Drosera

আমাজনের মাংসাশী গাছ মিলল বাঁকুড়ার সোনামুখীর জঙ্গলে! সূর্যশিশির রক্ষার ভাবনা বন দফতরের

উদ্ভিদ সচরাচর সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজেদের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। তবে এমন কিছু উদ্ভিদ আছে যারা কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। সূর্যশিশির বা সানডিউ এমনই প্রজাতির উদ্ভিদ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:১১
Share:

বাঁকুড়ার জঙ্গলে সূর্যশিশির। —নিজস্ব চিত্র।

আলো উৎপাদনকারী ছত্রাকের পর এ বার বাঁকুড়ার সোনামুখীর জঙ্গলে দেখা মিলল পতঙ্গভুক শ্রেণির গাছ সূর্যশিশিরের। আমাজনে জন্মায় এরা। এ রাজ্যেও এই গাছ বিরল না হলেও অল্প কিছু জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। সোনামুখী ব্লকের বড় নারায়ণপুর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে সেই গাছের দেখা মেলায় নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর। গৃহপালিত প্রাণীদের হাত থেকে গাছগুলি রক্ষা করতে নজরদারির ভাবনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

উদ্ভিদ সচরাচর সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় নিজেদের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। তবে এমন কিছু উদ্ভিদ আছে যারা কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। সূর্যশিশির বা সানডিউ এমনই প্রজাতির উদ্ভিদ। এমনিতে এই গাছ খুব একটা বিরল না হলেও বাংলার সর্বত্র দেখাও যায় না। বীরভূমের কিছু জায়গায় অল্প সংখ্যক সূর্যশিশির দেখা যায়। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল বাঁকুড়াও। স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলের একটি জায়গায় সূর্যশিশির দেখতে পান স্থানীয়েরা। গাছটির বিশেষ চরিত্র দেখে তাঁরা বন দফতরে খবর দিয়েছিলেন। বন দফতরের আধিকারিকেরা ওই স্থানে গিয়ে গাছগুলিকে সূর্যশিশির বলে শনাক্ত করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘বইয়ে পতঙ্গভুক গাছের কথা পড়লেও এর আগে আমাদের এলাকায় এমন গাছ জন্মাতে দেখিনি। এমন ব্যতিক্রমী গাছের ফুলগুলিও অসাধারণ। এই গাছ সম্পর্কে স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে সকলেই গাছগুলিকে রক্ষা করার চেষ্টা করবেন।’’

বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুর্যশিশিরের বিজ্ঞানসম্মত নাম ড্রসেরা। এই গাছটি মূলত শুষ্ক ল্যাটেরাইট মাটি যুক্ত এলাকায় জন্মায়। যে মাটিতে নাইট্রোজেনের মাত্রা অত্যন্ত কম, সেখানেই এদের বাড়বাড়ন্ত। এই গাছের চারিদিকে বেশ কিছু শুঁড়ের মতো অংশ থাকে। আকর্ষণীয় ফুলের টানে পতঙ্গেরা গাছের দিকে যায়। তখন গাছের গায়ে থাকা আঠালো অংশে আটকে যায় তারা। শুঁড়ের মাধ্যমে পতঙ্গের শরীর থেকে গাছটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংগ্রহ করে নেয়।’’ সূর্যশিশির গাছের দেখা মেলার ঘটনায় রাজ্যের মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) এস কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘বীরভূম জেলার কোথাও কোথাও এই গাছ জন্মাতে দেখা যায়। বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড়েও এক বার এমন গাছ দেখা গিয়েছিল। এ বার সোনামুখীর জঙ্গলেও তাদের দেখা গেল। গৃহপালিত প্রাণীদের চারণভূমিতে এরা টিকে থাকতে পারে না। তাই সোনামুখীর যে জঙ্গলে ওই গাছগুলি দেখা গিয়েছে, সেই এলাকায় নজরদারি চালানো হবে। গাছগুলি রক্ষা করার ব্যাপারে স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement