শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের উপরে রাখি গুলজ়ারের শাসন দেখে খুশি সৌরসেনী মৈত্র? গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে কান ধরে শাসন করছেন রাখি গুলজ়ার! সেই দৃশ্যে সমাজমাধ্যম ছয়লাপ। পরিচালকের ছবিতে যাঁরা অভিনয় করে থাকেন তাঁরা উত্তেজিত। সৌরসেনী মৈত্র যেমন লিখেই ফেলেছেন, “সর্বনাশ করেছে রে... এ বার বসের মেজাজ ঠিক থাকলে হয়।” কাঞ্চন মল্লিক ইংরেজিতে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন। তাঁর মনের কথা, “আমার বস্কে এই করুণ পরিস্থিতিতে দেখে খুব খারাপ লাগছে!” আরও আছে। অবস্থা দেখে অভিনেত্রী শ্রুতি দাস বিস্মিত! তাঁর প্রশ্ন, “বসের উপরে বস্গিরি!” ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি পর্দার ‘বস্’কে জব্দ হতে দেখে ভারী খুশি। অনেকটা এমন ভাব তাঁর, “দেখেছ, বসেরও বস্ থাকে!”
অভিনেতাদের জীবনেও কি বিশেষ ‘বস্’ আছেন? যিনি প্রয়োজনে এ ভাবে প্রকাশ্যে কান মুলে দিতে পারেন?
আনন্দবাজার ডট কমের প্রশ্ন অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্রকে। তাঁর কথায়, “অভিনেতাদের পেশাজীবনে সাধারণত পরিচালকেরাই বস্ হন। অভিনেতা নির্বাচন থেকে ছবি তৈরি—সবটাই তাঁর হাতে। আমরাও মেনে চলি তাঁকে।” ব্যক্তিগত জীবনে অবশ্য অভিনেত্রীর একমাত্র ‘বস্’ তাঁর মা। সৌরসেনীর দাবি, “মায়ের সব ব্যবহার যে ভাল লাগে বা যুক্তিযুক্ত মনে হয়— তেমনটা নয়। অনেক সময় হয়তো প্রতিবাদও জানাই। পরে ভেবে দেখি, আদতে মা ভাল চেয়েই শাসন করেছিল।” তাঁর মতে, মা সাধারণত সন্তানের খারাপ চাইতে পারেন না। তাই তিনি নিশ্চিন্তে নিজের ভালমন্দ বিচারের ভার তাঁর মায়ের হাতে ছেড়ে দেন। এমনকি, কান মুললেও তিনি মুখ বুজেই হজম করে নেবেন।
এই আচরণই যদি পেশাজীবনের ‘বস্’ করেন? হতেই পারে তাঁর সঙ্গে অভিনেত্রীর স্নেহের সম্পর্ক। সৌরসেনী মেনে নেবেন?
“মানব কি মানব না— সেটা আমার জীবনে তাঁর গুরুত্ব বা আমার মানসিকতার উপরে নির্ভর করবে। আমি সেই জায়গা তাঁকে দিলে তিনি এই আচরণ করতেই পারেন। হাসিমুখে মেনে নেব। ঠিক উল্টোটাই হবে, যদি সেই ‘বস্’ আর আমার সম্পর্ক ততটাও মধুর না হয়”, বক্তব্য সৌরসেনীর। সে ক্ষেত্রে তিনি ‘বস্’-এর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার পক্ষপাতী। কোনটা তিনি মেনে নিতে পারছেন, কোনটা নয়— জানাবেন তাঁকে। এই প্রসঙ্গে একুশ শতকে কর্পোরেট দুনিয়ায় ‘বস্’-এর আচরণ কেমন হওয়া উচিত, সেই ভাবনাও ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। সৌরসেনীর মতে, “বস্ নরমে-গরমে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। একটা মিষ্টি ব্যক্তিত্ব ঘিরে থাকবে তাঁকে। আবার প্রয়োজনে পরিবেশ লঘু করতে বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতাও করবেন।” এতে সকলে তাঁকে ভালবাসবে, একই সঙ্গে ব্যক্তিত্বের কারণে তাঁকে সম্মান করেও চলবে।