সুস্মিতা সেনকে বলিউডে এখন আর প্রায় দেখাই যায় না। কিন্তু আজও বলি নায়িকাদের তালিকা নিয়ে যদি বসা যায়, তা হলে সুন্দরীদের তালিকার প্রথমেই তাঁর নাম চলে আসে।
হায়দরাবাদের একটি বাঙালি পরিবারে জন্ম সুস্মিতার। বাবা ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার আর মা ছিলেন জুয়েলারি ডিজাইনার। দুবাইয়ে তাঁর একটি গয়নার দোকানও ছিল।
১৯৯৪ সালে ঐশ্বর্যাকে হারিয়ে মিস ইন্ডিয়া হন সুস্মিতা। ওই বছরই মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি মিস ইউনিভার্স খেতাব জেতেন।
এর আগে অবশ্য সুস্মিতা মডেলিং নিয়ে তেমন কিছু ভাবেননি। এক বার এক পার্টিতে এক ব্যক্তির কথা শুনে নেহাত কৌতূহলের বশেই মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার ফর্ম পূরণ করে ফেলেছিলেন।
তার আগে যখনই অবসর পেতেন টুকটাক কাজ করে উপার্জন করতেন। এমনকি বাড়ি বাড়ি ভ্যাকুম ক্লিনারও বিক্রি করেছেন তিনি।
মিস ইউনিভার্স হওয়ার পরই তাঁর জীবন পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে সুস্মিতা বলিউড ডেবিউ করেন ‘দস্তক’ ফিল্মে। তারপর ‘বিবি নম্বর ওয়ান’, ‘সির্ফ তুম’, ‘ফিজা’, ‘আঁখে’, ‘ম্যায় হু না’-র মতো অসংখ্য ফিল্মে অভিনয় করেছেন তিনি।
তবে সুস্মিতার অভিনয় জীবন নিয়ে যত না চর্চা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি চর্চা হয়েছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে।
একাধিক পুরুষের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর। কখনও রণদীপ হুডা, কখনও মুম্বইয়ের রেস্তোরাঁর মালিক রিতিক ভাসিন, কখনও পরিচালক বিক্রম ভট্ট, তো কখনও তাঁর চেয়ে বয়সে অনেক ছোট কোনও মডেলের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তাঁর।
তবে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়েছিল অনিল অম্বানীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে। শোনা যায়, সুস্মিতার প্রেমে অনিল অম্বানী এতটাই পাগল হয়ে গিয়েছিলেন যে, স্ত্রী টিনা মুনিমকে ডিভোর্স দিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন তিনি।
কিন্তু টিনা তাঁকে ডিভোর্স দেননি। শেষমেশ পরিবারের হস্তক্ষেপে এই সম্পর্ক থেকে সরে আসেন অনিল।
তবে সুস্মিতা চিরকালই নিজের ছন্দে জীবন কাটাতে পছন্দ করেন। তাঁর এই যে একাধিক পুরুষ-সঙ্গী, কখনও তা গোপন করেননি তিনি।
বরং যখনই যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে, খুব খোলামেলা ভাবেই সেই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। ক্যামেরার সামনে তা স্বীকারও করেছেন।
তাঁর ব্যক্তিত্বের আরও একটা দিক রয়েছে। ২০০০ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি রেনে নামে এক শিশুকে দত্তক নেন। পরে ২০১০ সালে আরও এক শিশুকে দত্তক নেন তিনি। নাম রাখেন আলিশা।
পরম যত্নে দুই মেয়েকেই বড় করে তুলছেন তিনি। দুই মেয়ের সঙ্গে নিজের ছবিতে ভরে থাকে সুস্মিতার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল।
এই মুহূর্তে তাঁর প্রেমিক রহমান শল। রহমানের সঙ্গেও রেনে আর আলিশার সম্পর্ক খুব ভাল। মাঝে মাঝেই চার জন পাড়ি দেন একসঙ্গে ছুটি কাটাতে।
তবে রহমানকে বিয়ে করবেন কি না তা এখনও জানাননি সুস্মিতা। প্রতি বারের মতো রহমানের সঙ্গে বিয়ের প্রসঙ্গও এড়িয়ে গিয়েছেন। থাকতে চেয়েছেন নিজের নিয়মেই।
২০১৫ সালে শেষ বার পর্দায় দেখা গিয়েছিল সুস্মিতাকে। ‘নীরজা’র পরিচালক রাম মাধবানীর ওয়েব সিরিজ় ‘আরিয়া’ দিয়ে কামব্যাক করার কথা তাঁর। সুস্মিতার বড় পর্দায় ফেরত আসা এবং বিয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন ভক্তরা।