মিমি-অনিন্দ্যর বন্ধুত্বের রং অমলিন।
আমার বন্ধুর জন্মদিন। কতখানি আনন্দের হতে পারে সেটা? এক কথায় বুঝিয়ে বলা যায়?
বোধহয় না। যদিও আমরা ‘বাপি বাড়ি যা’ ছবি দিয়ে অভিনয় দুনিয়ায় পা রেখেছি। আমাদের সঙ্গে ছিলেন অর্জুন চক্রবর্তীও। আমার জীবনের অন্ধকার অংশের সঙ্গে ওর কোনও পরিচয় নেই। ধীরে ধীরে পেশার সূত্রে সেই প্রথম পরিচয় কীভাবে যেন গাঢ় বন্ধুত্বে বদলে গেল। যেটা ইন্ডাস্ট্রিতে খুব কম মানুষের মধ্যে দেখা যায়। বহু সাংবাদিক জানতে চান, কী করে সম্ভব হল এই অসম্ভব? আমার সাফ জবাব, কোনও দিন বন্ধুত্বে পেশার ছায়া ফেলতে দিইনি। নিজের কোনও দরকারে মিমির সাহায্য চাইনি। কিন্তু অসুস্থকে হাসপাতালে ভর্তি করানো থেকে পথপশুদের চিকিৎসা, খাবারের কথা বলেছি ওকে। সঙ্গে সঙ্গে মিমি দশভূজা। দশ হাত দিয়ে সবাইকে সব বিপদ থেকে আগলেছে। এই সব কারণেই বোধহয় টিকে গেল আমাদের বন্ধুত্ব।
মিমি চক্রবর্তী নয়, ও আমার কাছে ‘শুধু’ই মিমি। যে তারকা নয়, সাংসদও নয়। শুধু পেশা নয়, স্টারডম, গ্ল্যামারের আলোও প্রবেশ করতে দিই না আমাদের মধ্যে। প্রতি বছর আমার জন্মদিনের আগের রাতে মিমি চলে আসে কেক হাতে। ঘরোয়াভাবে পার্টি হয়। ওর বেলাতেও ঠিক তাই। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় আমি চলে গিয়েছিলাম ওর বাড়িতে। না, আর কোনও তারকা উপস্থিত ছিলেন না। ছিলেন ওর আপ্ত সহায়ক অভিষেক, রূপসজ্জা শিল্পী স্যান্ডি। জলপাইগুড়ি থেকে মেয়ের জন্মদিনের জন্য শহরে মিমির মা-বাবা, বোন। ওঁরাও ছিলেন আমাদের নৈশপার্টিতে। সবাই মিলে উদযাপন। কেক কাটা। ভোর থেকে যে যার মতো ব্যস্ত। আমি চলে এসেছি ‘গাঁটছড়া’ ধারাবাহিকের শ্যুটে। শুক্রবারের রাতের ভুরিভোজ মিমির বাড়িতেই।
বন্ধু বলেই অভিনয় থেকে রাজনীতি— সব বিষয়ে দরকারে সমালোচনা করি। যদিও সেই সমালোচনা বন্ধ দরজার আড়ালেই থাকে। পরামর্শও দিয়েছি দরকারে। মিমি কিন্তু তখন ‘মিমি চক্রবর্তী’ হয়ে গিয়ে সে সব বাতিল করেনি। মন দিয়ে শুনেছে। পরামর্শ কাজেও লাগিয়েছে। আবার আমি কোনও বিষয়ে ঘেঁটে গেলে প্রকৃত বন্ধুর মতো সামলেও দেয় আমায়। ওর কথা আমিও শুনি। এই সম্মান, পারস্পরিক বিশ্বাস, ভরসা আছে বলেই আমরা নিখাদ ‘বন্ধু’।
অনেকের প্রশ্ন, এই বন্ধুত্ব পর্দায় কোনও দিন জুটি বাঁধবে না? আমার দূরদৃষ্টি বলে, জুটি না হওয়াই মঙ্গল। তা হলে আর সব থাকবে। হারিয়ে যাবে বন্ধুত্ব। হারিয়ে ফেলব আমার ১০ বছরের নিঃস্বার্থকে ‘বন্ধু’ মিমিকে।