২৪ বছর বয়সে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ এসেছিল অপ্রত্যাশিত ভাবেই। কখনও অভিনয়কে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্য তেমন উচ্চাকাঙ্খা ছিল না। কিন্তু বিনোদন জগতের হাতছানিকে কে-ই বা উপেক্ষা করতে পারে!
পারেননি ন’য়ের দশকের পৃথ্বীও। প্রথম ছবিতেই চূড়ান্ত সাফল্য। রাতারাতি তারকা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিণতি ছিল দুর্ভাগ্যজনক। স্টারডম ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ক্রমেই তলিয়ে যান অন্য অভিনেতাদের ভিড়ে।
পৃথ্বীর প্রকৃত নাম আজান আলি। ১৯৬৮ সালে দিল্লিতে জন্ম তাঁর। পৃথ্বীর পরিবারে কেউ অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
তবে পৃথ্বীর বাবার খুব ভাল বন্ধু ছিলেন মুকেশ দুগ্গল। মুকেশ নয়ের দশকের নামজাদা প্রযোজক ছিলেন।
১৯৯২ সালে মুকেশ ‘দিল কা ক্যায়া কসুর’ নামে একটি ছবি তৈরি করছিলেন। ছবিতে নায়িকা ছিলেন দিব্যা ভারতী।
এই ছবিতেই দিব্যার বিপরীতে পৃথ্বীকে মুখ্য চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেন মুকেশ। সুপুরুষ পৃথ্বীর মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাসী ব্যাপার ছিল।
বন্ধুর ছেলে হওয়ায় পৃথ্বীকে আগে থেকেই চিনতেন মুকেশ। এই লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার কথা মনেও হয়নি পৃথ্বীর বাবার।
পৃথ্বীর প্রথম ছবিই সফল হয় বক্স অফিসে। ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি ‘চকোলেট হিরো’ হিসাবে পরিচিতি পেয়ে যান।
লরেন্স ডি’সুজার মতো পরিচালক এবং নাদিম-শ্রবণের মতো সুরকারের হাত ছিল এই ছবিতে। ছবির গানগুলোও ছিল সুপারহিট।
শূন্য থেকে শুরু করা পৃথ্বী প্রথম ছবি দিয়েই রাতারাতি তারকা হয়ে গিয়েছিলেন। সকলেই ভেবেছিলেন, এর পর আরও ভাল ভাল কাজ করবেন তিনি। আরও ভাল ছবির সুযোগ পাবেন।
এমন নয় যে এর পর আর কোনও ছবিতে সুযোগ পাননি তিনি। ১৯৯২ সালে ‘দিল কা ক্যায়া কসুর’ থেকে ২০০৮ সালের ‘জিমি’ পর্যন্ত ১৮টি ছবিতে কাজ করেছেন পৃথ্বী।
কিন্তু তফাৎ চোখে পড়তে শুরু করে দ্বিতীয় ছবি থেকেই। প্রথম ছবিতে তাঁর চরিত্র যতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, পরবর্তীকালে আর কোনও ছবিতে সে রকম চরিত্র পাননি তিনি।
‘দিলওয়ালে কভি না হারে’, ‘মেরি আন’, ‘প্ল্যাটফর্ম’, ‘দরার’, ‘দাদা’, ‘হোগি প্যায়ার কি জিত’, ‘হমরাজ’-এর মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু সবেতেই তিনি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন।
প্রথম ছবির পর যাঁরা পৃথ্বীকে ‘চকোলেট হিরো’-র তকমা দিয়েছিলেন তাঁরাও তত দিনে বুঝে গিয়েছিলেন যে এই অভিনেতাকে রাতারাতি তারকা বানিয়েছিল ছবির চিত্রনাট্য, গান।
এমনকি একটা সময়ের পর পার্শ্বচরিত্রে সুযোগ পাওয়ার বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। ২০০৮ সালে তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘জিমি’।
দিব্যার সেই ‘চকোলেট হিরো’র বয়স এখন ৫৩। ছবি না করলেও বিনোদন জগতের সঙ্গেই ওঠাবসা তাঁর। নানা অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা যায়।