বাবা মা আদর করে নাম দিয়েছিলেন বখতওয়ার। কিন্তু পরিচালক প্রযোজক যশ চোপড়া সে নাম পাল্টে দিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল, বলিউডে জনপ্রিয়তা পেতে গেলে নায়িকার অন্য নাম প্রয়োজন। তিনি নাম রাখলেন ‘সোনম’। সেই নামেই পরিচিত হলেন আর এক অভিনেতা রাজা মুরাদের এই ভাইঝি।
সোনমের জন্ম ১৯৭২ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তাঁর বাবা ছিলেন মুশির খান। মায়ের নাম তালাত খান। মাত্র ১৬ বছর বয়সে প্রথম অভিনয় ছবিতে। যশ চোপড়ার পরিচালনায় তিনি ঋষি কপূরের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ‘বিজয়’ ছবিতে।
১৯৮৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘বিজয়’। তার আগে সোনম অভিনয় করেছিলেন একটি তেলুগু ছবিতে। ‘বিজয়’-ই তাঁর প্রথম হিন্দি ছবি।
সে বছরই মুক্তি পেয়েছিল সোনমের আর একটি সুপারহিট ছবি ‘ত্রিদেব’। এই ছবিতে তাঁর উপর দৃশ্যায়িত গান ‘তিরচি টোপিওয়ালে’ খুব জনপ্রিয় হয়। সেই গান থেকে সোনমের নাম-ই হয়ে গিয়েছিল ‘ওয়ে ওয়ে গার্ল’।
সোনমের ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য অন্য নামগুলি হল ‘আখরি আদালত’, ‘আখরি গুলাম’, ‘মিট্টি অউর সোনা’, ‘ক্রোধ’ এবং ‘আজুবা’। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ অবধি, মোট ৩০ টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বক্সঅফিসে সফল হয়।
কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই ১৯৯১ সালে বিয়ে করেন সোনম। তাঁর স্বামী রাজীব রাই ছিলেন ‘ত্রিদেব’ ও ‘বিশ্বাত্মা’ ছবির পরিচালক। রাজীবের বাবা, সোনমের শ্বশুর গুলশন রাই ছিলেন নামী প্রযোজক।
বিয়ের পর মাত্র তিন বছর অভিনয় করেছিলেন সোনম। তবে বিয়ের পরে বেশিদিন ভারতে থাকতে পারেননি তিনি। স্বামী রাজীব এবং ছেলে গৌরবকে নিয়ে সোনমের দাম্পত্যজীবনের বেশিরভাগ অংশ কেটেছে প্রথমে লস অ্যাঞ্জলস, তারপর সুইৎজারল্যান্ডে।
তাঁদের অভিযোগ আন্ডারওয়ার্ল্ডের গ্য়াংস্টার আবু সালেমের দাবি মতো টাকা দেননি বলে রাজীবের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এমনকি, রাজীবের প্রাণনাশের চেষ্টাও হয়েছিল বলে অভিযোগ। নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তাঁরা দেশান্তরী হতে বাধ্য হন বলে দাবি।
তবে রাজীবের সঙ্গে সোনমের দাম্পত্য স্থায়ী হয়েছিল দশ বছর। ২০০১ থেকেই তাঁরা আলাদা থাকছিলেন।
কয়েক বছর পরে সোনম মুম্বই ফিরে আসেন। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আর জোড়া লাগেনি। বিয়ের পঁচিশ এবং সেপারেশনের পনেরো বছর পরে ২০১৬-এ তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বিবাহবিচ্ছেদের কারণ নিয়ে সোনম বা রাজীব কেউ মুখ খোলেননি। তবে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষের সম্মতিতেই বিচ্ছেদ হয়েছে।
২০১৭ সালে শিল্পপতি মুরলী পোড়ুভালকে বিয়ে করেন সোনম। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে গৌরবও খুশি হয়েছে মায়ের নতুন জীবনে। সুযোগ পেলে আবার অভিনয়ে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ‘ওয়ে ওয়ে গার্ল’।