জানুয়ারির শীতে ১২ বছরের মেয়েটা গিয়েছিল কাশ্মীরে, বাবা-মায়ের সঙ্গে ছুটি কাটাতে। তার সেনা আধিকারিক বাবা উপত্যকায় কর্মরত ছিলেন। ছুটির মাঝপথে ফিরেছিল মেয়ে, বাবার কফিনবন্দি দেহ নিয়ে। এখনও শৈশবের সেই দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেড়ায় অভিনেত্রী নিমরত কউরকে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
নিমরতের জন্ম রাজস্থানের পিলানিতে। ১৯৮২ সালের ১৩ মার্চ। তাঁর বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার। বাবার চাকরির সূত্রে দেশের বহু শহরে কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
তবু, তাঁর প্রিয় শহর পাতিয়ালা। কারণ এই শহরেই শেষবারের মতো নিজেদের গৃহকোণে বাবা-মাকে একসঙ্গে পেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তাঁর বাবা মেজর ভূপিন্দর সিংহ-কে বদলি করে দেওয়া হয় কাশ্মীরে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
কাশ্মীরের ভেরিনাগ থেকে অপহরণ করা হয় মেজর সিংহকে। সাত দিন পরে তাঁর মৃতদেহ ফিরিয়ে দিয়েছিল হিজবুল মুজাহিদিন। মেজর সিংহকে পণবন্দি করার বদলে কয়েক জন বন্দি জঙ্গির মুক্তি দাবি করেছিল হিজবুল মুজাহিদিন। দাবি মেনে না নেওয়ার প্রত্যুত্তর ছিল মেজরের নিথর দেহ। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই মেয়ে, নিমরত আর রুবিনাকে নিয়ে কিছুদিন নয়ডায় ছিলেন নিমরতের মা। তারপর তিনি নিজেদের নতুন ঠিকানায় চলে যান। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
সরকারি ভাতা, সঞ্চয়ের দৌলতে আর্থিক অনটন ছিল না। কিন্তু মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন নিমরত ও রুবিনা। তবে শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন তাঁদের মা। দাদু-দিদিমাও ছিলেন অভিভাবকের মতো। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
নিমরতের বাবা কোনও দিন মেয়েদের সেনাকর্মীদের সন্তানদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ স্কুলে পড়াননি। তিনি চেয়েছিলেন কনভেন্ট বা পাবলিক স্কুলে পড়ুক মেয়েরা। যাতে, সেনাপরিবারের নিরাপত্তার খোলস ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে সাধারণ জীবনের সঙ্গে পরিচিতি ঘটে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বাবার এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী জীবনে খুব সাহায্য করেছিল বলে পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে জানান নিমরত। তিনি নয়ডায় দিল্লি পাবলিক স্কুলের পরে বাণিজ্যে সাম্মানিক স্নাতক হন শ্রী রাম কলেজ অব কমার্স থেকে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
কেরিয়ারের প্রথমেই নিমরত চলে যান মুম্বই। প্রথমে মডেলিং, তারপর থিয়েটারে অভিনয়। এরপর সুযোগ পান মিউজিক অ্যালবামে। কুমার শানুর ‘তেরা মেরা প্যায়ার’ এবং শ্রেয়া ঘোষালের ‘ইয়ে ক্যায়া হুয়া’ গানের চিত্রায়ণে তাঁকে দেখা যায়। নজর কাড়েন চকোলেটের বিজ্ঞাপনেও। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ ২০০৫ সালে। ‘ইয়াহাঁ’ ছবিতে ছোট ভূমিকায় অভিনয়। পরের বছর ইংরেজি ছবি, ‘ওয়ান নাইট উইথ দ্য কিং’। বেছে বেছে ছবি করার ধারা নিমরত বজায় রেখেছেন কেরিয়ারের প্রথম থেকেই। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
‘পেডলারস’, ‘লভ সব তে চিকেন খুরানা’, ‘দ্য লাঞ্চবক্স’ এবং ‘এয়ারলিফ্ট’, তাঁর কেরিয়ারের প্রতিটা ছবি ভিন্ন স্বাদের এবং ব্যতিক্রমী। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
২০১২ সালে অনুরাগ কাশ্যপের প্রযোজনায় ‘পেডলারস’ এবং তার পরের বছর রীতেশ বাত্রার পরিচালনায় ‘দ্য লাঞ্চ বক্স’, দু’টি ছবিতেই নিমরতের অভিনয় সমাদৃত হয়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ প্রশংসিত হয় দু’টি ছবি-ই। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
তাঁর জীবনে প্রেম এসেছে কয়েক বার। প্রত্যেক বারই মন দিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির বাইরে কাউকে। কিন্তু এখনও বাঁধা পড়েননি কোনও সম্পর্কেই। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রীর সঙ্গেও নিমরতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। এর জেরে ব্যাহত হয় রবি শাস্ত্রীর দাম্পত্যও। কিন্তু রবি এবং নিমরত, দু’জনেই অস্বীকার করেছেন সব রটনা। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
জীবনে যেটুকু পেয়েছেন, তার সিংহভাগ কৃতিত্ব নিমরত দিয়েছেন মাকে। তাঁদের দুই বোনকে মা শিখিয়েছেন সবসময় সামনের দিকে তাকাতে। নিমরতের বোন রুবিনা পেশায় একজন মনোবিদ। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
জীবনের প্রতি মুহূর্তে বাবার কথা মনে পড়ে নিমরতের। নিহত মেজর সিংহকে মরণোত্তর শৌর্য চক্রে সম্মানিত করা হয়েছে। এই সম্মান প্রাপ্তির পরে আবার কাশ্মীর গিয়েছিলেন নিমরত, জীবনে দ্বিতীয়বার। ভেরিনাগে গিয়ে নিঃশব্দে উপলব্ধি করছিলেন বাবার উপস্থিতি। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
কাশ্মীর থেকে ফিরে নিজের হাতের কব্জিতে ট্যাটু করান নিমরত। সেখানে লেখা ‘জেনাব’। অর্থ, বাবার অমূল্য রত্ন। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)