নয়না গঙ্গোপাধ্যায় এবং দর্শনা বণিক।
বিনোদন দুনিয়া আর পর্ন দুনিয়া যেন একই মুদ্রার এ পিঠ-ওপিঠ। একটিতে আলোর রোশনাই। অন্যটিতে অন্ধকার। সম্প্রতি সিনে জগতে কালো ছায়া ফেলেছে পর্নোগ্রাফি। একই সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে কলকাতা, মুম্বইয়ের নাম। খবরে ফাঁস, দুই মহানগরীর বুকেই রমরমিয়ে চলছে পর্ন ছবি তৈরির ব্যবসা। যা নিয়ে উঠতি মডেল, অভিনেত্রীদের অজস্র অভিযোগ। তাঁদের দাবি, জোর করে, ভয় দেখিয়ে, ভুলিয়ে, টাকার টোপ দিয়ে নাকি এই ধরনের পেশায় আসতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এই অভিযোগ কতটা সত্যি? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল দুই জনপ্রিয় মডেল এবং নায়িকা নয়না গঙ্গোপাধ্যায় ও দর্শনা বণিকের সঙ্গে। দু’জনেই কলকাতা এবং মুম্বইয়ে প্রতিষ্ঠিত। কী জানালেন তাঁরা?বিষয়টি নিয়ে নয়না প্রথমে মুখ খুলতেই চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ কুন্দ্রা পর্ন কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এটা প্রমাণ সাপেক্ষ। বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কিছু জানিও না। যা জানি না তাই নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নই।’’ তার পরেই তাঁর সাফ জবাব, তিনি লোক বুঝে মেশেন। ছবির আলোচনা ছাড়া বাড়তি কথা বলেন না। শ্যুটিংয়ের পর নিজের মতো সময় কাটান। তাঁর কথায়, ‘‘হয়তো এই কারণেই কেউ আমায় কুপ্রস্তাব দেওয়ার সাহস পায়নি। আজ পর্যন্ত আমি কারওর থেকে কোনও খারাপ ব্যবহার পাইনি।’’
নয়না সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘চরিত্রহীন’, রামগোপাল বর্মার ‘ডি কোম্পানি’ জ্বলন্ত উদাহরণ। অভিনেত্রী নেট মাধ্যমে যথেষ্ট খোলামেলা পোশাক পরে হাজির হন। এ গুলো কি কখনও তাঁর প্রতি প্রযোজক বা পরিচালকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলের কারণ হয়নি? নয়নার যুক্তি, তিনি অভিনয় দুনিয়ায় আসার আগে এই ধরনের সাহসী দৃশ্য বহু ছবিতে দেখানো হয়েছে। তিনিও ইদানিং শুনছেন, ওয়েব সিরিজ মানেই নাকি সফট পর্ন। অভিনেত্রী এই অভিযোগ মানেন না। তাঁর বক্তব্য, চিত্রনাট্যের দাবি মেনে কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় আর পর্ন ছবিতে অভিনয় এক দম আলাদা। দুটোকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না।
প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে দর্শনার কথাতেও। তিনিও জানিয়েছেন, মডেলিং থেকে অভিনয়ে আসার দিনগুলোয় তিনি কোনও খারাপ অভিজ্ঞতার সাক্ষী নন। পাশাপাশি এ-ও স্বীকার করেছেন, মডেলিং বা অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত মানুষদের এখনও সহজলভ্য ভাবা হয়। তাঁর মতে, এর জন্য দায়ী সমাজ। দর্শনার দাবি, ধর্ষিতাকে তাঁর আচরণ বা পোশাকের জন্য দায়ী করা হয়। একই ভাবে অভিনেত্রী বা মডেলের দিকে আঙুল তোলা হয় তাঁর সাহসী দৃশ্যে অভিনয় বা ফটোশ্যুটের জন্য। এই ধরনের অভিনয়ে যাঁরা সাবলীল তাঁরাই পর্ন ছবি করেন বা অভিনয়ের প্রস্তাব পান, ধারণাটাই ভুল।
কলকাতায় এই ধরনের ইন্ডাস্ট্রির হদিশ কখনও পেয়েছেন দর্শনা? এ বারেও অকপট অভিনেত্রী। সাফ জবাব তাঁর, ‘‘টলিউডের কোথাও এই ধরনের বেআইনি কাজ হয় না। তবে কানাঘুষো শুনেছি, এই ধরনের র্যাকেট কলকাতার বুকেও আছে। রবিবার ছোটখাটো স্টুডিয়োতে নগ্ন ফটোশ্যুট হয়। সেখানে অচেনা মডেল বা অভিনেত্রীরা আসেন। এঁরা টালিগঞ্জের কেউ নন।’’
দর্শনার আরও দাবি, হাতেগোনা কিছু চিত্রগ্রাহক এই ধরনের নগ্ন ছবি তোলেন। নেটমাধ্যমেও ছড়িয়ে দেন হয়তো। সেই ছবি তাঁর চোখেও পড়েছে।