বলিউডের কিছু শত্রুতা পুরনো হলেও ম্লান হয় না। সে রকমই সম্পর্ক অজয় দেবগণ ও রাকেশ রোশনের। ২৫ বছরেও তাঁদের তিক্ত সম্পর্ক মধুর হয়নি।
অজয়ের বাবা বীরু কেরিয়ারের প্রথম দিকে বডি ডাবলের কাজ করতেন। সেই কাজেই তিনি মন জয় করে নেন পরিচালক প্রযোজকদের। ক্রমে তিনি স্টান্ট ডিরেক্টরের ভূমিকায় কাজ করতে শুরু করেন।
রাকেশ রোশনের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক ছিল বীরুর। নায়ক রাকেশের বডি ডাবলের কাজ করতেন বীরু-ই। পরে যখন রাকেশ প্রযোজনা-পরিচালনায় এলেন, তখন বীরু স্টান্ট ডিরেক্টরের ভূমিকায়।
‘খুন ভরি মাঙ্গ’, ‘কিং আঙ্কল’ ছবির স্টান্ট মাস্টার ছিলেন বীরু-ই। রাকেশ নিজের ছবি ‘করণ অর্জুন’-এর এক জন নায়কের ভূমিকায় মনোনীত করেছিলেন অজয় দেবগণকে আর এক জন নায়ক প্রথম থেকেই শাহরুখ খান হবেন বলে ঠিক ছিল।
চিত্রনাট্য পড়ে রাকেশের কাছে শাহরুখের যে চরিত্রে (অর্জুন) অভিনয় করার কথা সেটা চেয়ে বসেন অজয়। কিন্তু রকেশ এই পরিবর্তনে রাজি ছিলেন না। তিনি বলেন, অজয় অ্যাকশন হিরো। তাই তিনি করণের ভূমিকায় থাকবেন।
রাকেশের মনে হয়েছিল, অর্জুনের রোমান্টিক চরিত্রটি অজয় করতে পারবেন না। তাই অজয় দেবগণের শত অনুরোধেও রাজি হননি রাকেশ। ফলে শেষ অবধি ছবি থেকে সরে দাঁড়ান অজয়। এই ছবিতে বীরু দেবগণও ছিলেন স্টান্ট পরিচালক হিসেবে। সরে দাঁড়ান তিনিও।
অজয়ের জায়গায় রাকেশ নিয়ে নেন সলমন খানকে। তখন অজয় দেবগণ ‘বিজয়পথ’ ছবির শুটিং করছিলেন। এই ছবিটি আর ‘করণ অর্জুন’-এর শুটিং একইসঙ্গে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শাহরুখ-সলমনের ডেট একসঙ্গে পাওয়া না যাওয়ায় ‘করণ অর্জুন’-এর মুক্তি অনেক পিছিয়ে গিয়েছিল।
ফলে আগেই মুক্তি পেয়ে যায় ‘বিজয়পথ’। ছবির পোস্টার দেখে রেগে যান রাকেশ রোশন। তাঁর মনে হয়েছিল, করণ অর্জুন থেকে অ্যাকশন দৃশ্য চুরি করেছেন বীরু। বাবার বিরুদ্ধে এই অভিযোগে রুষ্ট হন অজয়। কারণ ‘বিজয়পথ’ ছবির সঙ্গে কোনও ভাবেই বীরু জড়িত ছিলেন না।
‘বিজয়পথ’ ও ‘করণ অর্জুন’ দু’টি ছবিই বক্স অফিসে সফল হয়। প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না হলেও রোশন ও দেবগণ পরিবারের তিক্ততা রয়েই যায়। পরে হৃতিক যখন অভিনয় করতে আসেন, রাকেশের সঙ্গে অশান্তির জেরে অজয় তাঁর সঙ্গে কোনও ছবিতে অভিনয় করেননি।
বরফ গলানোর চেষ্টা করেছেন হৃতিক। অজয়ের ‘তানাজি’ ছবির ট্রেলর দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা করেন হৃতিক। তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে অজয় উত্তরে লেখেন, “তুমি কবে ছবিটি দেখতে চাও, বোলো।”
ইদানীং ‘সত্তে পে সত্তা’ ছবির রিমেক প্রজেক্টে হৃতিক রোশনের জায়গায় এসেছেন অজয় দেবগণ।
হৃতিকের চেষ্টায় কি গলবে আড়াই দশকের তিক্ততার বরফ? উত্তরের অপেক্ষায় দুই তারকার অনুরাগীরা।