে হতে চাপা পড়ে গিয়েছে সমস্ত অনুভূতি?
সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে তাঁর মাথা ঘুরে যায়নি তো? আনন্দবাজার অনলাইনের শনিবারের লাইভ আড্ডায় এমন প্রশ্নের জন্য বোধহয় প্রস্তুত ছিলেন না পরিচালক-অভিনেতা। তাই সামান্য থমকে যেন নিজেকেই আরও এক বার আতস কাচের নীচে ফেলে দেখার চেষ্টা করলেন। তার পরেই বরাবরের মতো সপ্রতিভ তিনি। হাসিমাখা মেধাবী জবাব এসেছে, ‘‘কী জানি! এখনও তো যায়নি। জানি না, ভবিষ্যতে কী হবে।’’ জানালেন, সারল্য থাকুক বা না থাকুক, তিনি সহজ জীবন যাপনে বিশ্বাস করেন। তাই নির্দিষ্ট গণ্ডিতে বা ছকবাঁধা জীবনে এখনও অভ্যস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। তাঁর পরিবারের বাকিরাও তাই-ই।
অনির্বাণের আরও দাবি, তাঁর আজন্ম লালিত কিছু অভ্যেস এখনও তাঁকে ছেড়ে যায়নি। তিনিও তাঁদের পরম যত্নে আঁকড়ে রয়েছেন। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন, অগুন্তি দর্শকের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তাঁকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। সেই আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হয় তাঁর আচরণে, ব্যক্তিত্বে, কথায়, তাকানোয়, শরীরের ভঙ্গিমায়। উদাহরণ দিয়ে অভিনেতা বলেছেন, ‘‘এই কারণেই ২০১৬-র অভিনেতা অনির্বাণ আর ২০২১-এর অভিনেতা অনির্বাণের কথার ধরনে আপনা থেকেই বদল এসেছে। ব্যক্তি অনির্বাণের কিন্তু তা হয়নি।’’ তাঁর কথায়, এটাই স্বাভাবিক। কারণ, অতি সাফল্য এবং অতি ব্যর্থতা, খুব কাছে থেকে দুটোই দেখেছেন অভিনেতা অনির্বাণ। বাহ্যিক এই বদল তাই আসতে বাধ্য।
সেটুকু তিনিও মেনে নিয়েছেন। একই সঙ্গে সেই বদলে বাড়তি রং চড়ানো বা আড়াল টানার তাগিদও অনুভব করেননি অনির্বাণ ভট্টাচার্য।