পরিচালককে অনুরোধ জানান প্রিয়ঙ্কা, ধর্ষণের দৃশ্য যেন রাকেশকে না দেখানো হয়। —ফাইল চিত্র
অভিনয়ের সূক্ষ্ম ব্যাপারগুলি ছবির সেটে কাজ করতে করতেই শিখেছেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। প্রথাগত কোনও অভিনয়শিক্ষা নেই তাঁর। নাচতেও জানতেন না ‘দেশি গার্ল’। ২০০৩ সালে প্রথম যে বার বলিউডে পা রাখলেন তিনি। সে সময়ে ‘আন্দাজ়’ ছবির টিমের সবাই পড়েছিলেন ফ্যাসাদে।
লারা দত্ত, অক্ষয় কুমার ছিলেন প্রিয়ঙ্কার সহ-অভিনেতা। তাঁরাও মাসুল দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কার জন্যই। প্রিয়ঙ্কাকে নাচ তোলাতে গিয়ে থমকে গিয়েছিল শুটিং। সে প্রায় কয়েক মাসের ধাক্কা। বলিউডের নিজস্ব ঘরানার নাচ রপ্ত করতে ভালই বেগ পেতে হয়েছিল প্রিয়ঙ্কাকে। কেপ টাউনে শুট করার প্রস্তুতি চলছিল সে বার। সে সব মুলতুবি রেখে প্রিয়ঙ্কাকে নাচের ক্লাসে পাঠানো হল ৪৫ দিনের জন্য! সেই ঘটনা নিয়ে এখনও হাসাহাসি হয় সহ-অভিনেতাদের মধ্যে।
একই সমস্যা ছিল যৌনতার দৃশ্যে অভিনয় নিয়েও। প্রিয়ঙ্কার কেরিয়ারের একটি উল্লেখযোগ্য ছবি ‘অ্যায়তরাজ়’, যেখানে কিছু সাহসী দৃশ্য ছিল অভিনেত্রীর। অনুপম খেরের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, কী ভাবে এই ছবির জন্য পরবর্তী কালে বিব্রত হতে হয়েছিল তাঁকে।
প্রিয়ঙ্কা জানান, পরিচালক রাকেশ রোশন তাঁকে ‘কৃষ’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নিতে চেয়েছিলেন, হৃতিক রোশনের বিপরীতে। সেই কারণেই আগের অভিনয় দেখতে চেয়েছিলেন রাকেশ। এ দিকে আগে একটি মাত্র ছবিই করেছেন প্রিয়ঙ্কা, যেখানে রয়েছে বলিষ্ঠ দৃশ্যগুলি। কী করবেন? তাঁর তো মাথায় হাত।
প্রিয়ঙ্কার কথায়, “ রাকেশ স্যর একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে দেখেছিলেন আমায়। তার পরই ডেকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি খুব সুন্দর।’’ স্যরের কথা আমি ঠিক বুঝতে পারিনি।” অবাক হয়ে তাকান প্রিয়ঙ্কা। তাঁর কথায়, “আমি একটা সাদা সালোয়ার কুর্তা পরেছিলাম। মেকআপ ছিল না। যাই হোক, স্যর ডেকেছিলেন। এটা ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’- এর পর পরই। ‘অ্যায়তরাজ়’ ছবিতে আমার অভিনীত দৃশ্য দেখতে চেয়েছিলেন তিনি।”
দুশ্চিন্তায় পড়ে ‘অ্যায়তরাজ়’-এর পরিচালক আব্বাস-মস্তানকে ডেকে প্রিয়ঙ্কা কাকুতিমিনতি শুরু করেন। এটি তাঁর মানসম্মানের প্রশ্ন। পরিচালককে অনুরোধ জানান প্রিয়ঙ্কা, ধর্ষণের দৃশ্য যেন রাকেশকে না দেখানো হয়।
যদিও রাকেশ সবই দেখেছিলেন। প্রিয়ঙ্কাকে ‘কৃষ’ ছবিতে নিয়েওছিলেন। কিন্তু প্রিয়ঙ্কার কথায়, “আমি এত বিব্রত হয়েছিলাম, ওঁর চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।”
‘কৃষ’ (২০০৬) ছিল ভারতে তৈরি প্রথম মূল ধারার সুপারহিরো ছবি। বক্স অফিসেও দারুণ সফল হয়েছিল সেটি। প্রিয়ঙ্কার কেরিয়ারেও অন্যতম স্মরণীয় কাজ।